‘২০৫০ সাল নাগাদ দেশের ৫০ শতাংশ জীববৈচিত্র্য হারিয়ে যাবে’
৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:১২
ঢাকা: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, ২০৫০ সাল নাগাদ দেশ থেকে ৫০ শতাংশ জীব বৈচিত্র্য হারিয়ে যাবে। জীবন সম্পর্কে ভিন্নভাবে ভাবতে হবে।
শনিবার (৯ নভেম্বর) ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ অডিটরিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দিনব্যাপী জাতীয় ওয়াইল্ড লাইফ অলিম্পিয়ার্ডের সমাপনী ও দুটি ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ওয়াইল্ডলাইফ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তাদেরকে এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করতে দেশব্যাপী প্রথমবারের মতো আয়োজিত হলো ওয়াইল্ডলাইফ অলিম্পিয়ার্ড।
বিকেলে জাতীয় পর্বের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারিহিনা আহমেদ। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী।
ড. সৈয়দ রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘আমি এই স্কুলের ছাত্রী ছিলাম। ফলে যখনই আমাকে এখানে ডাকা হয় যত কাজই থাকুক আমি চলে আসি। কেননা এখানে আমার নাড়ির টান কাজ করে। আমার শিক্ষাজীবন এখান থেকেই শুরু। এখানে একটি গাছ আছে যেটির বয়স প্রায় ৭৩ বছর। এটি ভাষা আন্দোলনসহ অনেক ঘটনার স্বাক্ষী। এটি যেন না কেটে স্মারক গাছ হিসেবে ঘোষণা করা যায় সে বিষয়ে বন বিভাগ ব্যবস্থা নিতে পারে। তাহলে এটিই হবে দেশের প্রথম সংরক্ষণ করা স্মারক গাছ।
তিনি বলেন, বন যখন কমে যাবে তখন বন্যপ্রাণী লোকালয়ে চলে আসবে। বন্যপ্রাণী যদি লোকালয়ে চলে আসে তাহলে তা আমাদের জন্য বিপদ বয়ে আনবে। আমাদের দেশের বিভিন্ন স্থানে হাতি ও মানুষের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে। কিছুদিন আগেও বিদ্যুতের শক দিয়ে হাতি মেরে ফেলার মতন ঘটনা ঘটেছে। এটা ঠিক নয়। আমাদের হাতি রক্ষায় কাজ করতে হবে। সচেতন হতে হবে।
ড. ফারহিনা আহমেদ জাতীয় পর্বে অংশগ্রহণ করা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমাদের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় আমরা কাজ করছি। জীব এবং বন অনেক সংকটে আছে। পলিথিন নদী দূষণের প্রধান সমস্যা। এর ব্যবহার কমাতে হবে। পাহাড়, নদী ও বন যারা ধ্বংস করছে তাদেরও রুখে দেবে আমাদের শিক্ষার্থী। ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য রক্ষায় আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
উল্লেখ্য, দেশের ৬৪ জেলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলা পর্বের ওয়াইল্ডলাইফ অলিম্পিয়ার্ড। সকালে উদ্বোধনী পর্ব শেষে স্কুল ও কলেজ ক্যাটাগরির প্রায় সকল শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা পর্বে অংশ নেয়। জাতীয় পর্বে অংশ নেওয়া সকল শিক্ষার্থীদেরকে টি-শার্ট, সার্টিফিকেট এবং উপহার সামগ্রী দেওয়ার পাশাপাশি প্রতি ক্যাটাগরির সেরাদের মধ্য থেকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়কে যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৩০ হাজার ও ২০ হাজার টাকা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
এর আগে সকাল ৯টায় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে অলিম্পিয়াডের জাতীয় পর্বের উদ্বোধন করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ। এ সময় বন অধিদপ্তরের টেকসই বন ও জীবিকা (সুফল) প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক গোবিন্দ রায়, উপপ্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ ইউসূফ, জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যানের পরিচালক শওকত ইমরান আরাফাত, সহকারী বন সংরক্ষক মোহাম্মদ জামাল হোসেন তালুকদারসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/জেজে/এমপি