ইসরায়েল-হামাস মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা থেকে সরে দাঁড়াল কাতার
১১ নভেম্বর ২০২৪ ০১:১৮
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে অস্ত্রবিরতি ও বন্দিমুক্তি আলোচনায় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা থেকে সরে দাঁড়াল কাতার। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামাস ও ইসরায়েল ফের আলোচনার ইচ্ছা প্রকাশ করলে কাতার ফের মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করবে। তবে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের যে কার্যালয় রয়েছে, তার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, হামাস গাজা যুদ্ধের অবসানে নতুন প্রস্তাবগুলো প্রত্যাখ্যান করার কারণে যুক্তরাষ্ট্র আর কাতারে মার্কিন কর্মকর্তারা হামাস প্রতিনিধিদের উপস্থিতি মেনে নেবেন না বলে জানিয়েছেন।
প্রভাবশালী উপসাগরীয় রাষ্ট্র কাতার যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মিত্র। দেশটিতে বড় একটি মার্কিন বিমানঘাঁটি রয়েছে। ইরান, তালেবান ও রাশিয়ার মতো পক্ষগুলোর সঙ্গে কাতার রাজনৈতিক আলোচনায় বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র ও মিশরের সঙ্গে মিলে ইসরায়েল-গাজা সংঘাতের অবসানে একাধিকবার মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় সামিল থেকেছে কাতার।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ১০ দিন ধরে চলমান আলোচনা থেকে কোনো চুক্তিতে উপনীত হতে না পারায় কাতার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা স্থগিতের ইঙ্গিত দিয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কাতার তখনই এই প্রচেষ্টা পুনরায় শুরু করবে, যখন উভয় পক্ষ এই নির্মম যুদ্ধের অবসান চাইবে।’
হামাস ২০১২ সাল থেকে দোহায় তাদের কার্যক্রম চালাচ্ছে, যা তৎকালীন ওবামা প্রশাসনের অনুরোধে শুরু হয়েছিল।
শনিবার (৯ নভেম্বর) বেশ কয়েকটি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাতার সমঝোতায় পৌঁছেছে যে হামাসকে দোহায় রাজনৈতিক অফিস বন্ধ করতে বলা হবে। কারণ দলটি চুক্তির আলোচনা প্রত্যাখ্যান করেছে। তবে কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও হামাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দোহায় হামাস অফিস সম্পর্কিত এসব তথ্য ভুল।
যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন এখন কাতার থেকে হামাসকে বহিষ্কারের জন্য চাপ দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কাতার ছেড়ে যাওয়ার পর হামাস কোথায় তার কার্যক্রম পরিচালনা করবে, তা অনিশ্চিত। ইরান একটি বিকল্প হতে পারে, তবে তেহরানে ইসমাইল হানিয়ার মৃত্যুর পরে সেখানকার নিরাপত্তা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে।
হামাসের জন্য সম্ভাব্য আরেকটি বিকল্প হতে পারে তুরস্ক। এটি ন্যাটোর সদস্য এবং সুন্নি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসেবে হামাসকে তুলনামূলক নিরাপত্তা দিতে পারে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান সম্প্রতি ইস্তানবুলে হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়া ও তার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন, যেখানে গাজায় মানবিক সহায়তা ও ন্যায়সঙ্গত শান্তি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র এখন ইসরায়েলের যুদ্ধ সমাপ্তির পথে নেওয়া পদক্ষেপে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। অক্টোবরে মার্কিন পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা জানান, ১২ নভেম্বরের মধ্যে ইসরায়েল গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের অনুমতি না দিলে তাদের বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/এনজে