আনোয়ার খান মেডিকেলে চিকিৎসকদের বিক্ষোভ
১৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:১৬
ঢাকা: দীর্ঘদিনের বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিক্ষোভ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীরা।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এই বিক্ষোভ শুরু হয়।
প্রতিষ্ঠানটির মেডিকেল কর্মকর্তাদের অভিযোগ, তাদের তিন মাসের বেতন এখনো পরিশোধ করা হয়নি। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মিত ভাবে বেতন দেওয়া হয়ে থাকে।
তারা জানান, এ দিন সকাল ৯টার দিকে অক্টোবর মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার দাবি নিয়ে হাসপাতাল পরিচালক ডা. এনায়েত হোসেনের কক্ষে যান নার্সরা। এ সময় পরিচালক তাদের চাকরি থেকে বাদ দেওয়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ তাদের। এর পরিপ্রেক্ষিতে তারা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। পরে নার্সদের সঙ্গে চিকিৎসক ও ইন্টার্ন শিক্ষার্থীরাও এসে অংশ নেন।
আনোয়ার খান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক ইন্টার্ন চিকিৎসক বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমাদের বেতন দেয় না ঠিকমতো। সবারই দুই-তিন মাসের বেতন আটকিয়ে রাখে। আন্দোলনের মুখে আজকে নার্সদের বেতন এক মাস পর দিয়েছে। কিন্তু আমাদের দেয়নি।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানটিতে এক রকম স্বৈরশাসন চলে। হাসপাতালে কখনও আইসিইউ বা সিসিইউ বেড ফাঁকা থাকে না। কিন্তু বেতন কম দেয়। প্রতিটি বিভাগ-ওয়ার্ডে রোগী ভালোই থাকে, নিয়মিত সার্জারি হয়। কিন্তু তারা এখানে বেতন না দিয়ে সেটা অন্য জায়গায় ব্যবহার করে।’
প্রতিষ্ঠানটির আরেক আউটপেশেন্ট মেডিকেল কর্মকর্তা বলেন, ‘বকেয়া বেতন পরিশোধের দাবিতে আজকে সবাই বিক্ষোভ করেছে। প্রতি মাসেই দীর্ঘদিন পর বেতন দেয়। বেতন দিতে দিতে ২০ থেকে ২৫ তারিখ হয়ে যায়। কোনো কোনো মেডিকেল অফিসার এখনও আগস্ট মাসেরই বেতন পাননি।’
আন্দোলনের এক পর্যায়ে নার্সদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার বিষয়ে জানানো হয়।
তবে মেডিকেল অফিসার ও ইন্টার্ন চিকিৎসকসহ অন্যান্যরাও একই দাবিতে আন্দোলন শুরু করার পরে কর্তৃপক্ষ তাদেরও দ্রুতই বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছে বলে জানিয়েছেন একজন মেডিকেল কর্মকর্তা।
আন্দোলনে থাকা একজন নার্স বলেন, ‘সাত-আট মাস হয়ে যাচ্ছে আমাদের বেতন ঠিকমতো দেয় না। এ ছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, কিন্তু বেতনও বাড়ানো হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘আজকে পরিচালকের সঙ্গে দেখা করলে তিনি তালিকা করে আমাদের বের করে দেওয়ার হুমকি দেন। এক পর্যায়ে তুই-তুকারিও করেন। পরে আমরা সেখান থেকে বের হয়ে এসে রাস্তায় দাঁড়াই। এর মধ্যে সবাই একত্র হয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। পরে হাসপাতালের চেয়ারম্যান আসেন। তিনি বেতনসহ অন্যান্য সমস্যা দূর করতে এক মাসের মতো সময় নিয়েছেন। আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে পরিচালকের বিষয়েও সিদ্ধান্ত দিবেন বলে জানিয়েছেন।’
এ বিষয়ে কথা বলতে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের পরিচালক ডা. এনায়েত হোসেনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এছাড়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালটির চেয়ারম্যান এবং লক্ষ্মীপুর-১ আসনে একাদশ ও দ্বাদশ সংসদে আওয়ামী লীগের সদস্য আনোয়ার হোসেন খানের মুঠোফোনে কল দিলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সারাবাংলা/এসবি/এসডব্লিউ