Tuesday 03 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মধ্যরাতেও স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে অনড় আন্দোলনে আহতরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৪ নভেম্বর ২০২৪ ০১:১৬ | আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৪ ১১:১২

নিটোরের সামনে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবিতে মধ্যরাতেও বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলনে আহত ও তাদের স্বজনরা। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: রাজধানীর জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান (নিটোর) তথা পঙ্গু হাসপাতালের সামনের মূল সড়কে প্রতিষ্ঠানটিতে চিকিৎসাধীন ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আহত ও তাদের স্বজনদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে। বিকেল থেকে শুরু হওয়া এই বিক্ষোভ মধ্যরাতে গড়িয়েছে। এখন বিভিন্ন স্লোগানের সঙ্গে তারা স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের পদত্যাগের দাবি তুলেছেন।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুককে নিয়ে নিটোর পরিদর্শনে গিয়েছিলেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা। তারা আহত সবাইকে দেখতে যাননি অভিযোগ তুলে আন্দোলনে আহত ও তাদের স্বজনরা বিক্ষোভ শুরু করেন। বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আন্দোলনকারীরা বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসসহ চার উপদেষ্টা তাদের সঙ্গে দেখা না করা এবং স্বাস্থ্য উপদেষ্টা পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা সড়কের অবস্থান ছাড়বেন না। প্রধান উপদেষ্টাসহ অন্য উপদেষ্টারা সেখানে গেলে তাদের সামনে দাবি-দাওয়া তুলে ধরবেন।

আরও পড়ুন- ‘আমাদের কষ্ট উপদেষ্টারা এসে দেখে যাক’

বিক্ষুব্ধরা বলছেন, সাড়ে তিন মাস হয়ে গেলেও তাদের সুচিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা সরকার করেনি। তাই উপদেষ্টারা এখানে না আসা পর্যন্ত রাস্তা ছাড়া হবে না।

মাসুম নামে আন্দোলনকারী আহত একজন বলেন, প্রধান উপদেষ্টা না আসা পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ব না। তিনি না আসা পর্যন্ত আমাদের দাবি-দাওয়াও প্রকাশ করব না। তিনি আসবেন, আমাদের যে দাবি-দাওয়া আছে, সেগুলো রাজপথে লিখিত আকারে নিয়ে যাবেন, আমাদের লিখিত আকারে দিয়ে যাবেন। তারপর আমরা রাজপথ ছাড়ব।

বিজ্ঞাপন

আন্দোলনকারী আরেকজন বলেন, আমরা চার উপদেষ্টাকে আসতে বলেছি। তাদের নামও ঘোষণা করেছি। তারা না আসা পর্যন্ত সড়ক ছেড়ে যাব না।

বুধবার দুপুর থেকেই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন আহত ও তাদের স্বজনরা, যা অব্যাহত রয়েছে মধ্যরাতেও। ছবি: সারাবাংলা

এর আগে সন্ধ্যা ৭টার দিকে ‘জুলাই শহিদ ফাউন্ডেশনে’র পক্ষ থেকে আন্দোলনে নিহত মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে যান। তিনি আহতদের সুচিকিৎসা ও প্রয়োজনে বিদেশে নেওয়ার আশ্বাস দেন। তবে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলে তিনি কোনো সমাধানে আসতে পারেননি।

স্নিগ্ধ আন্দোলনকারীদের প্রথমে জুলাই ফাউন্ডেশন কীভাবে কাজ করে তা জানাতে চেষ্টা করেন। আন্দোলনকারীরা স্নিগ্ধকে তাদের সঙ্গে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আন্দোলনে অংশ নিতে অনুরোধ করেন। এ সময় স্নিগ্ধ বলেন, আপনারা আন্দোলন করছেন, যতক্ষণ দরকার আমি থাকব।

আন্দোলনকারীরা ওই সময় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের ঘটনাস্থলে উপস্থিত হতে বলেন। উত্তরে স্নিগ্ধ বলেন, ‘আমি শহিদ পরিবার থেকে আপনাদের কাছে এসেছি। এর চেয়ে কি উপদেষ্টারা বড় হয়ে গেল?’

তবে আন্দোলনকারীরা তার কথায় কান দেননি। তারা বারবার বলতে থাকেন, উপদেষ্টাদের এখানে আসতে হবে। পরে স্নিগ্ধ আন্দোলনকারীদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে কথা বলার চেষ্টা করেন। তবে আন্দোলনকারীরা স্নিগ্ধর কথা না শুনে স্লোগান দিতে থাকেন, ‘দালালি না রাজপথ, রাজপথ রাজপথ।’

বুধবার সন্ধ্যায় জুলাই শহিদ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিলেন। তবে আন্দোলনকারীরা তার কথা শোনেননি। ছবি: সারাবাংলা

এদিকে বিক্ষোভের ফলে মূল সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়েছে। পাশাপাশি অন্তত ছয়টি সরকারি হাসপাতাল থাকায় রোগীদের অনবরত আসা যাওয়া করতে হয়। তবে আগারগাঁও ও মিরপুর রোডের মধ্যে সংযোগকারী এ সড়ক আটকে থাকায় দীর্ঘ যানজটে দুই পাশে ভোগান্তিতে পড়েন অসংখ্য মানুষ। রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সগুলোকে অবশ্য যেতে দেন বিক্ষোভকারীরা।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার আসলাম সাগর জানান, তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।

এদিন নিটোরে চিকিৎসাধীন জুলাই আন্দোলনের সবাইকে দেখতে না যাওয়ার অভিযোগে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের গাড়ির সামনে বিক্ষোভ শুরু করেন আহত ও তাদের স্বজনরা। একপর্যায়ে বিক্ষুদ্ধদের তোপের মুখে হাসপাতাল ছাড়তে হয় তাদের। এ সময় স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সঙ্গে ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার সারাহ কুক।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

আন্দোলনে আহত পদত্যাগ দাবি স্বাস্থ্য উপদেষ্টা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর