Monday 18 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার প্রক্রিয়া বিতর্কিত: টিআইবি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
১৮ নভেম্বর ২০২৪ ১২:২৮

ঢাকা: রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্রিয়া বা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিতর্কিত বলে মন্তব্য করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। একইসঙ্গে আটটি জাতীয় দিবস পালন না করার সিদ্ধান্তও সমালোচিত বলে মন্তব্য করেছে সংস্থাটি।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির মাইডাস সেন্টারে ‘নতুন বাংলাদেশ’: কর্তৃত্ববাদী সরকার পতন-পরবর্তী ১০০ দিনের ওপর ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত মূল প্রবন্ধে এ কথা বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন প্রধান গবেষক শাহজাদা এম আকরাম। সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। প্রতিবেদন তৈরিতে যুক্ত ছিলেন মো. জুলকারনাইন, ফারহানা রহমান ও মো. মোস্তফা কামাল।

রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিনের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে মন্তব্যে বলা হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা বা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়া বিতর্কিত। আটটি জাতীয় দিবস পালন না করার সিদ্ধান্ত সমালোচিত। নিষিদ্ধ ঘোষণা সত্ত্বেও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছু রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার নিয়োগ ও রদবদলের বিষয়ে টিআইবির পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, কোথাও কোথাও পদত্যাগের জন্য বাধ্য করা হয়েছে। কিসের ভিত্তিতে বা চুক্তিতে নিয়োগ তা পরিষ্কার নয়, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ক্ষেত্রবিশেষে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড ও স্বচ্ছতার অনুপস্থিতি রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর চাপে গৃহীত সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার বা পরিবর্তন করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

নিয়োগ ও রদবদল সম্পর্কে বলা হয়েছে, নিয়োগে বিপরীতধর্মী সিদ্ধান্ত হয়েছে। অব্যাহতির সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতার ঘাটতি ও বিতর্ক রয়েছে। রাজনৈতিক পরিচয় যাচাই- বাছাইয়ের ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া বা না দেওয়ার চর্চা অব্যাহত রয়েছে।

জনপ্রশাসন সম্পর্কে মন্তব্যে টিআইবি বলছে, পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে কারও কারও বিরুদ্ধে অতীতে দুর্নীতি-অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকা, বিভাগীয় মামলায় শাস্তিপ্রাপ্ত, এবং আওয়ামী লীগের নানা অপকর্মের সহযোগী বলে অভিযোগ। চুক্তিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে অবসরপ্রাপ্তদের প্রাধান্য। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ নিয়ে গত সরকারের আমলে বঞ্চিত ও পদোন্নতি প্রত্যাশী কর্মকর্তাদের মধ্যে হতাশা পদোন্নতি পাওয়া বা পদবঞ্চিত হওয়ার ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসরণে ব্যর্থতার অভিযোগ রয়েছে।

জনপ্রশাসন সম্পর্কে আরও বলা হয়, জনপ্রশাসনে পেশাদারিত্বের ঘাটতি আছে। বিতর্কিত কার্যক্রমের কারণে গৃহীত ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে বৈষম্য। আমলাতন্ত্রে পতিত সরকারের দোসরদের প্রভাব অব্যাহত মর্মে অভিযোগ।

গণহত্যায় জড়িতদের বিচারপ্রক্রিয়া সম্পর্কে বলা হয়েছে, জুলাই-আগস্ট গণহত্যায় জড়িতদের বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ঢালাওভাবে আসামি হিসেবে নাম দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার বাণিজ্যের অভিযোগ; পূর্বশত্রুতা, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করা এবং চাঁদাবাজি ও হয়রানি করতে অনেককে আসামির করা হচ্ছে বলে অভিযোগ; আবার মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার নামে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া চাপের মুখে তদন্ত না করে মামলা নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন জনের গ্রেফতার নিয়ে লুকোচুরি- একাধিকবার একেক জায়গা থেকে গ্রেফতারের সংবাদ পাওয়া গেছে।

গণহত্যায় জড়িতদের বিচারপক্রিয়া সম্পর্কে আরও বলা হয়েছে, আইনি প্রক্রিয়া লঙ্ঘন করে গ্রেফতার ও রিমান্ডের পুরনো ধারা বিদ্যমান রয়েছে। মানবাধিকার লঙ্ঘন— গ্রেফতার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী আদালতে আক্রমণের শিকার; পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্রলীগ নেত্রী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে লাঞ্ছিত; সাবেক বিচারপতির ওপর আক্রমণ; আসামি পক্ষের আইনজীবীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধন না করে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে নিয়োগ পাওয়া বিচারক ও কৌঁসুলিদের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক/সমালোচনা; তাদের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

সারাবাংলা/ইএইচটি/ইআ

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর