আন্দোলনে নিহত আবদুল্লাহর বাড়িতে নৌ পরিবহণ উপদেষ্টা
১৪ নভেম্বর ২০২৪ ২১:০৯
বেনাপোল: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আব্দুল্লাহর বাড়িতে গেলেন নৌ পরিবহণ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বেনাপোল স্থলবন্দরে নির্মিত কার্গো ভেহিক্যাল টার্মিনাল উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসে আব্দুল্লাহর বাড়ি যান।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে মাথায় গুলিবিদ্ধ আবদুল্লাহ (২৩) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়।
বিকেলে উপদেষ্টা বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়া গ্রামে আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান। এ সময় উপদেষ্টা আব্দুল্লাহর স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন, সান্তনা দেন। সহযোগীতার আশ্বাস দিয়ে আব্দুল্লাহকে যেখানে দাফন করা হবে সেই কবরস্থানও ঘুরে দেখেন তিনি।
মেধাবী ছাত্র আব্দুল্লাহ যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড়আঁচড়া টার্মিনাল পাড়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল জব্বাবের ছেলে। মা মাবিয়া বেগম। তারা তিন ভাই ও এক বোন। আব্দুল্লাহ ছিল সবার ছোট। তিনি ঢাকায় বোনের বাসায় থেকে লেখাপড়া করতেন। তিনি রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। আন্দোলনের শুরু থেকেই আবদুল্লাহ সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর তাঁতীবাজার মোড়ে বংশাল থানার সামনে গুলিবিদ্ধ হন আবদুল্লাহ। তার কপালে গুলি লাগে। এমন অবস্থায় প্রায় দুই থেকে তিন ঘণ্টা তিনি রাস্তায় পড়ে থাকেন। প্রথমে তাকে মিটফোর্ড এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার করে তার মাথা থেকে গুলি বের করা হয়।
পরিবারের অভিযোগ, অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকলেও আব্দুল্লাহকে হাসপাতাল থেকে ১০ আগস্ট জোর করে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এরপর তাকে বেনাপোলে নিয়ে যান স্বজনরা। বাড়িতে তার অবস্থার অবনতি হতে থাকলে ১১ আগস্ট রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার আরও অবনতি হওয়ায় চিকিৎসকরা দ্রুত আবারও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
১২ আগস্ট সকালে আবার ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় আব্দুল্লাহকে। এ সময় চিকিৎসকরা তার মাথার অভ্যন্তরে ইনফেকশন দেখতে পান, যা তরল প্লাজমার মতো গলে গলে পড়তে থাকে। আবারও তার অস্ত্রোপচার করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় গত ২২ আগস্ট তাকে সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়েছিল। সেখানে আড়াই মাসেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন থাকলেও কোনো চিকিৎসায় আর কাজে আসেনি।
এদিকে আব্দুল্লাহর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তার বাড়ি বড়আঁচড়াসহ গোটা বেনাপোলে। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা থেকে তার মরদেহ বাড়িতে পৌঁছার কথা রয়েছে। মরদেহের সঙ্গে তার মা-বাবারয়েছেন। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) তাকে দাফন করা হবে।
সারাবাংলা/এসআর
নিহত আবদুল্লাহ নৌ পরিবহন উপদেষ্টা বেনাপোল বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন