মাকে হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখে সাদ
১২ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৭
বগুড়া: জেলার দুপচাঁচিয়া উপজেলায় গৃহবধূ উম্মে সালমা খাতুন (৫০) হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন করেছে র্যাব। মা’র সঙ্গে হাত খরচের টাকা নিয়ে বিরোধে ছেলেই তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে বাড়ির ডিপ ফ্রিজে রেখে ডাকাতির নাটক সাজানোর চেস্টা করেছিলো।
র্যাব-১২ বগুড়া ক্যাম্প হত্যাকারী হিসাবে ছেলে মাদরাসা ছাত্র সাদ বিন আজিজুর রহমানকে (১৯) পাশের কাহালু উপজেলার পাঁচপীর আড়োবাড়ি এলাকায় তার দাদার বাড়ি থেকে সোমবার (১১ নভেম্বর) রাতে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদ সে মা’কে হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে র্যাব জানায়।
রোববার (১০ নভেম্বর) দুপুরে দুপচাঁচিয়ার জয়পুর পাড়ার বাসিন্দা দুপচাঁচিয়া দারুসসুন্নাহ কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমানের স্ত্রী উম্মে সালমা খাতুন নিজ বাড়িতে খুন হন। ৪ তলা বাড়ির তৃতীয় তলায় পরিবারটি থাকতেন। ঘটনার সময় বাড়িতে গৃহবধূর স্বামী ও ছেলে কেউ ছিলো না বলে হত্যাকাণ্ডের দিন
জানানো হয়েছিলো। ছেলে সাদ বিন আজিজার পুলিশকে জানিয়েছিল, বাড়িতে এসে মাকে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি করে এক পর্যায়ে বাড়ির ডিপ ফ্রেজে তাকে পাওয়া যায়।
র্যাব ১২ বগুড়া কোম্পানী কমান্ডার মেজর মো. এহতেশামুল হক খান জানান, এ ঘটনা জানার পর থেকেই র্যাব ছায়া তদন্তে শুরু করে। বাড়ির দরজার গেট কোন আঘাত না পেয়ে তাদের সন্দেহ জাগে। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে হত্যাকারী চিহ্নিত করা হয়।
যে ভাবে এই হত্যাকাণ্ড ঘটনানো হয়
র্যাব-১২ বগুড়া জানায়, হাত খরচের টাকা নিয়ে সাদ বিন আজিজুরের সঙ্গে মা উম্মে সালমার প্রায় ঝগড়া হতো। এছাড়া বাড়ি থেকে প্রায় ১০০ থেকে ৫০০ টাকা হারাতো। এ নিয়েও ঝগড়া হতো। ঘটনার দিন হাত খরচের টাকা নিয়ে মা-ছেলের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। রাগ করে নাস্তা না খেয়ে আজিজুর বাসা থেকে মাদরাসায় চলে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সে বাড়িতে চলে এসে দেখতে পায় মা রান্নার জন্য মিষ্টি কুমড়া কাটছিলেন। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী পিছন থেকে মা’র নাক মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এসময় আজিজুরের আঙ্গুল সামান্য কেটে যায়। মা’কে হত্যার পর সে ওড়না দিয়ে দু’হাত বেঁধে ডিপ ফ্রিজে রাখে।
ঘটনাটি ডাকাতি হিসাবে চালানোর জন্য বাসায় থাকা কুড়াল দিযে আলমারিতে কয়েকটি কোপ দিয়ে গেটে তালা দিয়ে চলে যায়। পরে নিজে ফিরে এসে তালা খুলে তার বাবাকে জানায় মা’কে পাওয়া যাচ্ছেনা। তার বাবা মাদরাসা শিক্ষক তার স্ত্রীর ভাইদের খবর দেন। তাদের নিয়ে মাকে হত্যাকারী সাদ বাড়ির বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির নাটক করে। একপর্যায়ে সে আবার নিজ হাতেই ফ্রীজ খুলে মায়ের লাশ উদ্ধার করে। র্যাব জানায়
সোমবার রাতে তারা তদন্তে নিশ্চিত হয়ে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে হত্যাকারী সন্দেহে গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদে সে নিজের মাকে হত্যার কথা স্বীকার করে। র্যাব এক প্রেস ব্রিফিং এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন ও হত্যাকারী গ্রেফতারের বিষয়টি তুলে ধরেন।
সারাবাংলা/এইচআই