ফলন বেশি, দামও ভালো— আগাম সবজিতে কৃষকের মুখে হাসি
১৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:০৯
সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জের সব বাজারেই এখন মিলছে শীতকালীন সবজি। এখনো আবাদ শেষ না হলেও গত দুই মাসে রোপণ করার সবজিগুলো উঠতে শুরু করেছে। কৃষকরা বলছেন, গত মাস থেকেই তারা শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন পাচ্ছেন। বাজারে আগাম জাতের এসব সবজির দামও ভালো পাচ্ছেন। এতে তারা ভীষণ সন্তুষ্ট। কৃষি বিভাগ বলছে, এখন পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেক আবাদ হলেও চলতি মাসে সবজি লাগানো শেষ হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, জেলায় এ বছর ১২ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ শেষ হয়েছে গত মাসে। সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে যারা সবজির বীজ বপন করেছিলেন, তারা বাজারে সবজি বিক্রি শুরু করেছেন। লাউ, লালশাক, ডাটাশাক, বেগুন, মূলা, কলমি শাক, করলা, শিম, বরবটি, ফুলকপি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে।
সবজি চাষিরা বলছেন, গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর ফলন ভালো হয়েছে। দামও ভালো পাচ্ছেন। লাউ একেকটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, শিম ১০০ টাকা, বরবটি (লম্বা উড়ি) ৮০ টাকা ও শাক প্রতি আঁটি ২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর ইউনিয়নের কাইয়েরগাঁও গ্রামের বাসিন্দা মো. সাগর আহমেদ এ বছর তিন কেয়ার (৩০ শতাংশে এক কেয়ার) জমিতে সবজি আবাদ করেছেন। এ পর্যন্ত দেড় লাখ টাকার সবজি বিক্রি করেছেন তিনি।
সাগর সারাবাংলাকে বলেন, ‘জমিতে সব ধরনের সবজিই লাগিয়েছিলাম। পরিমাণমতো বৃষ্টি হওয়ায় অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার অনেক ভালো ফসল হয়েছে। কিছু বিক্রি করেছি, কিছু এখনো রয়েছে।’
একই ইউনিয়নের জর্জরিয়া গ্রামের বাসিন্দা হাসেন আলী বলেন, ‘প্রায় দুই লাখ টাকার লাউ, করলা, চিচিঙ্গা ও শসা বিক্রি করেছি। ফলন ভালো হয়েছে, ন্যায্য দামও পেয়েছি।’
একই গ্রামের বাসিন্দা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘করলা, ফুলকপি ও মরিচ আবাদ করেছিলাম। করলা বিক্রি শেষ। খুব ভালো দাম পেয়েছি। এখন নতুন করে আবারও আবাদ করব।’
সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কৃষকদের উন্নত জাতের সবজির চারা রোপণের পরামর্শ দিয়েছি। বিভিন্ন সভা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরির চেষ্টা করেছি। সেপ্টেম্বরের শেষের দিক থেকে শীতকালীন সবজির আবাদ শুরু হয়েছে। কিছু সবজি বাজারে পাওয়াও যাচ্ছে। আশা করি জেলায় এবার লক্ষ্যমাত্রার থেকেও বেশি আবাদ হবে।’
সারাবাংলা/টিআর