বিদ্যালয়ে ভর্তিতে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনির কোটা বাতিল
১২ নভেম্বর ২০২৪ ১১:৩৬
ঢাকা: সরকারি-বেসরকারি স্কুলগুলোতে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। তবে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনির জন্য যে কোটা নির্ধারিত ছিলো এতোদিন, তা এবার থাকছে না।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তির আবেদন করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। আগামী ৩০ নভেম্বর বিকেল ৫টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবে। আবেদন শেষে ডিজিটাল লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী বাছাই করে ভর্তি করানো হবে।
জাতীয় শিক্ষানীতি-২০১০ অনুযায়ী ৬ বছরের বেশি বয়সী শিক্ষার্থীরা এতে আবেদন করতে পারবে। কাঙ্ক্ষিত শিক্ষাবর্ষের ১ জানুয়ারি তারিখে শিক্ষার্থীর সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর এবং ৩১ ডিসেম্বর তারিখে সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত হতে হবে।
পরবর্তী শ্রেণিগুলোতে বয়স নির্ধারণের বিষয়টি প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে ধারবাহিকভাবে প্রযোজ্য হবে। শিক্ষার্থীর বয়স নির্ধারণের জন্য ভর্তির আবেদন ফরমের সঙ্গে অনলাইন জন্ম-নিবন্ধন সনদের সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের বয়স নির্ধারণে সর্বোচ্চ ৫ বছরের অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া যাবে।
আর মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী-এবার ভর্তির আবেদন ফি দিতে হবে ১১০ টাকা। টেলিটকের মাধ্যমে এই ফি পরিশোধ করতে হবে।
এবারও সর্বোচ্চ পাঁচটি স্কুল পছন্দক্রম দেওয়াও সুযোগ রয়েছে। যেমন অনলাইন আবেদনের ক্ষেত্রে একজন শিক্ষার্থী পছন্দের ক্রমানুসারে সর্বোচ্চ পাঁচটি বিদ্যালয়ের নাম দিতে পারবে। তবে ডাবল শিফট স্কুলে উভয় শিফট পছন্দ করলে দুটি বিদ্যালয় পছন্দক্রম সম্পাদন হয়েছে বলে বিবেচিত হবে। অন্যদিকে সরকারি-বেসরকারি কোনো স্কুলেই একটি শ্রেণির কোনো শাখাতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করা যাবে না।
মাউশি সুত্রে জানা গেছে, বীর ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের জন্য যে ৫ শতাংশ কোটা ছিলো তা এবার তুলে দেওয়া হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী-বীর মুক্তিযোদ্ধা বা শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যার জন্যই কেবল ৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষিত থাকবে। এ কোটায় শিক্ষার্থী না পাওয়া গেলে মেধাতালিকা থেকে এ আসনে ভর্তি করতে হবে।
উল্লেখ্য, সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে ৬৮ শতাংশই কোটা রয়েছে। এর মধ্যে ৪০ শতাংশই ক্যাচমেন্ট এরিয়া কোটা। মুক্তিযোদ্ধার নাতি- নাতনী কোটা ৫ শতাংশ, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও অধীনস্ত দফতন-সংস্থাগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ১ শতাংশ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা ১০ শতাংশ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা ২ শতাংশ, অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর যমজ ও সহোদর ভাই-বোনরা ৫ শতাংশ কোটায় সংরক্ষিত আসনে ভর্তির সুযোগ রয়েছে।
আবেদন প্রক্রিয়া শেষে ডিজিটাল লটারি অনুষ্ঠিত হবে। এরপর লটারির ফল প্রকাশ করা হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে লটারির সম্ভাব্য দিন ঠিক করা হয়েছে ১০ ডিসেম্বর। এরপর ১২ ডিসেম্বর লটারির কার্যক্রম শেষে ফল প্রকাশ করা হতে পারে। ডিজিটাল লটারির ফল প্রকাশের পর ১৭ ডিসেম্বর শুরু হবে চূড়ান্ত ভর্তি কার্যক্রম, যা চলবে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আর প্রথম অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে ভর্তি শুরু হবে ২২ ডিসেম্বর থেকে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত। দ্বিতীয় অপেক্ষমাণ তালিকার ভর্তি চলবে ২৬ ডিসেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ভর্তি ফি
মফস্বল এলাকার স্কুলে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি সব মিলিয়ে ৫০০ টাকা। উপজেলা ও পৌর এলাকায় ১ হাজার টাকা, মহানগর এলাকায় সর্বোচ্চ ৩ হাজার টাকা। আর রাজধানীর প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নয়ন ফি ৩ হাজার টাকার বেশি আদায় করতে পারবে না। একই প্রতিষ্ঠানে বার্ষিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর প্রতি বছর সেশন চার্জ নেওয়া যাবে। তবে পুনর্ভর্তি ফি নেওয়া যাবে না।
সারাবাংলা/জেআর/এমপি