‘শেখ হাসিনার শাসনকালে একজন আরেকজনকে দেখলে ভয় পেত’
১৪ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৪
ঢাকা: শেখ হাসিনার শাসনকালে একজন আরেকজনকে দেখলে ভয় পেত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে নারিন্দায় ‘সাদেক হোসেন খোকা মাঠ’-এ আয়োজিত বিনামূল্যে চক্ষুসেবা ক্যাম্প উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনার শাসনকালে একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে দেখলে ভয় পেত।, একজন বন্ধু আরেকজন বন্ধুকে দেখলে ভয় পেতে। যুবলীগ ছাত্রলীগ ছিল মূর্তিমান আতঙ্ক। তারা যেদিক দিয়ে হেঁটে যেত, মানুষ সেদিক দিয়ে হেঁটে যেতে ভয় পেত। মানুষ ফিসফিস করে কথা বলত, নীরবে কথা বলত। তারা ভাবত, আমাদের কথা যদি ছাত্রলীগ, যুবলীগ জেনে যায়, তাহলে আমাদের বাড়ি ঘরে আক্রমণ করবে অথবা পুলিশ-র্যাব এসে তুলে নিয়ে গিয়ে চিরদিনের জন্য নিরুদ্দেশ করে দেবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে একটা বিকলাঙ্গ দেশে পরিণত করেছিল শেখ হাসিনা। সারাদেশেই রক্ত ঝরেছে, বিএনপির নেতা-কর্মীরা পঙ্গুত্ব বরণ করেছে, হাসপাতালে হাসপাতালে কাতরিয়েছে। অনেকে হাসপাতালে যেতেও ভয় পেত। কারণ, হাসপাতালে এসেও আক্রমণ করেছে শেখ হাসিনার ক্যাডাররা।’
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘অন্যায় যে বেশিদিন টিকতে পারে না, এটার যে পতন হয় ইতিহাস থেকে শেখ হাসিনা এই শিক্ষা গ্রহণ করেন নি বলেই তাকে বাংলাদেশ থেকে চলে যেতে হয়েছে, পালাতে হয়েছে। তার মধ্যে যদি সত্যিকারের দেশপ্রেম থাকত, তিনি যদি ভাবতেন, আমি যদি বাড়াবাড়ি করি, আমি যদি টাকা পাচার করি, মানুষের টাকা আত্মসাৎ করি তাহলে একদিন না একদিন আমাকে জনগণের মুখোমুখি হতে হবে, আমার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ হবে, নিজ দেশে আমি টিকে থাকতে পারব না- এটা যদি শেখ হাসিনা মনে করতেন তাহলে আজকে শেখ হাসিনার এই পরিণতি হত না।’
রিজভী বলেন, ‘সোনালী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকে যারা এই লুটপাটের সাথে জড়িত তারাই শেখ হাসিনার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ লোক। এস আলম নামে একজন ব্যক্তিকে বাংলাদেশের নয়টি ব্যাংক দিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তিনি নিজেই সেই ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এই ছিল বাংলাদেশের পরিস্থিতি এওইভাবে ১৫-১৬ বছর শেখ হাসিনা রাজত্ব করেছে। তিনি ভেবেছিলেন তাকে কেউ বাংলাদেশ থেকে বের করতে পারবে না। তিনি আজীবনের জন্য এখানে ক্ষমতায় থাকবেন।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে যে বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে, শেখ হাসিনা কল্পনাই করতে পারেনি তাকে এত প্রতিরোধের মুখোমুখি হতে হবে, তিনি চিন্তাও করতে পারেন নি। তিনি ভেবেছিলেন তার পাশে আছে ভারত এবং বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী র্যাব, পুলিশ এখানে বেনজীর আছে, মামুন আছে আরও তার কত পুলিশ অফিসার যারা নির্দেশ দেওয়ার আগেই নিরীহ মানুষদের ওপর গুলি চালাতেন, ক্রসফায়ারে মানুষ হত্যা করতেন, তাদেরকেউ নিরুদ্দেশ করা হয়েছে।’
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বাস্থ্যবিয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক আতিকুর রহমান রহমান রুমন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভির আহমেদ রবিন, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইসরাক হোসেন, ডা. এম এ মুহিত, মোকছেদুল মোমিন মিথুন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এসআর
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ভয় রুহুল কবির রিজভী। শেখ হাসিনার শাসনকাল