ঢামেকের ছাত্রী সেজে টাকা নেওয়ার অপচেষ্টায় তরুণী আটক
১৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:২০
ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (ঢামেক) থেকে সেখানকার ছাত্রী পরিচয় দানকারী পাপিয়া আক্তার স্বর্না (২২) নামের এক তরুণী আটক হয়েছেন।
স্বর্না এপ্রোন পরে ঢামেকের ছাত্রী সেজে নাক কান গলা বিভাগে ভর্তি থাকা এক রোগীকে ভালো চিকিৎসা সেবা এবং বড় মানের চিকিৎসককে দেখিয়ে দেবার নাম করে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন। সে সময় চিকিৎসকদের কাছে ধরা পড়ে আটক হন তিনি।
রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে ঢামেকের পুরাতন ভবনের তৃতীয় তলায় নাক কান গলা বিভাগে এই ঘটনা ঘটে। সে সময় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা স্বর্নাকে হাতেনাতে ধরে আনসার সদস্যদের কাছে সোপর্দ করেন।
ভুক্তভোগী রোগী কিশোরগঞ্জের নুরুল আলম গত বুধবারে (১৩ নভেম্বর) মুখে টিউমারজনিত সমস্যার কারণে নাক কান গলা বিভাগে ভর্তি হন। সঙ্গে ছিলেন তার স্ত্রী কল্পনা।
ওই ভুক্তভোগী রোগীর স্ত্রী কল্পনা বেগম জানান, তার স্বামীর ছোটভাই জামালের সঙ্গে প্রথমে পরিচয় হয় ওই তরুণীর এবং ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে তাদের রোগীর দ্রুত অপারেশন করিয়ে দেবে বলে জানান তিনি।
পরে জামালের মাধ্যমে বুধবারে ২৮ হাজার টাকা দেওয়া হয় ওই তরুণীকে। রোববার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে স্বর্নার কাছে আরও দুই হাজার টাকা পরিশোধ করার কথা ছিল তাদের। সেই টাকা নিতে গেলে ভুয়া ছাত্রী স্বর্ণাকে আটক করেন অন্যান্য চিকিৎসকরা।
আটক হওয়া পাপিয়া আক্তার স্বর্ণা সবসময় চিকিৎসকদের পোশাক পড়ে রোগীদের কাছে নিজেকে জুনিয়র চিকিৎসক ও ঢামেকের ছাত্রী পরিচয় দিয়ে বেড়াতেন।
সাংবাদিকদের পাপিয়া আক্তার স্বর্না বলেন, ‘চিকিৎসকদের (এপ্রোন) পোশাক পড়ে হাসপাতালে ঘোরাঘুরি আমার অন্যায় হয়েছে। আমি হাসপাতালে দুই একজন রোগীকে বলেছি, আমি জুনিয়র ডাক্তার। এছাড়া আমি ঢামেকে পড়াশুনা করি।’
রোগীর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বড় ডাক্তার দিয়ে রোগী নুর আলমের অপারেশন করিয়ে দেবার কথা বলে তাদের কাছ থেকে ২৮ হাজার টাকা নেওয়া হয়েছে। বাকি থাকা দুই হাজার টাকা নিতে গিয়ে আজকে লোকজন আমাকে ধরেছে। আমি আসলে টাকার বিনিময়ে তাদের উপকার করতে চেয়েছিলাম।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আমার স্বামী জসিম উদ্দিনকে নিয়ে বকশিবাজার হোসাইনী দালান এলাকায় থাকি। আমাদের বিয়ে হয়েছে এক বছর হয়েছে। আমার স্বামী একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। আমি ছয় মাসের অন্তঃসত্তা।’
স্বর্নার স্বামী জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের বাড়ি নরসিংদীর মনোহরদী এলাকায়। সেখানে একটি কলেজ থেকে স্বর্ণা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে। আমাদের দুইজনের বাড়ি পাশাপাশি। মোবাইলের মাধ্যমে স্বর্নার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয় আমার। উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পর স্বর্না ঢাকায় চলে আসে এবং ঢামেকে ভর্তি হয়েছে বলে আমাকে জানায়। বিয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত জানি স্বর্না ঢামেকে পড়ে। আজকে হাসপাতালে এসে জানতে পারি সে ঢামেকে পড়ে না।’
ঢামেকের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক জানান, ‘হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ভুয়া চিকিৎসক পরিচয় দানকারী স্বর্ণাকে আটক করে আমাদের কাছে হস্তান্তর করে। পরে তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। শাহবাগ থানা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করবে।’
সারাবাংলা/এসএসআর/এসডব্লিউ