Saturday 16 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জমকালো আয়োজনে অনুষ্ঠিত হলো নবান্ন উৎসব

ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট
১৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৩

নতুন ধানের ভালো ফলনে হাসি ফুটেছে কৃষাণ কৃষাণীদের মুখে

মানিকগঞ্জ: আবহমান ঐতিহ্য ধরে রাখতে মানিকগঞ্জের ঘিওরে জমকালো নানা আয়োজনে দিনব্যাপী পালিত হলো নবান্ন উৎসব।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) দিনভর উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের কাউটিয়া গ্রামে প্রাকৃতিক কৃষি কেন্দ্রে এ উৎসবে নারী পুরুষসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার শত শত মানুষ উপস্থিত হন।

এদিন স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত অতিথিরা মিলে মাঠে ধান কাটেন। নতুন চালের গুড়া দিয়ে আলপনা আঁকা হয় উঠোনে। জারি-সারি গান আর হই হুল্লোড় করে এক বিঘা জমির ধান চোখের পলকেই কাটা শেষ। সেই ধান মাড়াই করা হয় খেতের পাশেই। এরপর সযতনে বেতের কাঠায় ধান ভরে নেওয়া হয় ঐতিহ্যবাহী ঢেঁকি ঘরে।

আয়োজন করা হয় ঢেঁকিছাটা নতুন চালের গুড়ো, ডাবের পানি, নারিকেল, কলা, গুড় দিয়ে নবান্ন আহার, মুঠো পিঠা, সেমাই পিঠা ও পায়েশ।

কলাপাতায় আহার পর্ব শেষে শুরু হয় নবান্নের ওপর আলোচনা সভা,শস্য প্রদর্শনী, নাচ, বাউল গান, শস্যের গীত, রম্য কৌতুক ও বিলুপ্তপ্রায় গ্রামীণ খেলাধুলা।

উৎসব আঙিনা জুড়ে বসে মাটির তৈজসপত্র, নকশী কাঁথা ও তাঁতের গামছা- শাড়ির মেলা। উৎসবে যোগ দেন স্থানীয় বাসিন্দাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অন্তত সহস্রাধীক মানুষ।

বাউল গান, শস্যের গীত ও পিঠা বানানোর আনন্দে মেতেছেন সকলে

গান পরিবেশন করেন টাঙ্গাইলের গীতিকবি কৃষক আক্কাছ আলী, স্থানীয় গাজীর গানের বয়াতি আওলাত গায়েন, বাউল শিল্পী আসলাম উদ্দিন বাচ্চু, মো. সাজাহান, সোনাজুদ্দিন, খোরশেদ বয়াতি। ধান ভানার গীত পরিবেশন করেন স্থানীয় প্রবীণ কৃষাণীরা।

প্রাকৃতিক কৃষি কেন্দ্রের সমন্বয়কারী দেলোয়ার জাহানের সভাপতিত্বে নবান্ন উৎসবের আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন প্রাকৃতিক কৃষি গবেষক ইফতেখার আলী, নিরাপদ কৃষি খাদ্য প্রচেষ্টা ফাউন্ডেশনের সচিব প্রফেসর রেজাউল করিম সিদ্দিকী, সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মাহেলা, কুমিল্লা থেকে আসা আইনজীবী বিলকিস আক্তার, শিক্ষক জেসমিন আক্তার, ব্যবসায়ী মাহফুজ শাহীন, মো. সায়েম, চট্টগ্রামের ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক শাহিন শিরীন, নারী উদ্যোক্তা ডালিমা আক্তার, স্থানীয় কৃষক কালাচাঁদ, ইউপি সদস্য মো: লেবু মিয়া প্রমুখ।

বিজ্ঞাপন

এ সময় স্থানীয় কৃষক কালাচাঁদ বলেন, ‘কৃষকদের জন্য এমন আয়োজনে অংশ নিতে পেরে খুব ভালো লাগছে। এ বছর ২ বিঘা জমিতে আমনের আবাদ করেছি। ফলন ভালো হয়েছে,বাজার ভালো থাকায় ভালো লাভ আশা করছি। আমার মতো এলাকার কৃষক- কৃষাণীদের নবান্নের আনন্দের ধুম লেগেছে।’

নবান্ন উৎসবের আয়োজক দেলোয়ার জাহান বলেন, ‘সাধারণত কার্তিকের শেষে ও অগ্রহায়ণের শুরুতে আমন ধান ঘরে তোলার সময় এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আমরা এবার ৭ম বারের মতো এ উৎসব করলাম। কৃষকদের পবিত্র শ্রম থেকে কেবল ফসলই উৎপন্ন হয় না, তা থেকে তৈরি হয় সংস্কৃতির উদার আবাহন। প্রজন্মের কাছে পৌঁছে যাক আমাদের নবান্ন উৎসবের রঙ। তারা জানুক কৃষকের উদয়াস্ত পরিশ্রমের কারণেই আমাদের পেটে ভাত জোটে। এ ধরনের উৎসব গ্রামে গ্রামে আরও বেশি হওয়া উচিত। কৃষক-কৃষাণীর সোনালী স্বপ্ন বাস্তবায়ন আর আনন্দ দিতেই নবান্ন উৎসবের আয়োজন করে আসছি।’

 

সারাবাংলা/এসডব্লিউ

নবান্ন উৎসব মানিকগঞ্জ

বিজ্ঞাপন

ব্রাজিলের বিনিয়োগ চায় ঢাকা
১৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:৩৩

আরো

সম্পর্কিত খবর