আরও ৫ খাত সংস্কারে কমিশন আসছে
১৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩:১২
ঢাকা: রাষ্ট্রসংস্কারের অংশ হিসেবে আরও পাঁচ খাতের জন্য সংস্কার কমিশন গঠন করতে যাচ্ছে সরকার। স্থানীয় সরকার, স্বাস্থ্য, নারী, গণমাধ্যম ও শ্রম খাত সংস্কারের জন্য নতুন পাঁচ কমিশনের রূপরেখা এরই মধ্যে চূড়ান্ত হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এরই মধ্যে পাঁচ কমিশন গঠনের জন্য সারসংক্ষেপ চূড়ান্ত করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সম্মতি মিললে এই কমিশনগুলো গঠনের প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
পাঁচ কমিশনের মধ্যে গণমাধ্যম কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সাংবাদিক কামাল আহমেদকে। এই কমিশনের সদস্য হিসেবে আছেন আরও ১০ জন। তারা হলেন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক গীতিআরা নাসরিন, ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, নোয়াবের সচিব আখতার হোসেন খান, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, যমুনা টেলিভিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম আহমেদ, সাংবাদিক জিমি আমির, দ্য ডেইলি স্টারের বগুড়া প্রতিনিধি মোস্তফা সবুজ, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের ডেপুটি এডিটর টিটু দত্ত গুপ্ত ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল মামুন।
শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হচ্ছে বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদকে। এই কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন— সাবেক সচিব ড. মাহফুজুল হক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন, টিইউসি চট্টগ্রাম কমিটির সভাপতি তপন দত্ত, লেবার কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম নাসিম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি ম কামরান টি রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘের সভাপতি চৌধুরী আশিকুল আলম, বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক সাকিল আখতার চৌধুরী, শ্রমিক আন্দোলন সংগঠক তাসলিমা আখতার ও একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
স্বাস্থ্য খাতের সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হচ্ছে ডায়াবেটিক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে আজাদ খানকে। এই কমিশনের অন্য সদস্যরা হলেন— বিএসএমএমইউয়ের অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাকির হোসেন, পথিকৃৎ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক লিয়াকত আলী, গাইনোকলজিস্ট অধ্যাপক ডা. সায়েবা আক্তার, শিশু স্নায়ুতন্ত্র বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. নায়লা জামান খান, সাবেক সচিব এম এম রেজা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক, আইসিডিডিআর,বির ডা. আজহারুল ইসলাম, স্কয়ার ক্যানসার সেন্টারের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হোসেন, গ্রিন লাইফ সেন্টার ফর রিউম্যাটিক কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চের অধ্যাপক ডা. সৈয়দ আতিকুল হক, আইসিডিডিআর,বির ডা. আহমেদ এহসানুর রহমান ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী উমায়ের আফিফ।
এদিকে নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হচ্ছে নারীপক্ষের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভিন হককে। এই কমিশনের সদস্য হিসেবে থাকছেন— ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের সিনিয়র ফেলো মাহীন সুলতান, ব্লাস্টের অবৈতনিক নির্বাহী পরিচালক সারা হোসেন, মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ফৌজিয়া করিম ফিরোজ, গার্মেন্টস আও শিল্প শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার, নারী স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ হালিদা হানুম আক্তার, নারী শ্রমিক কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুমাইয়া ইসলাম, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরুপা দেওয়ান, এডিবির সাবেক সিনিয়র সামাজিক উন্নয়ন উপদেষ্টা ফেরদৌসী সুলতানা ও শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশিতা জামান নিহা।
আর স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রধান করা হয়েছে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদকে। এই কমিশনের বাকি সদস্যরা হলেন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. ফেরদৌস আরফিনা ওসমান, সাবেক সচিব এ এম এম নাসির উদ্দিন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান, বিআইএসএসের পরিচালক ড. মাহফুজ কবির, নারী উদ্যোগ কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক মাসুদা খাতুন শেফালী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. তারিকুল ইসলাম ও একজন শিক্ষার্থী প্রতিনিধি।
প্রতিটি কমিশনই প্রজ্ঞাপন জারির পর অবিলম্বে কাজ শুরু করবে এবং সব মতামত বিবেচনায় নিয়ে ৯০ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন তৈরি করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে হস্তান্তর করবে।
এর আগেও রাষ্ট্রসংস্কারের অংশ হিসেবে আরও ছয়টি খাতের জন্য সংস্কার কমিশন গঠন করেছিল সরকার। সেগুলো হলো— নির্বাচনব্যবস্থা, পুলিশ, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন কমিশন, জনপ্রশাসন ও সংবিধান। এরই মধ্যে এসব সংস্কার কমিশন কাজ শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট খাতের অংশীজনদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করছে।
সারাবাংলা/টিআর