রাবিতে ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৩০
১৮ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৪২
রাবি: আন্তঃবিভাগ ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগ ও মার্কেটিং বিভাগের মধ্যে দুই দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।
সোমবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল পৌনে পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামে এবং পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবনর সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে দুই বিভাগের অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এছাড়া দুই বিভাগের কয়েকজন শিক্ষকও আহত হয়েছে। সংঘর্ষের একপর্যায়ে মার্কেটিং বিভাগের সভাপতির গাড়ি ভাঙচুর করেছে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ‘খেলার প্রথমার্ধে এক গোলে এগিয়ে যায় মার্কেটিং বিভাগ। এরপর উগ্র আচরণ শুরু করতে শুরু করে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে দুই বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে শুরু করে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এতে মার্কেটিং বিভাগের ২৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহ নেওয়াজ, সাদমান হাবিব শুভ, মো. সবুজ, অরুণ ও ২৮ ব্যাচের শিক্ষার্থী সিফাত, আদিল, রায়হানসহ ৭ জন আহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে আরও জানা যায়, ‘খেলা শেষে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ইট, লাঠিসোটা নিয়ে মার্কেটিং বিভাগের সভাপতির গাড়ি ভাঙচুর করে, গাড়ি রক্ষা করতে গেলে মার্কেটিং বিভাগের সভাপতিকে পেছন থেকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে আইন বিভাগের এক শিক্ষার্থী। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হলে দুই বিভাগের প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে আইন বিভাগের অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমানের গায়ে ইট পড়লে তিনি গুরুতর আহত হন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে দুই পক্ষ প্রস্তুত হয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একাডেমিক ভবন ও সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনের সামনে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। পরে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে আইন বিভাগের শিক্ষার্থীরা পালিয়ে যায়। এরপর আইন বিভাগের অফিসে গিয়ে ব্যপক ভাঙচুর করে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘ এমন পরিস্থিতিতে ফুটবল টুর্নামেন্ট আপাতত স্থগিত। আজকে যেটা ঘটেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় সেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আগামীকাল আমরা দুই বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে বসবো। এই ঘটনায় কারা দায়ী, কার দায়িত্ব কতটুকু এর প্রত্যেকটা জিনিস আমরা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিচার বিশ্লেষণ করবো।’
সংঘর্ষের বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, ‘আমি ক্যাম্পাসের বাইরে রয়েছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিকেল থেকেই দু’পক্ষকে শান্ত করতে কাজ করছিল। কিন্তু উদ্ভুদ্ধ পরিস্থিতিতে পুলিশের আসতে দেরি হয়েছে। তারা সময়মতো এসে পৌছালে হয়ত এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হত না।’
আহতের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের প্রধান চিকিৎসক মাফরুহা সিদ্দিকী লিপি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত অন্তত ২৫ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছে। তবে আহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।’
এছাড়াও রাজশাহী মেডিকেল কলেজে অন্তত ৯ জন শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিয়েছে বলেও জানা গেছে।
সারাবাংলা/এসআর