বিশ্বের বৃহত্তম কুমির ক্যাসিয়াসের মৃত্যু
২ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৩১
বিশ্বের বৃহত্তম বন্দী কুমির ক্যাসিয়াসের মৃত্যু হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার (২ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যম রয়টার্সে বলা হয়, মেরিনল্যান্ড মেলানেশিয়া ক্রোকোডাইল হ্যাবিট্যাটের ফেসবুক পেজে প্রকাশ করা হয়েছে- ‘ক্যাসিয়াসের ওজন এক টনেরও বেশি ছিল। ১৫ অক্টোবরের পর থেকে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হওয়া শুরু করে। কুমিরটি খুব বৃদ্ধ ছিল। ক্যাসিয়াসকে গভীরভাবে মিস করা হবে। সে আমাদের ভালবাসা ও স্মৃতিতে আমাদের হৃদয়ে চিরকাল থাকবে।’
ক্যাসিয়াসকে ১৯৮৪ সালে উত্তর অস্ট্রেলিয়ার একটি জলাভূমি এলাকা থেকে ধরা হয়। পরে এটিকে কুইন্সল্যান্ডের গ্রিন আইল্যান্ডে অবস্থিত মারিনল্যান্ড ক্রোকোডাইল পার্কে নিয়ে আসা হয়, যেখানে এটি দর্শনার্থীদের জন্য প্রদর্শিত হয়। ক্যাসিয়াসের দৈর্ঘ্য ছিল প্রায় ৫.৪৮ মিটার (প্রায় ১৭ ফুট ১১ ইঞ্চি)। তার ওজন অনুমানিক ১ টন বা ১০০০ কেজি। এটি বিশ্বজুড়ে বন্দী কুমিরের মধ্যে সবচেয়ে বড় হিসেবে পরিচিত ও এর নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত। ২০১৩ সালে ফিলিপাইনের কুমির লোলং-এর মৃত্যুর পর সে এই খেতাবটি পেয়েছিল।
ক্যাসিয়াস মূলত একটি লবণাক্ত পানির কুমির (Saltwater Crocodile), যা এই প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে বড় ধরনের কুমির হিসেবে পরিচিত। এর বয়স প্রায় ১১০ বছরের কাছাকাছি বলে অনুমান করা হয়। কুমির সাধারণত দীর্ঘ জীবনযাপন করতে পারে এবং লবণাক্ত পানির কুমিরের ক্ষেত্রে বয়স ৭০ বছরের বেশি হতে পারে। তবে ক্যাসিয়াসের বয়স আরও বেশি ছিল।
ক্যাসিয়াস ছিল একটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং হিংস্র কুমির। এটিকে তার স্বাভাবিক আচরণ এবং বিশাল আকারের জন্য প্রশংসা করা হতো। এটি বন্দী অবস্থায় সাধারণত শান্ত ছিল, তবে মাঝে মাঝে তার আক্রমণাত্মক প্রবণতা দেখা যেত।
ক্যাসিয়াসের নামকরণ করা হয় রোমান সম্রাট ক্যাসিয়াসের নামে, যা তার শক্তি ও ক্ষমতাকে বোঝাতে উপযুক্ত। এত বছর ধরে পার্ক কর্তৃপক্ষ ক্যাসিয়াসের বিশেষ যত্ন নিয়ে এসেছে। বয়সের কারণে তার বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তবে সে নিয়মিত ডাক্তারি চ্যাকাপে ছিল।
ক্যাসিয়াসের মৃত্যু একটি যুগের সমাপ্তি নির্দেশ করে। এই কুমিরটি বিশ্বব্যাপী পর্যটকদের আকর্ষণ করত এবং কুমির সংরক্ষণ ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
সারাবাংলা/এমপি