Tuesday 03 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উত্তরা পাসপোর্ট কমপ্লেক্স: ৫ খাতে অতিরিক্ত ব্যয় প্রস্তাব নিয়ে প্রশ্ন

জোসনা জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:০০ | আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৩:৩২

উত্তরায় এই পাসপোর্ট পারসোনালাইজেশন কমপ্লেক্সের আদলেই আরও একটি বহুতল ভবন নির্মাণের প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: দেশে পাসপোর্টের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নতুন কুগলার মেশিন স্থাপনের মাধ্যমে পাসপোর্ট উৎপাদন বাড়ানো এবং কাঁচামাল সংরক্ষণ ও যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য রাজধানীর উত্তরায় বহুতল পাসপোর্ট পার্সোনালাইজেশন কমেপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ভবনটি নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্পও প্রণয়ন করা হয়েছে। তাতে অন্তত পাঁচ খাতে বাড়তি ব্যয় খুঁজে পেয়েছে পরিকল্পনা কমিশন। এসব খাতের ব্যয় কমিয়ে আনতে বলা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের অধীন ‘পসপোর্ট পারসোনালাইজেশন কমপ্লেক্স-২, উত্তরায় বহুতল ভবন নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশনে। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৭৮ কোটি ১১ লাখ টাকা।

পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবটি নিয়ে গত ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হয় প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভা। এতে পিইসি সভাপতিত্ব করেন ভৌত অবকাঠামো বিভাগের সদস্য (সচিব) সোলেমান খান। ওই সভাতেই পাঁচ খাতে বাড়তি ব্যয়ের বিষয়টি উঠে আসে।

পিইসি সভা সূত্র বলছে, সভায় পরিকল্পনা কমিশনের ভৌত অবকাঠামো বিভাগের ভৌত পরিকল্পনা অনুবিভাগের উইংপ্রধান (অতিরিক্ত সচিব) কবির আহামদ পাঁচ খাতের ব্যয় সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেন। এগুলো হলো— তিনটি লিফটের জন্য চার লাখ ৬৪ হাজার ৩২ হাজার টাকা, অফিস ভবনের জন্য আসবাবপত্র বাবদ ৬৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা, অন্যান্য স্থাপনা কোডে এক কোটি ৬৩ লাখ ৬৯ হাজার টাকা, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন বাবদ ১৫ লাখ টাকা এবং পরিচালকের দফতরের জন্য মোট ৩০ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। এর বাইরেও কিছু অঙ্গে অতিরিক্ত ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

সভায় এসব অঙ্গের ব্যয় প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। পরে আলোচনায় তিনটি লিফট, অফিস ভবনের জন্য আসবাবপত্র, অন্যান্য স্থাপনা কোড, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও উদ্বোধন এবং প্রকল্প পরিচালকের দফতর— সুনির্দিষ্ট এই পাঁচটি খাতসহ আরও কয়েকটি অঙ্গের ব্যয় যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনার বিষয়ে সভায় সবাই একমত পোষণ করেন।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর বলছে, ২০২০ সালে উন্নত প্রযুক্তি ও উচ্চ নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যের ই-পাসপোর্ট চালু করা হয় দেশে। বর্তমানে ৭১টি পাসপোর্ট অফিস থেকে ই-পাসপোর্ট দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বিদেশি ৮০টি মিশনেও পর্যায়ক্রমে ই-পাসপোর্ট চালু করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কার্যক্রমের (পাসপোর্ট মুদ্রণ, কুগলার মেশিন স্থাপন, কাঁচামাল সংরক্ষণ ইত্যাদি) জন্যই উত্তরা দিয়াবাড়িতে ই-পাসপোর্ট পারসোনালাইজেশন কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে। তবে পাসপোর্টের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় নতুন কুগলার মেশিন স্থাপনের মাধ্যমে আরও বেশি পাসপোর্ট তৈরি এবং এর সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমের জন্য এখন দ্বিতীয় একটি বহুতল কমপ্লেক্স প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন

পাসপোর্ট অধিদফতর বলছে, বেশি বেশি পাসপোর্ট তৈরি ছাড়াও জনবলের জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্র এবং বিভিন্ন কাজের প্রয়োজনে মিলনায়তনও প্রয়োজন। আর সেই চাহিদা পূরণ করবে দ্বিতীয় পারসোনালাইজেশন কমপ্লেক্স। ২০ কাঠা জমিতে দুটি বেজমেন্টসহ ১০ তলা ভিতে প্রায় ৩১ মিটার উচ্চতার ছয় তলা ভবনের প্রস্তাব করা হয়েছে এ জন্য।

সভায় পাসপোর্ট অধিদফতরের পক্ষ থেকে বলা হয়, নকশা অনুযায়ী ভবনের মোট আয়তন হবে ৮০ হাজার ১০ বর্গফুট। এর মধ্যে ১০ হাজার ২৭৫ বর্গফুট আয়তনের প্রথম বেজমেন্টে থাকবে গাড়ি পার্কিং, ড্রাইভার ওয়েটিং রুম, ওয়াটার রিজার্ভার ও ফায়ার ট্যাংক। একই আয়তনের দ্বিতীয় বেজমেন্টেও থাকবে গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা।

বহুতল ভবনটির নিচতলার আয়তন হবে ৯ হাজার ৮৫০ বর্গফুট। এখানে থাকবে তিনটি ভিআইপি গাড়ি পার্কিং, রিসিপশন, ভিআইপি ওয়েটিং এরিয়া, লবি, সিকিউরিটি মনিটরিং রুম, ফায়ার ট্যাংক, তিনটি পুরুষ ওয়াশরুম ও দুটি নারী ওয়াশ রুম। ওপরের তলাগুলোতে থাকবে পাসপোর্ট তৈরির বিভিন্ন যন্ত্রপাতি এবং পাসপোর্ট অধিদফতরের জনবলের প্রশিক্ষণসহ অন্যান্য কার্যক্রমের ব্যবস্থা।

পিইসি সভায় অর্থ বিভাগের প্রতিনিধি বলেন, প্রকল্পের মোট জনবল কাঠামোতে প্রকল্প পরিচালকসহ মোট চারজন রাখা হয়েছে। এ ছাড়া একজন হিসাব রক্ষক, একজন অফিস সহকারী ও একজন গাড়িচালক আউটসোর্সিংয়ে ধরা আছে। এ প্রসঙ্গে পাসপোর্ট অধিদফতরের প্রতিনিধি বলেন, জনবল কমিটিতে সুপারিশ নেওয়ার জন্য প্রস্তাব এরই মধ্যে অর্থ বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সুপারিশ পাওয়া গেলে তা পুর্নগঠিত ডিপিপিতে সংযুক্ত করা হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের একাধিক কর্মকর্তা সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, পিইসি সভায় যেসব বিষয় আলোচনা করা হয়েছে সেগুলো আমলে নিয়ে প্রকল্প প্রস্তাব পুনর্গঠন করা হলে সেটি কমিশন একনেকে পাঠানোর জন্য অনুমোদন দিতে পারে।

সারাবাংলা/জেজে/টিআর

ই-পাসপোর্ট পরিকল্পনা কমিশন পাসপোর্ট অধিদফতর পাসপোর্ট কমপ্লেক্স

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর