চোখ ও চাকরি হারিয়ে দিশাহারা ফয়সল
১০ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৩
সুনামগঞ্জ: স্বপ্নবাজ তরুণ ফয়সল আহমেদ। বাড়ি সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম বীরগাঁও ইউনিয়নের ঠাকুরভোগ গ্রামে। জীবিকার আশায় দশ বছর আগে ঢাকায় যান তিনি। বসবাস করতেন উত্তরার ১২ নম্বর সেক্টরে। একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ডেলিভারিম্যানের কাজ করে স্ত্রী-মেয়েকে চলছিল তার সংসার। ছাত্র-আন্দোলনে বাম চোখের দৃষ্টিশক্তি ও চাকরি হারিয়ে তার জীবন এখন বিপর্যয়ের মুখে।
ফয়সল জানান, গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিজয় মিছিলে গিয়েছিলেন। রাতে বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হন তিনি। সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে পাথরের আঘাতে বাম চোখ মারাত্নক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহত অবস্থায় পথচারীরা তাকে হাসপাতালে নেন। ঢাকায় দুটি অপারেশনের পরেও ফেরেনি তার চোখের আলো। বাম চোখের আঘাতের কারণে ডান চোখেও ব্যথা অনুভব করেন তিনি। চোখের আলো হারিয়ে দিশাহারা ফয়সল এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অর্থকষ্টে পড়েছেন।
গত ৭ নভেম্বর আবারও চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছেন। পরীক্ষার রিপোর্ট পাওয়ার পর পরবর্তী চিকিৎসা করা হবে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু তিনি পড়েছেন অর্থ সংকটে। এখন অবশ্য চিকিৎসার সব ব্যয়ভার সরকারিভাবেই করা হচ্ছে।
ফয়সল আহমদের স্ত্রী রেজুয়ানা আক্তার বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশ দেখার স্বপ্ন নিয়ে তার স্বামী বিজয় মিছিলে গিয়েছিলেন। আঘাতের কারণে চোখ হারানোর পর তার চাকরিটি চলে গেছে। সাড়ে ৩ বছরের শিশুসন্তানকে নিয়ে বাবার বাড়িতে আছেন। গর্ভে রয়েছে আরও এক সন্তান। কিন্তু কীভাবে সংসার চলবে, স্বামীর চোখের আলো ফিরবে এমন চিন্তায় নির্ঘুম রাত কাটে। এ পরিস্থিতে সরকার কাছে স্বামীর জন্য একটি চাকরির আকুতি তার।
শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, ফয়সল আহমদ একদিন অফিসে এসেছিলেন। তাকে কিছু অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তার আহতের বিষয়টি জেলায় অবগত করা হয়েছে। পরবর্তীকালে সহযোগিতায় সমাজসেবা বিভাগকে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। আমরা তার পাশে আছি এবং সরকারিভাবে যতটুকু সহযোগিতা করা সম্ভব, সেটুকু আমরা করব।
সারাবাংলা/এসআর