Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সুদান গৃহযুদ্ধে নিহতের সংখ্যা স্বীকৃত হিসাবের ৩ গুণ: গবেষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৪ নভেম্বর ২০২৪ ২১:২১

ছবি: সংগৃহীত

সুদানের গৃহযুদ্ধে মৃতের সংখ্যা পূর্বে জানানো সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি বলে একটি নতুন গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে।

লন্ডন স্কুল অফ হাইজিন অ্যান্ড ট্রপিকাল মেডিসিনের সুদান রিসার্চ গ্রুপের রিপোর্ট অনুযায়ী, খার্তুম রাজ্যে যেখানে গত বছর সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল, সেখানে ৬১,০০০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। এর মধ্যে ২৬,০০০ জন সরাসরি সহিংসতায় নিহত হয়েছেন। তবে সুদানে মৃত্যুর প্রধান কারণ ছিল প্রতিরোধযোগ্য রোগ ও খাদ্য সংকট।

বিজ্ঞাপন

দেশের অন্যান্য অংশেও বিশেষ করে পশ্চিমাঞ্চলীয় দারফুরে বহু মানুষ মারা গেছেন, যেখানে নৃশংসতা ও জাতিগত নিধনের ঘটনা ঘটছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

সুদানে চলমান সংঘর্ষ বিশ্বের সবচেয়ে খারাপ মানবিক সংকট তৈরি করেছে বলে সাহায্যকর্মীরা জানিয়েছেন। হাজার হাজার মানুষ দুর্ভিক্ষের ঝুঁকিতে রয়েছে।

এখন পর্যন্ত, জাতিসংঘ ও অন্যান্য সাহায্য সংস্থা ২০,০০০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছিল। তবে, দেশটির অস্থিরতার কারণে সঠিকভাবে মৃতের সংখ্যা হিসাব করা সম্ভব হয়নি।

সুদান রিসার্চ গ্রুপের গবেষণায় দেখা গেছে, খার্তুমে ৯০% মৃত্যুর রেকর্ড সংরক্ষিত হয়নি, যা অন্যান্য অঞ্চলে একই ধরনের পরিস্থিতি নির্দেশ করতে পারে।

অন্যদিকে, এক মানবাধিকার সংগঠন জানিয়েছে, সংঘর্ষে ফরাসি সামরিক প্রযুক্তি ব্যবহার হচ্ছে, যা জাতিসংঘের অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা আইনকে লঙ্ঘন করেছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) জানায়, দারফুরে সেনাবাহিনীর সাথে যুদ্ধরত আরএসএফ মিলিশিয়া সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে সরবরাহ করা যানবাহন ব্যবহার করছে, যা ফরাসি হার্ডওয়্যারে সজ্জিত।

বিজ্ঞাপন

অ্যামনেস্টির মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ড বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, ফ্রান্সে নির্মিত অস্ত্র সুদানের যুদ্ধে ব্যবহৃত হচ্ছে।’

ফরাসি কর্তৃপক্ষ ও কোম্পানিগুলোকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে অ্যামনেস্টি বলেছে, এই অস্ত্র মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ফরাসি প্রতিষ্ঠানগুলির উপর মানবাধিকার সংরক্ষণের দায়িত্ব থাকার কথা উল্লেখ করে অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, সংযুক্ত আরব আমিরাতে এসব সরঞ্জাম সরবরাহ বন্ধের জন্য ফরাসি সরকারকে তৎপর হতে হবে।

জাতিসংঘ প্রথমে ২০০৪ সালে দারফুরে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। অ্যামনেস্টি এখন এই নিষেধাজ্ঞা পুরো সুদানে প্রসারিত ও এর পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে। সংগঠনটি সমস্ত দেশকে সুদানের যোদ্ধাদের সরাসরি ও পরোক্ষভাবে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করারও আহ্বান জানিয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিলে, সুদানের সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের সাথে আরএসএফ নেতা জেনারেল মোহামেদ হামদান দাগলো ক্ষমতার লড়াইয়ে লিপ্ত হন। দারফুরে জাতিগত নিধনের অভিযোগে আরএসএফ অভিযুক্ত হলেও তারা দোষ অস্বীকার করেছে।

উল্লেখ্য, সুদানের গৃহযুদ্ধ ২০২৩ সালের এপ্রিলে শুরু হয় যা, মূলত দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সামরিক গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষমতার সংঘর্ষের ফলে হয়েছে। ২০১৯ সালে দীর্ঘদিনের শাসক ওমর আল-বশিরকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর সামরিক ও বেসামরিক অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছিল। কিন্তু সামরিক বাহিনী এবং আরএসএফ-এ নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠীর মধ্যে ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতা ক্রমশ তীব্র হয়ে ওঠে এবং তা সংঘর্ষে পরিণত হয়।

সারাবাংলা/এনজে

গবেষণা গৃহযুদ্ধ নিহত সুদান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর