Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সমাজসেবা অধিদফতরের ডিজিকে তাৎক্ষণিক সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:১৭

ঢাকা: বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হয়েও সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) পদে দায়িত্ব পালন করা আবু সালেহ মোস্তফা কামালকে তাৎক্ষণিকভাবে (আদেশ প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে) সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

জনপ্রশাসন সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতের এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

হাইকোর্টের আদেশ সংশোধনী চেয়ে করা আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (৫ নভেম্বর) বিচারপতি ফাহমিদা কাদের চৌধুরী ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে, ৫ নভেম্বর বিচারপতি ফাহমিদা কাদের চৌধুরী ও বিচারপতি মুবিনা আসাফের হাইকোর্ট বেঞ্চ সমাজসেবা অধিদফতরের ডিজি ১৫ দিনের মধ্যে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে এ আদেশের সংশোধনী চেয়ে আবেদন করেন রিটকারী। একই সঙ্গে সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক পদে তার দায়িত্ব পালনের বৈধতা প্রশ্নে রুল জারি করেন আদালত।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. দেলোয়ার হোসেন ও আইনজীবী ড. মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, গত ১৭ সেপ্টম্বর সমাজসেবা অধিদফতরের ডিজি ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালকে ওএসডি করা হয়। ওএসডি হয়েও সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) পদে দায়িত্ব পালনকারী আবু সালেহ মোস্তফা কামালকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে গত মাসে রিট করেছিলাম। ওই রিটের শুনানি নিয়ে সমাজসেবার ডিজিকে ১৫ দিনের মধ্যে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এরপর আমরা হাইকোর্টের আদেশের সংশোধন চেয়ে আরেকটি আবেদন করি। আমাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ শুনানি শেষে হাইকোর্ট সমাজসেবার ডিজিকে আদেশপ্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে সরিয়ে দেওয়া নির্দেশ দিয়েছেন। স্পেশাল ম্যাসেঞ্জারের (বিশেষ বার্তা) হাইকোর্টের আদেশ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

জনপ্রশাসন সচিব ও সমাজকল্যাণ সচিবকে এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন।

উল্লেখ্য গত ১৭ সেপ্টম্বর সমাজসেবা অধিদফতরের ডিজি ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

এরপরও ওএসডি থাকা অবস্থায় সমাজসেবা অধিদফতরের ডিজি হিসেবে আবু সালেহ মোস্তফা কামাল কাজ করে যাচ্ছিলেন। এ নিয়ে গত ১১ অক্টোবর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ওএসডি হয়েও পদ ছাড়ছেন না সমাজসেবা অধিদফতরের ডিজি’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সমাজসেবা অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামালকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে এই আদেশ জারি করা হয়। এই আদেশের প্রায় এক মাস পরও তা অমান্য করে ডিজি পদে বহাল তবিয়তে কাজ করে যাচ্ছেন এই কর্মকর্তা।

ওএসডি করা সমাজসেবার ডিজি ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল অফিস করার কথা স্বীকার করেছেন। ওএসডি হওয়ার পর কীভাবে কাজ করছেন— জানতে চাইলে তিনি দাবি করেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে আমার অফিস করার মৌখিক নির্দেশ আছে। ওই নির্দেশে কাজ করে যাচ্ছি।

মৌখিক নির্দেশ কতটা যৌক্তিক— এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ হলেও দায়িত্বে থাকা মন্ত্রণালয় থেকে আমার অবমুক্তি না হওয়া পর্যন্ত অফিস করতে পারি। তা ছাড়া, এখানে কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

সমাজসেবা ডিজির ওএসডির প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তার নতুন পদায়ন করা পদ হচ্ছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রথম গ্রেডের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। জারি করা এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। অর্থাৎ যেদিন আদেশ জারি করা হয়েছে, ওই তারিখ থেকে কার্যকর।

বিজ্ঞাপন

অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অভিযোগ করেছেন, রাষ্ট্রপতির আদেশে করা প্রজ্ঞাপনের নির্দেশ মানছেন না ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল। তিনি দপ্তরে নিয়মিত আসছেন। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সভা করছেন। নানা কাজের নির্দেশনা দিচ্ছেন।

আবু সালেহ মোস্তফা কামালের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, অধিদফতরের নানা অনিয়ম, গোপন নথি গায়েব ও আলামত নষ্ট করতে ওএসডি হওয়ার পরও তিনি মন্ত্রণালয়ের মৌখিক নির্দেশের কথা বলে শুধু রুটিন দায়িত্ব নয়, আগের মতো দপ্তরের সব কাজ করছেন। বাস্তবে রাষ্ট্রপতির আদেশের পর মৌখিক নির্দেশে এটা কোনো কর্মকর্তা করতে পারেন না।

এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করার পর কোনো কর্মকর্তা সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় বা দপ্তরে থাকতে পারবেন না। আর ওএসডি এক ধরনের শাস্তি।

পরে ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে গত মাসে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. মুহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন।

রিটে জনপ্রশাসন সচিব, সমাজকল্যাণ সচিব ও সমাজসেবা অধিদফতরের ডিজিকে বিবাদী করা হয়।

সারাবাংলা/কেআইএফ/ইআ

ওএসডি মহাপরিচালক সমাজসেবা অধিদপ্তর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর