উপকূলে চিকিৎসা বর্জ্য-নিরাপদ পানি নিয়ে কাজ করবে আইসিডিডিআরবি-ইবিএল
৫ নভেম্বর ২০২৪ ১০:৪১
ঢাকা: চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও উপকূলীয় অঞ্চলে বসবাসকারীদের নিরাপদ পানি প্রদানের লক্ষ্যে একত্রে কাজের কথা জানিয়েছে আইসিডিডিআর, বি এবং ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল)। এ লক্ষ্যে দুই প্রতিষ্ঠান একটি চুক্তি সই করেছে।
সোমবার (৪ নভেম্বর) রাজধানীতে উভয় প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ইবিএলের প্রধান কার্যালয়ে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করা হয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আইসিডিডিআর,বি এ তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে আইসিডিডিআর, বি এর সঙ্গে কাজ করছে ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি. (ইবিএল)। চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পানির ঘাটতি দূর করার লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে বিশেষ এই সিএসআর কার্যক্রম।
তারা আরও জানায়, এ বছরের শুরুর দিকে একটি চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পে ইবিএল আইসিডিডিআর, বি’কে অনুদান প্রদান করে। যা আইসিডিডিআর, বি সাফল্যের সঙ্গে শেষ করে। এরই ধারাবাহিকতায় আইসিডিডিআর, বি-র ‘কঠিন বিপজ্জনক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সর্বোত্তম অনুশীলন’ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে ইবিএল তাদের সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিছেছে। প্রকল্পের এই পর্যায়ে আইসিডিডিআর, বি-তে উন্নত জীবাণুমুক্তকরণ প্রযুক্তি প্রবর্তন করে এবং ঢাকার প্রধান স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলিতে প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে বর্জ্য পরিশোধন ক্ষমতা বৃদ্ধি করবে।
এছাড়াও এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্য জাতীয় চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিধিমালাকে টেকসই ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত করা। যেন একটি পরিবেশবান্ধব এবং শক্তিশালী স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা তৈরি করা যায়। আইসিডিডিআর, বি-র বায়োসেফটি, বায়োরিপোজিটরি এবং কন্টেনমেন্ট ল্যাবের প্রধান ড. আসাদুলঘানি এই প্রকল্পের বাস্তবায়নের নেতৃত্ব দেবেন।
এদিকে আইসিডিডিআর, বি-র নতুন ‘লবণাক্ততা-প্রবণ এলাকার জন্য বিশুদ্ধ পানীয়: বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে পানির সমস্যা দূরীকরণ’ প্রকল্পে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে ইবিএল। প্রকল্পের আওতায় দেশের অন্যতম লবণাক্ততা-আক্রান্ত অঞ্চল– সাতক্ষীরার শ্যামনগরে একটি রিভার্স অসমোসিস (আরও) ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট স্থাপন করা হবে। এর মাধ্যমে সেখানকার ২০০ পরিবারকে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা যাবে।
গবেষণার জন্যও প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গবেষণায় অংশগ্রহণকারীদের বিশুদ্ধ পানি গ্রহণের আগে এবং বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারের ছয় মাস এবং ১২ মাসের ব্যবধানে রক্তচাপ এবং প্রস্রাবে সোডিয়ামের মাত্রা পরিমাপ করা হবে। এর ফলে বিশুদ্ধ পানি ব্যবহারের মাধ্যমে তাদের স্বাস্থ্যের ওপর কী প্রভাব পড়ছে তা বোঝা যাবে। আইসিডিডিআর,বির এসোসিয়েট সায়েন্টিস্ট ড. ফারজানা জাহান এবং প্রকল্প সমন্বয়কারী ড. মো. মাহবুবুর রহমান এবং আইসিডিডিআর,বি-তে ওয়াশ এর প্রধান প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবেন।
এ বিষয়ে ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও আলী রেজা ইফতেখার বলেন, ইবিএলে, আমরা আমাদের নিয়মিত করপোরেট দায়িত্বের বাইরে অনন্য কাজ করতে চাই। আমাদের লক্ষ্য জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে একটি টেকসই পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখে এমন প্রকল্পগুলোকে সমর্থন করার মাধ্যমে একটি দীর্ঘস্থায়ী ও ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করা। আমরা শুধু একটি প্রকল্পে অর্থায়ন করছি না বরং আমরা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করছি।
আইসিডিডিআর,বি-র নির্বাহী পরিচালক ড. তাহমিদ আহমেদ বলেন, যখন ইবিএলের মতো কোম্পানি সাহায্য করার জন্য এগিয়ে আসে, তখন বড় ধরনের পরিবর্তনের আশা করা যায়। এই প্রকল্পগুলো চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এবং বিশুদ্ধ পানি নিশ্চিত করার ফলে মানুষের জীবনে তাৎক্ষণিক প্রভাব ফেলার চেয়েও আরও বেশি ভূমিকা রাখে। এর ফলে তৈরি হয় স্থিতিশীলতা, ক্ষমতায়ন এবং জলবায়ু এবং স্বাস্থ্য সমস্যার টেকসই সমাধান খুঁজে পাওয়ার ভিত্তি। একইসঙ্গে আমরা একটি ভবিষ্যৎ তৈরি করছি যেখানে প্রত্যেকটি কাজই গুরুত্বপূর্ণ।
আইসিডিডিআর,বি জানিয়েছে, তাদের দুটি প্রকল্পে ইবিএলের সহায়তার পরিমাণ মোট ৯২ লাখ টাকা (প্রায় ৭৬ হাজার ৮৫৭ মার্কিন ডলার)। এ ধরনের সহযোগিতা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের প্রতি প্রতিষ্ঠানটির যে দায়িত্ব রিয়েছে তা প্রতিফলিত করে।
সারাবাংলা/এসবি/ইআ