‘কাকরাইল মসজিদ-ইজতেমা ময়দান সাদমুক্ত করুন’
১২ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:৪১
ঢাকা: মাওলানা ফজলুল হক কাসেমী বলেছেন, ঢাকার কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গির ইজতেমা ময়দান আগামী ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সাদমুক্ত করে দিনের খেদমতকারী ওলামা মাশায়েখদের হাতে তুলে দিন। নাহলে ঢাকা অচল হয়ে যাবে। কারণ আমরা সারাদেশের ওলামা মাশায়েখদের নিয়ন্ত্রণে রাখি না।
মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে রাজধানীর জাতীয প্রেসক্লাবের তৃতীয় তলায় মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
মাওলানা ফজলুল হক কাসেমী বলেন, আমরা সোহরাওয়ার্দী ময়দানে বিশাল সমাবেশের মাধ্যমে জানিয়েছিলাম যে, মাওলানা সাদ একজন ধর্ম অপব্যাখ্যাকারী। তাকে নিয়ে ওলামা মাশায়েখদের নানান অভিযোগ রয়েছে। তিনি একজন ধর্ম অপব্যাখ্যাকারী। তিনি নবী রাসুলদের নিয়ে সমালোচনা করেন। যে কারণে তার বিরুদ্ধে ফতোয়ো জারি রয়েছে। তিনি সত্যের পথ থেকে দিনে দিনে সরে যাচ্ছেন।
ফজলুল হক আরও বলেন, সাদ সাহেবের দুই ওস্তাদ মাওলানা ইউসুফ সাহেব ও মাওলানা ইয়াকুব সাহেব তাকে সংশোধন হতে বহুবার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তিনি সবসময় তার নিজের ব্যাপারে অনড় রয়েছেন। যার ফলে তাকে আর তাবলীগ জামাতের মুরব্বী বলার কোনো সুযোগ নেই।
কাসেমী বলেন, তিনি একজন ভারতীয় নাগরিক। তার ঢাকায় আসার প্রশ্নই আসে না। তার অনুসারীরা টঙ্গির ইজতেমা ময়দানে জোবায়েরপন্থী ওলামা মাশায়েখদের শারীরিকভাবে লাঞ্চিত ও মারধর করেছেন। অনেকে হাসপাতালে পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। আবার উলটো নির্যাতিতদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছেন। এসব আমরা ভুলে যাইনি। তাই আগামী ইজতেমায় সাদ অনুসারীদের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতে পারে তবে সাদকে কোনোভাবেই আসতে দিবে না এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা।
এক প্রশ্নের উত্তরে কাসেমী বলেন, আমরা আগে থেকেই বলে আসছি, বর্তমান সরকারকে অস্থিতিশীল করার জন্য বিগত সরকারের ষড়যন্ত্রে সাদপন্থীরা উঠেপড়ে লেগেছে। আর আমরা এই সরকারকে জানপ্রাণ দিয়ে রক্ষার চেষ্টা করছি এবং ভবিষ্যতেও করে যাবো। এজন্য সাদপন্থীরা আমাদের পাকিস্তানি বলেছেন। নানানভাবে গালমন্দ করছেন।
তিনি বলেন, আগামী ১৫ নভেম্বর কাকরাইল মসজিদ দখলে নেওয়ার যে হুমকি দিয়েছেন সাদপন্থীরা তা আমরা প্রতিহত করবো। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে মসজিদের ভেতরে ও বাইরে অবস্থান করবো। কেউ অরাজকতা করতে আসলে এর দায় তাদেরই নিতে হবে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ফজলুল হক বলেন, এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাই থাকবে। ভারতীয় সাদপন্থী ধর্মের অপব্যাখ্যাকারীরা থাকবে না।
এর থেকে পরিত্রাণের উপায় কি? জানতে চাইলে মাওলানা কাসেমী বলেন, সাদ সাহেব তওবা পড়ে সংশোধন হয়ে আসলেই সব মিলমিশ হয়ে যাবে। তার বিরুদ্ধে থাকা দেওবন্দের ফতোয়া উঠে যেতে হবে। তারপরই কেবল তিনিও তাবলীগ জামাতের একজন দ্বীনি সাথী হিসেবে থাকতে পারবেন।
এদিকে সাদপন্থী ওলামা মাশায়েখদের একটি দল নিরাপত্তা চেয়ে শিল্পকলা একাডেমীতে অস্থায়ী সেনা ক্যাম্পে একটি স্মারকলিপি দিয়েছেন। স্মারকলিপি দেওয়ার আগে তারা ব্যাপকভাবে শোডাউন দেয় এবং শিল্পকলা একাডেমীর চারদিক ঘিরে রাখে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাদপন্থী তাবলীগ জামাতের একজন কোঅর্ডিনেটর আতাউর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, গত ৫ বছর ধরে কাকরাইল মসজিদে জোবায়েরপন্থীরা ২৮ দিন অবস্থান করেন। এরপর তারা বেরিয়ে গেলে সাদপন্থীরা ১৪ দিন অবস্থান করেন। এভাবেই চলে আসছিল। কিন্তু আগামী ১৫ নভেম্বর জোবায়েরপন্থীরা বের হওয়ার দিন। আমরা শুনেছি তারা ওইদিন বের হবে না। ওইদিন আমরা মসজিদে প্রবেশের জন্য আসবো। কেউ বাধা দিলে সাদপন্থীরাও রুখে দাঁড়াবেন। এজন্য আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সৃদৃষ্টি কামনা করছি। তারা যেন আমাদের মসজিদে ঢুকতে বাঁধা না দেন। এজন্য আমরা রমনা থানা ও সেনাবাহিনীর কাছে নিরাপত্তা চেয়ে স্মারকলিপি দিয়েছি।
সারাবাংলা/ইউজে/এমপি