চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালে নেই অ্যান্টিভেনম, সাপে কাটা ২ জনের মৃত্যু
২ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৫৩
চুয়াডাঙ্গা: দীর্ঘদিন থেকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সাপে কাটা রোগীর চিকিৎসায় অ্যান্টিভেনম নেই। এতে চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত হচ্ছেন আক্রান্তরা। অভিযোগ রয়েছে সাপা কাটা রোগী এখানে আসলে অন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। এমন পরিস্থিতিতে মৃত্যু ঝুঁকি বাড়ে। গত এক সপ্তাহে যথাসময় চিকিৎসা না পাওয়ায় দুই জনের মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) রাতে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার খাসপাড়া গ্রামে সাপের কেটে সেলিম হোসেন (২৮) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়। রাতে সাপে কাটলে তাকে দ্রুত সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালে সাপের বিষের প্রতিষেধক অ্যান্টিভেনম না থাকায় বাইরে থেকে কেনার পরামর্শ দেওয়া হয়। দরিদ্র সেলিমের পরিবারের সদস্যরা ফার্মেসীতে থেকে এক ডোজ অ্যান্টিভেনমের (১০ পিস) ১৪ হাজার টাকায় কেনা সম্ভব হচ্ছিলনা। এসময় নগদ সাত হাজার টাকা ও রোগী বহন করা মাইক্রোবাসের চাবি বন্ধক রেখে এক ডোজ নেওয়া হয় ফার্মেসী থেকে। এরেই মধ্যে এক ঘণ্টা সময় পার হয়ে যায়। তৎক্ষণে রোগীর অবস্থার অবনতি। যথাসময়ে অ্যান্টিভেনম দিতে না পারায় ওই যুবকের মৃত্যু হয়।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বলেশ্বরপুর গ্রামের উজির আলী (৬৫) নামের আরেক ব্যক্তিকে সাপে কাটলে তিনি মারা যান।
পারিবারিক সুত্রে জানা যায়, সকালে মাঠে ঘাস কাটতে গেলে তাকে সাপে কামড় দেয়। দ্রুত তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই দিন রাতে তার মৃত্যু হয়।
একই রাতে তালতলা গ্রামের হাবিবুর রহমান নামে আরেক ব্যক্তিকে সাপে কাটলে তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হন। চিকিৎসাধীন হাবিবুর রহমান জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে সাপের অ্যান্টিভেনম না থাকা বড়ই দুঃখজনক। জেলা হাসপাতালে যদি অ্যান্টিভেনম না থাকে তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে? তাছাড়া সাপের অ্যান্টিভেনম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে।
রোগীর স্বজনরা জানান, সাপে কাটা রোগীদের যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাক্সিন দেওয়া প্রয়োজন। হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা না পেয়ে অন্য হাসপাতালে যেতে যেতে রোগীর মৃত্যু ঝঁকি থাকে। যে কারণে হাসপাতালে দ্রুত ভ্যাক্সিনেশন ব্যবস্থা জরুরী।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ওয়াহিদ মাহমুদ রবিন বলেন, দীর্ঘদিন থেকে অ্যান্টিভেনম ইঞ্জেকশন মজুদ নেই। যে কারণে হাসপাতালে রোগী এলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয় কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কিংবা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবে অ্যান্টিভেনমের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবাধায়ক ডা.সাজ্জাৎ হাসান জানান, ঢাকাতে চাহিদা পত্রসহ লোক পাঠানো হয়েছে। এক সপ্তাহ থেকে ১০ দিনের মধ্যে ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
সারাবাংলা/এসআর
সারাবাংলা/এসআর