গণমাধ্যমের ওপর হামলা-মামলা বৈষম্যবিরোধী নীতির পরিপন্থি
৬ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৪৬
ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের ওপর ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আক্রমণ, নির্বিচারে মামলা, ব্যক্তিগত ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে হেনস্থা’র উদ্দেশ্যে স্বার্থান্বেষী মহলের ‘অপতৎপরতা’ বৈষম্যহীন ‘নতুন বাংলাদেশে’র জন্য ভালো বার্তা বয়ে আনবে না উল্লেখ করে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
বুধবার (৬ নভেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কি ফাঁকা বুলি’— এমন প্রশ্ন তুলেছে সংস্থাটি।
মুক্ত সাংবাদিকতার পরিবেশ বাধাগ্রস্ত করার এই প্রবণতার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে গণমাধ্যম ও সংবাদকর্মীদের জন্য ভয়-ডরহীন পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নিতেও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। পাশাপাশি গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার চর্চা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের।
দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে স্বার্থান্বেষী মহলের হামলা-ঘেরাও, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নির্বিচারে মামলা ও হেনস্থার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এ প্রতিশ্রুতি বারবার দেওয়া হয়েছে যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বাধাগ্রস্ত হবে না। ক্ষমতার প্রভাবের বাইরে থেকে দেশে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। কিন্তু আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে স্বার্থান্বেষী বিভিন্ন মহল দেশের কোনো কোনো গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা, হামলা, ঘেরাওয়ের হুমকিসহ নানাবিধ আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
কোনো কোনো মহলের স্বার্থের বাইরে গেলেই গণমাধ্যমকে আক্রমণ ও সাংবাদিক হেনস্থা, গণমাধ্যমকে দখল বা খেয়ালখুশিমতো পরিচালনার প্রচেষ্টা চলছে, যা মুক্ত গণমাধ্যমের সম্ভাবনার জন্য অশনি সংকেত— বিজ্ঞপ্তিতে বলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান।
তিনি বলেন, টিআইবি মনে করিয়ে দিতে চায়— ভিন্নমত ও মুক্ত গণমাধ্যমের ঢালাও নিয়ন্ত্রণ এবং নিরাপত্তাহীনতা মূলত কর্তৃত্ববাদের পুনরাগমনের পথ তৈরি করবে। আমরা বিশ্বাস করি, অবিলম্বে দেশে স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য ভয়-ডরহীন উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে সুস্পষ্ট ও কঠোর পদক্ষেপ নেবে অন্তর্বর্তী সরকার। তা না হলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ফাঁকা বুলিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যায়।
ড. জামান আরও বলেন, টিআইবি বিশ্বাস করে, সাংবাদিকের বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ থাকলে বা যারা সরাসরি কর্তৃত্ববাদের দোসরের ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের সুষ্ঠু তদন্ত হওয়া উচিত। কিন্তু পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের সহযোগী ‘ট্যাগ’ দিয়ে সাংবাদিকের বিরুদ্ধে যথেচ্ছ মামলা, তথ্য অধিদফতরের দেওয়া স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বাতিল, হুমকি, বরখাস্ত করার মতো ঘটনা দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার পক্ষে কোনো ইতিবাচক বার্তা দিচ্ছে না।
একই সঙ্গে সাংবাদিকতার ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ করে দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার চর্চা নিশ্চিতের জন্য গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
সারাবাংলা/ইউজে/টিআর