বাকুতে কপ২৯ সম্মেলন শুরু
১১ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:২২
জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশ্বব্যাপী এর প্রভাব মোকাবিলার কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে আজারবাইজানের বাকুতে শুরু হচ্ছে জাতিসংঘ আয়োজিত কপ২৯ জলবায়ু সম্মেলন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, রাষ্ট্রপ্রধান ও নীতিনির্ধারকসহ সহ ৭০ হাজারের বেশি প্রতিনিধি অংশ নেবেন এই সম্মেলনে। আগের বছরগুলোর মতো এবারও বাংলাদেশ থেকে একটি প্রতিনিধি দল এই সম্মেলনে অংশ নেবে।
আজ সোমবার (১১ নভেম্বর) শুরু হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক এই সম্মেলন। চলবে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত। বিশ্ব জুড়ে পরিবেশ কর্মীদের প্রত্যাশা, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে যখন গোটা বিশ্ব বিপর্যস্ত, এ রকম সময়ে বিশ্বনেতারা কপ২৯ সম্মেলন থেকে কিছু না কিছু হলেও আশার আলো দেখাবেন।
এর আগের কপ সম্মেলনে অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বছরে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থোক বরাদ্দ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করতে বলা হয়েছিল উন্নত দেশগুলোকে। তবে সে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এবারের কপ২৯ সম্মেলনে ২০২৫ সালের আগে উন্নয়নশীল দেশগুলির চাহিদা ও অগ্রাধিকার বিবেচনা করে সেই বরাদ্দ পুনর্নিধারণ করা হবে। এই ‘নতুন সমষ্টিগত পরিমাণকৃত লক্ষ্য’ (এনসিকিউজি) কপ২৯ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
২০১৫ সালে করা প্যারিস চুক্তির মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি চলতি শতকের মধ্যে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমিত রাখার চেষ্টা করা, যেন জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়। কিন্তু সম্প্রতি জাতিসংঘের জলবায়ুবিষয়ক এক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, চলতি বছর গড় তাপমাত্রা প্রথমবারের মতো প্রাক-শিল্পযুগের তুলনায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি বৃদ্ধি পেতে যাচ্ছে, যা পৃথিবীজুড়ে জলবায়ু বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈশ্বিক এই সম্মেলনে বাংলাদেশের পক্ষে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় দাবি উত্থাপন করতে আজারবাইজান যাচ্ছেন। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ক্ষয়ক্ষতির জন্য ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’, প্যারিস চুক্তির তহবিল এবং জলবায়ু উদ্বাস্তুদের পরিস্থিতি তুলে ধরতে পারেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ড. ইউনূস ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত আজারবাইজানে রাষ্ট্রীয় সফরে থাকবেন এবং সম্মেলনের বিভিন্ন ফোরামে বক্তব্য দেবেন। এ ছাড়া গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
বাংলাদেশ সম্মেলনে দেশের পূর্বাঞ্চলসহ বিভিন্ন অঞ্চলে সাম্প্রতিক বন্যায় সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির কথা তুলে ধরে উন্নত দেশগুলোর কাছ থেকে সবুজ প্রযুক্তির সহায়তা চাইতে পারে।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব আহমদ শামীম আল রাজী বলেন, ঢাকাসহ বাংলাদেশের শহরগুলো তাপপ্রবাহ, বায়ুদূষণ এবং জলাবদ্ধতার মতো চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। কপ২৯ এ দেশের জন্য টেকসই উন্নয়ন এবং জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো উন্নয়নের সুযোগ রয়েছে।
স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারের দিকে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কপ২৯ সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ।
সারাবাংলা/এনজে