সমাজসেবা অধিদফতরের ডিজিকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ
৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:২৪
ঢাকা: ওএসডি হয়েও সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব পালন করা আবু সালেহ মোস্তফা কামালকে অবিলম্বে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতের এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক পদে তার দায়িত্ব পালনের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের চৌধুরী ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন ও আইনজীবী মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।
গত ১১ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ওএসডি হয়েও পদ ছাড়ছেন না সমাজসেবা অধিদফতরের ডিজি’ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি করা হয়। এই আদেশের প্রায় এক মাস পরও তা অমান্য করে ডিজি পদে বহাল তবিয়তে কাজ করে যাচ্ছেন এই কর্মকর্তা।
ওএসডি করা সমাজসেবার ডিজি ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল অফিস করার কথা স্বীকার করেছেন। ওএসডি হওয়ার পর কীভাবে কাজ করছেন— জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আমার অফিস করার মৌখিক নির্দেশ আছে। ওই নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছি।
মৌখিক নির্দেশ কতটা যৌক্তিক— এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ হলেও দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয় থেকে আমার অবমুক্তি না হওয়া পর্যন্ত অফিস করতে পারি। তা ছাড়া, এখানো কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।
সমাজসেবা ডিজির ওএসডির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তার নতুন পদ হচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রথম গ্রেডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। জারি করা এই আদেশ দ্রুত কার্যকর হবে। অর্থাৎ যেদিন আদেশ জারি করা হয়েছে, ওই তারিখ থেকে কার্যকর হবে।
অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ করেছেন, রাষ্ট্রপতির আদেশে করা প্রজ্ঞাপনের নির্দেশ মানছেন না ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল। তিনি দফতরে নিয়মিত আসছেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সভা করছেন। নানা কাজের নির্দেশনা দিচ্ছেন।
আবু সালেহ মোস্তফা কামালের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অধিদফতরের নানা অনিয়ম, গোপন নথি গায়েব ও আলামত নষ্ট করতে ওএসডি হওয়ার পরও তিনি মন্ত্রণালয়ের মৌখিক নির্দেশের কথা বলে শুধু রুটিন দায়িত্ব নয়, আগের মতো দফতরের সব কাজ করছেন। বাস্তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের পর মৌখিক নির্দেশে এটা কোনো কর্মকর্তা করতে পারেন না।
এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করার পর কোনো কর্মকর্তা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বা দফতরে থাকতে পারবেন না। আর ওএসডি এক ধরনের শাস্তি।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমপি