বাড়ি ফিরেই চোখ কপালে, বিছানায় বসে আছে কোয়ালা!
১৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৪৬
ফ্রান দিয়াস রুফিনো ব্রুনো দম্পতির বসবাস অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের শহর অ্যাডেলেইডে। দুজনেই কাজে বেরিয়েছিলেন। যখন ফিরলেন, ঘরে ঢুকেই চোখ ছানাবড়া। তাকিয়ে দেখেন, শোবার ঘরে বসে আছে আস্ত এক কোয়ালা! দেখতে দেখতে সেটি উঠে গেল কি না বিছানায়!
এমন ঘটনা ঘটেছে বুধবার (১৩ নভেম্বর)। তার একটি ভিডিও রুফিনো পোস্ট করেছেন ইনস্টাগ্রামে। তাতে দেখা গেল, সেই কোয়ালা ঘরের মেঝে থেকে উঠে পড়ে বিছানার পাশে রাখা সাইড টেবিলে। পরে দিব্যি উঠে বসে বিছানায়!
ঘরের মধ্যে কোয়ালাকে দেখে রুফিনো-ব্রুনো হতচকিত হয়ে পড়েন। ঠিক বুঝতে পারছিলেন না কোয়ালাটিকে নিয়ে তারা কী করবেন কিংবা কীভাবেই বা তাকে ঘরের বাইরে বের করতে পারবেন! পরে অবশ্য ঝামেলা হয়নি তেমন একটা। ইনস্টাগ্রামের পোস্টে মজা করেই রুফিনো লিখেছেন, ‘এমন ঘটনা কেবল অস্ট্রেলিয়াতেই সম্ভব!’
অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব ও দক্ষিণপূর্ব উপকূলে বসবাস কোয়ালাদের। নিউ সাউথ ওয়েলস, কুইন্সল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ান রাজধানী এলাকাতেও এদের দেখা মেলে। রোগ, খরা, দাবানল, ভূমির ধরনে পরিবর্তনের মতো বিভিন্ন কারণে কোয়ালা এখন বিপণ্নপ্রায় প্রাণীতে পরিণত হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ায় সাধারণত ইউক্যালিপটাস গাছে দেখা মেলে কোয়ালাদের। এদের গাছে বসে থেকে ইউক্যালিপটাস পাতা চিবোতেই দেখা যায় বেশির ভাগ সময়। নিরীহ গোছের প্রাণী কোয়ালার আক্রমণাত্মক আচরণের খুব একটা নজির পাওয়া যায় না।
সেই কোয়ালাকে অপ্রত্যাশিত এ ঘটনাটি নিয়ে প্রতিবেদন করেছে সিএনএন। ব্রাজিল থেকে অস্ট্রেলিয়ায় চলে আসা রুফিনো সিএনএনকে বলেন, ‘শোবার ঘরে কোয়ালা দেখে একদিকে যেমন ভয় পেয়েছিলাম, অন্যদিকে আনন্দিতও ছিলাম। আবার উত্তেজনাও হচ্ছিল।’
ভিডিওতে দেখা যায়, কোয়ালাটি বিছানার পাশে মেঝেতে বসে থেকে রুফিনো ও তার স্বামীর দিকে তাকিয়ে আছে। এরপর সেটি পাশের টেবিলে উঠে যায় এবং শেষে বিছানাতেও উঠে পড়ে।
রুফিনো বলেন, ‘আমি খুব নার্ভাস ছিলাম এবং চিন্তিত ছিলাম যে কীভাবে আমরা তাকে বাইরে বের করব।’
কোয়ালাটি শেষমেশ ঘর থেকে বের হয়ে যায় যখন রুফিনোর স্বামী ব্রুনো একটি সোয়েটারের সাহায্যে তাকে বাইরে বের করার চেষ্টা করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, কোয়ালাটি দ্রুত ঘর থেকে বের হওয়ার পথ খুঁজছে, আর রুফিনো পেছনে আতঙ্কে চিৎকার করছেন।
রুফিনো বলেন, মাঝে মাঝে তিনি রাস্তায় হাঁটতে বা ইউক্যালিপটাস গাছে কোয়ালা দেখতে পান। ঘরে কোয়ালা দেখবেন, তা স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি। তাদের পোষা প্রাণীর যাতায়াতের যে দরজা, সেটি দিয়ে কোয়ালাটি তাদের ঘরে ঢুকে থাকতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার যে এলাকাটিতে রুফিনো-ব্রুনো দম্পতির বসবাস, ওই এলাকায় কোয়ালাদের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল। ওই দিকেই কিছু অঞ্চলে বাস্তুসংস্থান সংরক্ষণের স্বার্থে কোয়ালার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণও করা হচ্ছে।
দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ায় কোয়ালাদের অবস্থা তুলনামূলক ভালো হলেও পূর্ব উপকূলে রোগ ও আবাসস্থলের ক্ষতির জন্য কোয়ালার সংখ্যা আরও কমে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
কোয়ালা সংরক্ষণে ২০২২ সালে একটি ১০ বছর মেয়াদি জাতীয় পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা চালু করা হয়। দুই বছর পর ওই প্রকল্পের প্রতিবেদন বলছে, তালিকাভুক্ত অঞ্চলে বন্য কোয়ালাদের দীর্ঘ মেয়াদে টিকে থাকার সম্ভাবনা ক্ষীণ।
সারাবাংলা/এনজে/টিআর