জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় কপ সংস্কারের দাবি বিশেষজ্ঞদের
১৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৮
জাতিসংঘের কপ জলবায়ু সম্মেলনের দ্রুত সংস্কারের প্রয়োজন বলে মত প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি-মুন ও সাবেক জলবায়ু প্রধান ক্রিস্টিয়ানা ফিগেরেসসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ বিশেষজ্ঞ।
এক চিঠিতে তারা উল্লেখ করেন, যারা জীবাশ্ম জ্বালানি ধাপে ধাপে বন্ধ করতে সমর্থন করেন না, তাদের এই সম্মেলনের আয়োজক হিসেবে রাখা উচিত নয়।
এই সপ্তাহে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট কপ২৯ এর সম্মেলনে বিশ্ব নেতাদের বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসকে তিনি ঈশ্বরের দান মনে করেন এবং এটি বাজারে আনার জন্য তাকে দোষারোপ করা ঠিক হবে না। এর কয়েকদিন আগে বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, এক শীর্ষ আজারবাইজানি কর্মকর্তা কপ-এ তার ভূমিকা ব্যবহার করে জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবসায়িক চুক্তি সংক্রান্ত বৈঠকের ব্যবস্থা করেন।
যদিও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জলবায়ু আলোচনায় অগ্রগতি হয়েছে, তবুও ২০০টি দেশের সর্বসম্মতি প্রয়োজন হওয়ায় যথাযথ পদক্ষেপ এখনও নেয়া যাচ্ছে না।
২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে রাখতে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নির্ধারণ করে। এছাড়া, ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য শক্তি তিনগুণ করার অঙ্গীকারও করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, কপ-এর ধীর গতির প্রক্রিয়া দ্রুত পরিবর্তিত জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় সক্ষম নয়।
সাবেক জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন, সাবেক জলবায়ু প্রধান ক্রিস্টিয়ানা ফিগেরেস এবং আয়ারল্যান্ডের সাবেক প্রেসিডেন্ট মেরি রবিনসনসহ চিঠির স্বাক্ষরকারীরা বলেন, ‘মানবতার জন্য নিরাপদ জলবায়ু নিশ্চিত করতে বর্তমান কাঠামো প্রয়োজনীয় দ্রুত ও ব্যাপক পরিবর্তন আনতে পারছে না।কপ আয়োজক দেশগুলিকে অবশ্যই প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যগুলি সমুন্নত রাখার বিষয়ে আগ্রহ দেখাতে হবে।’
বিশিষ্ট বিজ্ঞানী জোহান রকস্ট্রম বলেন, ‘তিন দশক ধরে আলোচনায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে, কিন্তু এখন আমাদের দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে।’
বাকু সম্মেলনে ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলির প্রতিনিধিরা কপ-এর কাঠামো পরিবর্তনের প্রস্তাবে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা আশঙ্কা করছেন, জি-২০ এর মতো বড় দেশগুলি ফোরামের সিদ্ধান্ত নিলে তাদের কণ্ঠস্বর উপেক্ষিত হতে পারে।
চিঠি থেকে আরও জানা যায়, অনেক সময় কপ-এর আয়োজক দেশগুলির পছন্দ নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সম্মেলনের ঠিক আগে আজারবাইজানের কপ২৯ প্রধানের একটি গোপন রেকর্ডিং প্রকাশিত হয়, যেখানে তাকে রাষ্ট্রীয় তেল ও গ্যাস কোম্পানিতে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা করতে শোনা গেছে।
কপ২৯-এর শুরুতে আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ তার দেশের গ্যাস রপ্তানির পক্ষে সাফাই দেন এবং বলেন, প্রাকৃতিক সম্পদগুলোকে বাজারে আনার জন্য কোনো দেশকে দোষারোপ করা উচিত নয়।
সারাবাংলা/এনজে