র্যাবকে বিলুপ্ত করতে ট্রাইব্যুনালে পা হারানো লিমনের আবেদন
১২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:০৯
ঢাকা: র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র্যাব) সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে উল্লেখ করে সংস্থাটিকে বিলুপ্ত করতে আবেদন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ আবেদন করেন ২০১১ সালে র্যাবের গুলিতে পা হারানো মুহাম্মদ লিমন হোসেন।
র্যাবের বিরুদ্ধে লিমনের দায়ের করা মামলার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানানো হয়েছে।
আবেদনে লিমন বলেন, আমার দাবি ন্যায়। সকল আসামিদের (র্যাবের বিরুদ্ধে আমার পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলার) বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হোক।
লিমন আরও বলেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনার শাসন আমলে আমরা চাইলেও দোষী সকল আসামিকে বের করতে পারিনি। তাই যারা বাকি আছে তাদের নাম আসামি হিসাবে যুক্ত করতে চাই।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, র্যাব একটি সন্ত্রাসী সংগঠন, তাই আমার পক্ষ থেকে বিলুপ্তির দাবি জানাচ্ছি। ফ্যাসিষ্ট হাসিনা সরকারের সময়ে সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ও নিপীড়িত হয়েছি তা থেকে মুক্তি চাই।
লিমন বলেন, র্যাব-৮ এর কতিপয় সদস্য আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করে। মামলা করতে গেলে তাদের বিরুদ্ধে কেউ মামলা নিতে চায়নি। কোনরকম দায়সারাভাবে মামলা রেকর্ড করে তৎকালীন দ্বায়িত্বে থাকা ব্যক্তিরা। ১৩ বছর ধরে আমি ও আমার পরিবার হয়রানির শিকার হয়েছি। রাষ্ট্রীয় এ বাহিনীর বিরুদ্ধে মামলা করে আজ পর্যন্ত কোন সুরাহা পাইনি।
তিনি আরও বলেন, র্যাব আমিসহ আট জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে। যার নং জিআর ৪৫/১১, রাজাপুর জি.আর ৬/১১ রাজাপুর। যাতে সকলে বেকসুর খালাস পায়। এতে প্রমাণিত হয় আমি নির্দোষ। আমি ও আমার পরিবার ২০১১ সালের পর থেকেই ফ্যাসিষ্ট সরকারের দোষীদের কর্তৃক বার বার হামলা মামলার শিকার হচ্ছি। তাই রাষ্ট্রের কাছে আমি ও আমার পরিবারের সকলের নিরাপত্তা চাই। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দ্রুত বিচার কার্য সম্পন্ন করে দোষীদের শান্তি ও আমাকে ক্ষতিপূরণের দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
তৎকালিন র্যাব-৮ এর প্রধান (১) মেজর রাশেদ, র্যাবের সহকারি মহাপরিচালক জিয়াউল হাসান, ফ্যাসিষ্ট হাসিনার প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা তারিক আহমেদ ছিদ্দিকীর নাম অর্ন্তভুক্ত করার জন্য রাষ্ট্রের কাছে সহায়তা চাচ্ছি।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ২৩ মার্চ বিকেলে ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলার জমাদ্দারহাটে র্যাবের অভিযানের সময় লিমন হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। ২০১১ সালে উচ্চ মাধ্যমিক (এইচএসসি) পরীক্ষার মাত্র ১২ দিন আগে এ ঘটনা ঘটে। তখন লিমনের বয়স ছিল ১৬ বছর। সে বছর আর পরীক্ষা দেওয়া হয়নি তার।
তবে দমে যাননি দরিদ্র পরিবারের সন্তান মেধাবী লিমন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পড়াশোনা করে পরের বছর পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলার কাঁঠালিয়া পিজিএস বহুমুখী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৪ পান তিনি। এরপর সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগেভর্তি হন। সেখান থেকে উচ্চশিক্ষা নিয়ে আবার একই বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন তিনি।
সারাবাংলা/কেআইএফ/এমপি