মুন্সীগঞ্জে সাবেক দুই এমপিসহ ২৯২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
১ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৭
মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে মো.মঞ্জিল মোল্লা (৫৩) নামে এক বিএনপি কর্মী আহত হওয়ার ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ-১ ও মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক দুই সংসদ সদস্যসহ ১৪২ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টায় মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ১৫০ জন নেতাকর্মীকে।
শুক্রবার (১ নভেম্বর) মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় মামলাটি অন্তর্ভুক্ত হয়। এর আগে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাতে আহত মঞ্জিল বাদি হয়ে অভিযোগ দাখিল করেন। এ নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন ঘিরে হতাহতের ঘটনায় মুন্সীগঞ্জ সদর থানায় ৩টি হত্যা ও দুটি হত্যা চেষ্টাসহ ৫ টি মামলা করা হয়েছে।
মামলার বাদি আহত মঞ্জিল মোল্লা মুন্সীগঞ্জ শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকার ইব্রাহীম মোল্লার ছেলে। তিনি পেশায় একজন দিন মজুর। সে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তিনি ৪ আগস্ট মুন্সীগঞ্জের সুপারমার্কেট এলাকায় আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন। ওইদিন গুলিতে মারা যান মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার উত্তর ইসলামপুরের সজল মোল্লা (৩১), রিয়াজুল ফরাজী (৩৮) ও নুর মোহাম্মদ ওরফে ডিপজল (২২)। এতে দেড় শতাধিক আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হন।
গুলিবিদ্ধ আহত মঞ্জিল মোল্লা মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন আহমেদ, মুন্সীগঞ্জ -৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ফয়সালসহ ১৪২ জনের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দাখিল করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলে- মুন্সীগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন আহমেদের ছেলে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সদস্য আনিসুর রহমান ওরফে রিয়াদ, মুন্সীগঞ্জ জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ লুৎফর রহমান, মুন্সীগঞ্জ শহর আ.লীগের সভাপতি আবদুল মতিন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান ভূইয়া, সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সোহেল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ফয়সাল মৃধা, সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. সুরুজ, শহর ছাত্রলীগের সভাপতি নসিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাত হোসেন সাগরসহ ২৯২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়।
আহত মঞ্জিল মোল্লা বলেন,‘আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করে আমিও অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরই আমার শরীরে ৩টি গুলি লাগে। এরপর আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। লোকজন আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কোনমতে আমার প্রাণটা বেঁচে গেছে। যে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে আমার ওপর গুলি ছুড়েছে আমি তাদের বিচার চাই।’
আহত মঞ্জিল মোল্লার বড় মেয়ে রুপা আক্তার বলেন,‘আমার বাবার পরবর্তী অপারেশনের জন্য তিন লাখ টাকা প্রয়োজন। এই ব্যায় মিটানো আমাদের পক্ষে সম্ভব না। সরকারিভাবে বহন করা হবে কি না তারও কোন নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। আমাদের দাদা-দাদীসহ ১০ সদস্যের পরিবার। বাবাই একমাত্র উপার্জন করেন। তার আয়ে সংসার চলে। এভাবে কতদিন চলতে পারবো জানিনা। সরকারের প্রতি আহবান আমাদের পরিবারটির দিকে তারা যেন নজর দেয়।’
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. খলিলুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সারাবাংলা/এসআর