রাজশাহী বোর্ডের চেয়ারম্যান-সচিব লাঞ্ছিত, সাময়িক বরখাস্ত ২
১১ নভেম্বর ২০২৪ ২১:৫০
রাজশাহী: বহিরাগতদের নিয়ে গিয়ে রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও সচিবকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ঘটনার পর তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বোর্ড।
সাময়িক বরখাস্ত দুই কর্মকর্তা হলেন— উপপরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জাহিদুর রহিম ও সহকারী হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা আমিনুল করিম। সম্পর্কে তারা দুজন ভাই।
জাহিদুর রহিমের বিরুদ্ধে একজন সেবাগ্রহীতার সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্ক স্থাপন, দুর্নীতি ও অনিয়মসহ কয়েকটি অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছিল শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। সেসব সিদ্ধান্ত পালটে দেওয়ার জন্যই সোমবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বহিরাগতদের নিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানের কক্ষে যান তিনি।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সোমবার দুপুরে জাহিদুর রহিম ও তার ভাই আমিনুল করিমসহ ১০-১৫ জন ব্যক্তি বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. অলীউল আলমের কক্ষে ঢোকেন। আলোচনার একপর্যায়ে বোর্ড চেয়ারম্যান কক্ষ থেকে বেরিয়ে যান। দরজার সামনে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।
এ সময় সচিব হুমায়ুন কবিরের কক্ষের সামনে যান বোর্ড চেয়ারম্যান। সচিব ওই সময় বের হলেও তাকেও লাঞ্ছিত করা হয়। এ ছাড়া চেয়ারম্যান ও সচিবকে অশ্লীল ভাষায় গালমন্দ করেন বহিরাগতরা।
শিক্ষা বোর্ড সূত্র জানায়, জাহিদুর রহিম ও তার ভাই আমিনুল করিম একটি রাজনৈতিক দলের নেতা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক পরিচয়ে কয়েকজনকে নিয়ে বোর্ডে যান। তিনি তাদের সামনে অভিযোগ তোলেন, চেয়ারম্যান ও সচিব দুর্নীতি করেছেন। অন্যায়ভাবে তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পরে চেয়ারম্যান কাগজপত্র বের করে দেখান, তার বিরুদ্ধে তোলা অভিযোগ সঠিক নয়। বরং জাহিদুর রহমানের বিরুদ্ধেই অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে। তারপরও বোর্ডে চেয়ারম্যান ও সচিবকে লাঞ্ছিত করায় ঘটনাটি পুলিশকে জানানো হয়। খবর পেয়ে পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর একটি দলও সেখানে উপস্থিত হয়। এরপর বহিরাগতরা চলে যান।
শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. অলীউল আলম বলেন, আমাকে ও সচিবকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা, সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও বহিরাগতদের নিয়ে এসে বোর্ডে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরির অভিযোগে জাহিদুর রহিম ও তার ভাই আমিনুল করিমকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া দুই ভাইসহ ৩০ জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
অভিযুক্ত জাহিদুর রহিমের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল ইসলাম বলেন, বোর্ডে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। কী নিয়ে ঘটনা, এখনো বিস্তারিত বলতে পারছি না। বিস্তারিত জেনে পরে জানাতে পারব।
এ ঘটনায় রাত ৯টা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি বলে জানান ওসি। বলেন, মামলা হলে খতিয়ে দেখবেন।
সারাবাংলা/টিআর
কর্মকর্তা সাময়িক বহিষ্কার রাজশাহী রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত