ইরানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে মাস্কের ‘গোপন’ বৈঠক: সম্পর্ক উন্নয়নের ইঙ্গিত?
১৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:০১
সোমবার (১১ নভেম্বর) ইলন মাস্ক ইরানের জাতিসংঘের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বলে গণমাধ্যমের তথ্যসূত্রে জানা গেছে। তার ঠিক একদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মাস্ককে নতুন প্রতিষ্ঠিত ‘সরকারি দক্ষতা বিভাগের’ প্রধানদের একজন হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন।
এই বৈঠকে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের উত্তেজনা হ্রাসের উপায় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে নিউইয়র্ক টাইমসকে জানিয়েছেন দুইজন ইরানি কর্মকর্তা। এক কর্মকর্তার তথ্যমতে, টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান মাস্ক নিজেই এই বৈঠকের অনুরোধ করেন, আর রাষ্ট্রদূত বৈঠকের স্থান নির্ধারণ করেছেন।
ইউক্রেন এবং মধ্যপ্রাচ্যের সংঘাতের সমাধানে ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তখন বিশ্বের শীর্ষ ধনী মাস্ক বিদেশি কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন, যা আগামী জানুয়ারিতে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রভাবশালী বেসামরিক ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করছে যাচ্ছে।
চলতি মাসের শুরুতে মাস্ক ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লদিমির জেলেনস্কির মধ্যে এক আলোচনা সভা হয়েছিলো, যেখানে জেলেনস্কি ইউক্রেনে তার কোম্পানি স্টারলিংককে স্যাটেলাইট সেবা প্রদানের জন্য মাস্ককে ধন্যবাদ জানান।
ট্রাম্পের ইরানের সাথে সম্পর্ক জটিল। তার মেয়াদকালে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায় এবং ইরানের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরানের কুদস বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল কাসেম সোলেইমানিকে হত্যা করার নির্দেশও দেন তিনি। পরবর্তী সময়ে সেপ্টেম্বরে ট্রাম্পের প্রচারণা দপ্তর জানায়, ইরান তাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করছে।
সেন্টার ফর ইন্টারন্যাশনাল পলিসির সিনিয়র ফেলো সিনা তুছি বলেন, ‘মাস্ক বা অন্য যেই এই আলোচনাগুলো পরিচালনা করবেন, তারা যদি কূটনৈতিক প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে কঠোর পরিশ্রমী না হন, তবে ইরানের সাথে আলোচনার সাফল্য অর্জন কঠিন হবে।’
ট্রাম্পের ইসরায়েলের প্রতি শক্তিশালী সমর্থন এই আলোচনায় বাধা সৃষ্টি করতে পারে এবং তার শাসনামলে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস এবং হিজবুল্লাহর সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হয়েছিল, যা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সৈয়দ আব্বাস আরাঘচি বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, ‘সহযোগিতা এবং সংলাপের মাধ্যমে মতপার্থক্য দূর করা সম্ভব। আমরা সাহস ও সদিচ্ছা নিয়ে এগিয়ে যেতে সম্মত হয়েছি। ইরান কখনোই তার শান্তিপূর্ণ পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার টেবিল থেকে সরে দাঁড়ায়নি।’
সারাবাংলা/এনজে