দাম কমলেও নাগালে আসছে না সবজি
১৫ নভেম্বর ২০২৪ ১১:২২
ঢাকা: বাজারে শীতকালীন সবজিতে কিছুটা স্বস্তি এলেও ক্রেতাদের অস্বস্তি বাড়িয়েছে আলু ও পেঁয়াজ। এখনো ক্রেতাদের নাগালের বাইরে দ্রব্যমূল্যের দাম।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ারবাজার, বিজয়সরণী, শেওড়াপাড়া ও ইব্রাহিমপুর এলাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
কোন কোন বাজারে আলু ৭৫ টাকা কেজিতেও বিক্রি হচ্ছে আলু। আর পাইকারিতেই ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ সর্বোচ্চ ১৩৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। খোদ বিক্রেতারাই বলছেন, অন্যান্য বছরের একই সময়ে সবজির দাম আরও কম থাকে। তবে, এ বছর সে তুলনায় এখনো সবজির দাম কমেনি।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে শশা ৮০ টাকা, বেগুন প্রকারভেদে ৬০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ১২০ টাকা, কড়লা ৯০ থেকে ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৬০ টাকা, পেপে ৪০ টাকা টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এই বাজারের সবজি বিক্রেতা জাকির বলেন, যেভাবে কমার কথা ছিলো সেভাবে কমেনি। অন্যান্য বছর সবজির দাম যেভাবে কমে এবার সেভাবে কমেনি। অন্য বছর সবজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে চলে আসে, এবার এখনো আসেনি।
রাজধানীর ইব্রাহিমপুর বাজারে দেখা গেছে, পেঁপে ৬০, কড়লা ১০০ টাকা, বটবটি ১০০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা, কালা গোল বেগুন ১০০ টাকা ও সিম ১২০ টাকা। এছাড়া শশা ৮০ টাকা, গাজর ১৮০ টাকা ও টমেটো ১৬০, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা জাহাঙ্গীর বলেন, কিছু সবজির দাম কমেছে। শীতকালীন কিছু সবজির দাম আগের চেয়ে অনেকটা কমেছে। তবে কিছু সবজির দাম বেড়েছেও।
ফার্মগেটের বিজয়স্মরণী বাজারে দেখা গেছে, লম্বা বেগুন ৭০, গোল বেগুন ১০০ টাকা, দেশি গাজর ১৩০, শশা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, চায়না গাজর ১৫০, টমেটো ১৪০, পেপে ৫০, উস্তা ১০০, কড়লা ৮০, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, সিম ১০০ টাকা ও কাঁচামরিচ ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা ইয়াছিন সারাবাংলাকে বলেন, বাজারে সিম, পটল, কাঁচামরিচ, বটবটি ও শাক সবজির দাম কিছুটা কমছে। শীতকালীন সবজি আসার কারণে কোন কোন সবজির দাম কমেছে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা। তবে এই বাজারে আলু ৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
বিক্রেতা ইয়াছিন বলেন, আলু ৭৫ ও নতুন আলু ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পুরাতন আলু বাজার থেকে কিনতেই ৬৮ টাকা কেজি পড়ছে। ৭৫ টাকা কেজি বিক্রি করতে হচ্ছে প্রায় ১০ দিন ধরে।
রাজধানীর শেওড়াপাড়ার একটি মনিহারি দোকানে আলু ৭০, পেঁয়াজ ১৩০, আদা ৩০০ ও রসুন ২৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এই দোকানে ডিম ১৬০ টাকা ডজন ও ৫৫ টাকা টাকা হালিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মসুরের ডাল ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি ও সয়াবিন তেল ১৬৮ টাকা টাকা লিটারে বিক্রি হতে দেখা গেছে। দোকানটিতে চালের মধ্যে মিনিকেট ৭৬ থেকে ৮০ টাকা, পাইজাম ৬৫ ও আটাশ ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
হৃদয় জেনারেল স্টোর নামের ওই দোকানের কর্মচারী হাবিব বলেন, বাজারে ডিমের দাম কিছুটা বেড়ছে। গত সপ্তাহে ১৫০ টাকা ডজন বিক্রি করা গেলেও আজ ১৬০ টাকা ডজনে বিক্রি করতে হচ্ছে। আলু ও পেঁয়াজের দাম গত দুই সপ্তাহ ধরে স্থির রয়েছে।
এদিকে, কারওয়ানবাজের পাইকারি বাজারে দেশি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৩৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১১৫ টাকা ও মিশর ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে৷ এই বাজারে পাবনার দেশি পেঁয়াজ ১৩৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হতেও দেখা গেছে। এছাড়া চায়না আদা ২১৫ থেকে ২২০ টাকা, চায়না রসুন ১৯০ থেকে ২০০ টাকা, নতুন আদা ১১০ থেকে ১২০ ও নাটোরের রসুন ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে৷ গত কয়েক মাসের বাজারদর বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পাইকারিতে চায়না আদা ও চায়না রসুনের দাম কমেছে। নাটোরের রসুনের দাম বেড়েছে ও নতুন আদার দাম স্থির রয়েছে। আর কাওরানবাজারে পাইকারিতে আলু ৫৮ থেকে ৬২ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
রাজধানীর বিজয়সরণী বাজারে গরু ৭৫০ টাকা কেজি ও খাশি ১১০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাজারটিতে ফার্মের মুরগি ১৯০ টাকা, পাকিস্তানি ৩১০, দেশি ৫২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এই বাজারের মুরগি বিক্রেতা জাগাঙ্গীর বলেন, পোল্ট্রি মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা ডজনে ডিম বিক্রি হচ্ছে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এমপি