Monday 11 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুনামগঞ্জে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ শহরবাসী, কয়েলে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

আল হাবিব, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
১১ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:১৪

সুনামগঞ্জ: শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে সঙ্গে কমে গেছে বর্ষার বৃষ্টি। বৃষ্টিপাত না হওয়ায় জমে থাকা পানিতে বেড়েই চলছে মশার বংশবৃদ্ধি। তথ্য বলছে, বৃষ্টির ফোঁটা নিয়ন্ত্রণে রাখে মশা। অন্যদিকে দিন দিন বাড়ছে মশার প্রজনন ক্ষেত্র। দীর্ঘদিন ধরে পরিষ্কার করা হয় না সুনামগঞ্জ শহরের ভেতরে থাকা বিভিন্ন ড্রেন, খাল, নালা। বিভিন্ন জায়গায় স্তুপে স্তুপে জমে আছে আবর্জনা। এতে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে মশা। আর এই মশার উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে গেছেন শহরবাসী। মশা মারতে কামানও খুঁজছেন অনেকে।

বিজ্ঞাপন

মশার প্রকোপে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে কয়েল। তবুও মিলছে না শান্তি। সারাক্ষণ কয়েল জ্বালানোর কারণে বাড়ছে সংসারের খরচ। কয়েলের ক্ষতিকর ধোঁয়ায় বাড়ছে শ্বাসকষ্টসহ স্বাস্থ্যঝুঁকি বলছেন বিশেষজ্ঞরা। মশার অত্যাচার থেকে রেহাই দিতে দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী পৌরবাসীর।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ৯টি ওয়ার্ডের বেশ কিছু মানুষের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। শতভাগ মানুষই মশার কামড়ের যন্ত্রণার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি ডেঙ্গু মৌসুম হওয়ায় অনেকটা উদ্বেগের কথাও জানিয়েছেন তারা। পৌরবাসী বলছেন সুনামগঞ্জে ডেঙ্গুর প্রকোপ না থাকলেও পর্যটন এলাকা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের সমাগম হয়। দ্রুত যদি মশা নিধন না করা যায় তাহলে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই থেকে যায়।

সুনামগঞ্জ পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা গৃহিণী সুমি বেগম বলেন, মশা অতিরিক্ত হারে বেড়ে গেছে। মশার যন্ত্রণায় ঘুমানো যায় না। রাতে মশারি ছাড়া ঘুমানো অসম্ভব। দিনের বেলায়ও যন্ত্রণা দেয়। বেশি সমস্যা কোলের শিশুদের নিয়ে। তাদের চোখ—নাক জ্বালাপোড়া করে কয়েল জ্বালালে। তাই ছোট ছোট শিশুদের ২৪ ঘণ্টা মশার হাত থেকে রক্ষায় যুদ্ধ করতে হয়। এরপরও চোখের আড়ালে একটা কামড় দিয়ে দিলে সারাদিন কাঁদতে থাকে।

তিন নম্বর ওয়ার্ডের একটি মাদরাসা শিক্ষক হাসান মাহমুদ বলেন, মশার কামড়ের যন্ত্রণায় মাদরাসার শিশুরা ঠিকমতো লেখাপড়া করতে পারছে না। ছোট একটা মশা বড় যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাত নম্বর ওয়ার্ডের সালমান আহমেদ বলেন, দিন আর রাত নেই, ঘরে থাকলেই কয়েল জ্বালাতে হয়। নাহলে এক মিনিটও বসা যায় না। প্রত্যেকদিন প্রত্যেক রুমে ২৪ ঘণ্টায় ৩টা কয়েল লাগছে। মাস শেষে ৬০০-৭০০ টাকা অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে শুধু কয়েলের কিনতে।

বিজ্ঞাপন

৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমাদের এলাকার সবগুলো ড্রেন নির্মাণের পর আর কোনোদিন পরিষ্কার করতে দেখিনি। বর্ষাকালে ড্রেনে পানির স্রোতে মশা জন্মাতে পারে না। কিন্তু এখন ড্রেনের জমে থাকা পানিতে মশা অতিরিক্ত হারে বেড়ে গেছে।

মশা বাড়ার কথা জানিয়ে সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জসিম উদ্দিন বলেন, যে ঘরে শিশু, বৃদ্ধ কিংবা বয়ষ্ক ব্যক্তি থাকে, সে ঘরে কয়েল জ্বালানো একেবারেই নিষিদ্ধ। কয়েলের ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। আর কয়েলের দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

তিনি বলেন, মশা নিধনে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দায়িত্ব পালন করে স্থানীয় সরকার। মশা একেবারে নিধন করা সম্ভব নয়, তবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে। এক্ষেত্রে মশার প্রজনন ক্ষেত্রগুলোতে ওষুধ প্রয়োগ করতে হয়। তবে শুধু এক দুবার করলেই হয় না। এটা নিয়মিত রাখতে হয়।

সুনামগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী কালী কৃষ্ণ পালের কাছে মশা নিধনে পৌরসভার পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা ওষুধ কেনার চেষ্টা করছি। আশাকরি দুই একদিনের মধ্যেই কার্যক্রম শুরু করতে পারব।

সারাবাংলা/ইআ

মশার উপদ্রব সুনামগঞ্জ স্বাস্থ্যঝুঁকি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর