‘সচেতনতার অভাবে মাসিকের সময় স্কুলে অনুপস্থিত থাকে কিশোরীরা’
১০ জুন ২০১৮ ১৯:২৭
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ‘মাসিকের সময়ে স্কুলগুলোতে সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় এবং সচেতনতার অভাবে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে চায় না। আর কিশোরীদের ড্রপ-আউটের অন্যতম একটি কারণ হিসেবেও মাসিককালীন সময়কে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাই এ বিষয়ে এখনি ভাবতে হবে, সারাদেশে কিশোরীদের কাছে কম মূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। একইসঙ্গে সচেতন হতে হবে নিজেকেও।’
রোববার (১০ জুন) ‘মাসিককালীন পরিচ্ছন্নতা ও নিরাপদ মাতৃত্ব বিষয়ে সচেতনতামূলক কিশোরী সম্মেলনে’ বক্তারা এসব কথা বলেন। ঢাকা শহরের সবচেয়ে দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত কিশোরীদের নিয়ে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের আইইএম ইউনিট। মেরী স্টোপস বাংলাদেশ ও বাপসা (অ্যাসোসিয়েশন ফর প্রিভেনশন অব সেপটিক অ্যাবরশন, বাংলাদেশ) অনুষ্ঠানটি বাস্তবায়ন করে।
বক্তারা বলেন, ‘মাসিক চলাকালীন কিশোরীদের সচেতনতা জরুরি, দরকার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা। এ সময় পরিষ্কার না থাকলে পরবর্তীতে স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পরার সম্ভাবনা থাকে তাদের। আর মাসিক নারীদের একটি স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া, এতে লজ্জার কিছু নেই ।’ একইসঙ্গে বাল্যবিয়ে ঠেকানো না গেলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেন তারা।
অনুষ্ঠানে মাসিককালীন পরিচ্ছন্নতা ও ব্যবস্থাপনা, মাতৃকালীন সেবা, বাল্যবিয়ে ও নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ, কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা, ভিডিও প্রদর্শন, নাটিকা এবং কোরিওগ্রাফি পরিবেশন করে বস্তি এলাকার কিশোর-কিশোরীরা।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও আইইএম ইউনিটের পরিচালক আশরাফুন্নেসা বলেন, ‘দেশের মোট জনগোষ্ঠীর ২৩ শতাংশ কিশোর-কিশোরী। এরাই আগামী দিনগুলোতে দেশের কর্মশক্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। কিন্তু তারা যদি সুস্থ ভাবে বেড়ে না ওঠে তাহলে দেশ দক্ষ জনশক্তি হারাবে। তাই প্রথমেই এসব কিশোর-কিশোরীদের দিকে নজর দিতে হবে, তারা যেন কোনও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাসিকের সময়ে স্কুলগুলোতে সঠিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় এবং সচেতনতার অভাবে শিক্ষার্থীরা স্কুলে যেতে চায় না। আর কিশোরীদের ড্রপ-আউটের অন্যতম একটি কারণ হিসেবেও মাসিককালীন সময়কে চিহ্নিত করা হয়েছে।’
অনুষ্ঠানে মেরী স্টোপস বাংলাদেশের জেনারেল ম্যানেজার ইমরুল হাসান খান বলেন, ‘১৮ বছর বয়সের আগে বিয়ে করা যাবে না। লেখাপড়া করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।’
পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরের ঢাকা বিভাগের পরিচালক ব্রজ গোপাল ভৌমিক বলেন, ‘কোনোভাবেই বাল্যবিবাহে রাজি হওয়া যাবে না। কারণ বাল্য বিবাহ নিরাপদ মাতৃত্বের অন্তরায়।’
অনুষ্ঠানে মাসিককালীন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এবং নিরাপদ মাতৃত্ব নিয়ে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেন বাপসার প্রজেক্ট ম্যানেজার শামীমা আক্তার চৌধুরী এবং অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন মেরী স্টোপসের নিরাপদ-২ এর টিম লিডার খালেদা ইয়াসমিন।
সারাবাংলা/জেএ/এমও