পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ভেঙে পুনর্গঠনের দাবি
১৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:২৫
রাঙ্গামাটি: পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ভেঙে নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়োগ দিতে পুনর্গঠনের দাবি উঠেছে।
শনিবার (১৬ নভেম্বর) সকাল ১১টা রাঙ্গামাটি জেলা শহরের রিজার্ভ বাজারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।
‘ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদ’-এর ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এ কর্মসূচির নেতৃত্ব দিয়েছে পাহাড়ের আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল ইউপিডিএফ।
মানববন্ধনে লিখিত বক্তব্যে ছাত্র-জনতার সংগ্রাম পরিষদের সদস্য শ্রদ্ধা চাকমা বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে নির্দলীয়, সৎ ও যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠনের দাবি জানাই। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার হাসিনার কুশাসন থেকে মুক্ত করতে সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। হাসিনার নিয়োগকৃত দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের সরিয়ে দিয়ে যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগ দিচ্ছেন। এই প্রক্রিয়া এখনও অব্যাহত রয়েছে। সরকার অবশেষে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ পুনর্গঠন করেছে। আমরা সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাই। আমরা আশা করেছিলাম সরকার একই সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদও পুনর্গঠন করবে। আমাদের প্রশ্ন আঞ্চলিক পরিষদ কেন পুনর্গঠন করা হচ্ছে না?
বক্তব্যে শ্রদ্ধা চাকমা আরও বলেন, ১৯৯৮ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন পাস করার পর ১৯৯৯ সালের ২৭ মে হাসিনার সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ গঠন করেছিল। সেই সময় এই পরিষদে যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছিল তারা এখনও একনাগাড়ে ক্ষমতায় রয়েছে। গত ২৫ থেকে ২৬ বছরে কোনো সরকার আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচন বা পুনর্গঠন করেনি; এমনকি পুনঃনিয়োগও দেয়নি। অথচ পরিষদের মেয়াদ হলো ৫ বছর। বর্তমানে যারা আঞ্চলিক পরিষদে রয়েছে, তারা বৈধভাবে আছে কিনা দেখা দরকার?
এসময় তিনি তিন জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে দাবি জানান।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, জেলা পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে হাসিনার সহযোগি ও সুবিধাভোগিদের বিদায় করতে হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকেও ফ্যাসিস্ট শাসন মুক্ত করে প্রকৃত গণতান্ত্রিক ও ন্যায়ভিত্তিক শাসন কায়েম করতে হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি সইয়ের পর চুক্তির আলোকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ ও তিন পার্বত্য জেলা পরিষদ গঠন করা হয়। বিগত সময়ে ক্ষমতার পালাবদলের পর তিন পার্বত্য জেলা পরিষদগুলো পুনর্গঠন হলেও আঞ্চলিক পরিষদ পুনর্গঠন হয়নি।
চুক্তি সইয়ের পর আঞ্চলিক পরিষদের চেয়ারম্যান মনোনীত হন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) কেন্দ্রীয় সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা)। এবার আঞ্চলিক পরিষদ ভেঙে পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতি ভেঙে আত্মপ্রকাশ পাহাড়ের রাজনৈতিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট-ইউপিডিএফ। ইউপিডিএফের কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রসিত খীসা। যিনি এক সময় জনসংহতি সমিতির সহযোগী ছাত্র সংগঠন পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ী ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন।
সারাবাংলা/এসআর