না ফেরার দেশে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক
১৮ নভেম্বর ২০২৪ ১২:৫০
হৃদরোগের সমস্যা ও বার্ধক্যজনিত নানাবিধ জটিলতায় গতকাল (রবিবার, ১৭ নভেম্বর) রাজধানীর শংকরের ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি হন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক জাকারিয়া পিন্টু। সেখানে তাকে রাখা হয় সিসিইউতে (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র)। কিন্তু এক দিন না পেরোতেই, না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের এই অধিনায়ক।
এই কিংবদন্তি ফুটবলারের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন তাঁর দীর্ঘদিনের সতীর্থ ও বন্ধু প্রতাপ শংকর হাজরা। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনও (বাফুফে) তাঁর প্রয়ানে শোক প্রকাশ করেছে। আনুষ্ঠানিক শোক বার্তায় বাফুফে লিখেছে, ‘ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক, একজন গর্বিত মুক্তিযোদ্ধা জাকারিয়া পিন্টুর প্রয়াণে বাফুফে শোক প্রকাশ করছে। দেশের স্বাধীনতা ও ফুটবলে তাঁর অবদান রইবে অমলিন। সৃষ্টিকর্তা তাঁকে চির শান্তি দান করুন।’
জানা গেছে হৃদযন্ত্র, লিভার ও কিডনির সমস্যায় দীর্ঘদিন ধরেই ভুগছিলেন পিন্টু। রবিবার বুকের ব্যথায় লুটিয়ে পড়লে কিংবদন্তি এই ফুটবলারকে হাসপাতালে নিয়ে যান তার ছেলে তানভীর। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাসায় হঠাৎ করেই বাবা মাটিতে পড়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক জানিয়েছেন হৃদযন্ত্রে ব্যথা হওয়ায় এ অবস্থা হয়েছে। এছাড়া পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা যায়, লিভার ও কিডনিতে সমস্যা রয়েছে।’
১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ভারতে জাকারিয়া পিন্টুর নেতৃত্বে বিভিন্ন প্রদর্শনী ম্যাচ খেলে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তহবিল সংগ্রহ করে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। ম্যাচের টিকেট বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থ স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল তুলে দিয়েছিল মুক্তিযুদ্ধকালীন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের হাতে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ১৬টি ম্যাচে খেলে ১২টিতেই জিতেছিলেন জাকারিয়া পিন্টুরা।
স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম জাতীয় ফুটবল দলেও অধিনায়কের আর্মব্যান্ড উঠেছিল পিন্টুর হাতে। মালয়েশিয়ায় আয়োজিত ১৯৭৩ সালে মারদেকা কাপেও বাংলাদেশের দলনেতা ছিলেন তিনি। ডিফেন্ডার হিসেবেও আলাদা সুনাম ছিল তাঁর ফুটবল অঙ্গনে। ক্লাব পর্যায়ে দীর্ঘদিন নেতৃত্ব দিয়েছেন মোহামেডান স্পোর্টিংকে। ১৯৬১ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত খেলার পর ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটির কোচের দায়িত্বও পালন করেন পিন্টু। ১৯৪৩ সালের ১লা জানুয়ারি নওগাঁতে জন্মানো এই কিংবদন্তি ফুটবলা কোচিং প্রজ্ঞা দেখিয়েছেন জাতীয় দলের ডাগ আউটেও।
সারাবাংলা/জেটি