Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইবিতে ফের র‍্যাগিং: তদন্ত কমিটি গঠন, মামলার প্রস্তুতি


১৯ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:০১

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন হল। সারাবাংলা ফাইল ছবি

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) মধ্যরাতে জুনিয়রদের র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে ৯ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের ৩৩০ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। র‌্যাগিং চলাকালেই বিষয়টি জানাজানি হলে বাকিরা পাঁচ শিক্ষার্থীকে হাতেনাতে ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহায়তায় পুলিশে সোপর্দ করেছেন।

এই ঘটনায় মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) তদন্ত কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। কমিটি আগামী রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে জানিয়েছেন হল প্রভোস্ট ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন।

বিজ্ঞাপন

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর ড. ফখরুল ইসলাম, হলের আবাসিক শিক্ষক রাসুল-ই-ইলাহী, সদস্য সচিব হলের সহকারী রেজিস্ট্রার জিল্লুর রহমান।

এদিকে ঘটনার প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে মঙ্গলবার বিকেল ৫টায় নিশ্চিত করেছেন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ ফরিদ উদ্দীন। তিনি জানান, পাঁচজন এখনও থানায় আছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্ত সকলের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

অভিযুক্তরা হলেন— বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সাব্বির হোসেন, শেহান শরীফ শেখ, শরিফুল ইসলাম লিমন, কান্ত বড়ুয়া, জিহাদ, শফিউল্লাহ, তরিকুল ও মুকুল এবং ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের সঞ্চয় বড়ুয়া। এদের মধ্যে সাব্বির, শেহান, লিমন, কান্ত ও সঞ্জয়কে পুলিশে সোপর্দ করা হয়েছে।

ভুক্তেভোগী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাদের ওই হলের ৩৩০ নম্বর কক্ষে ডেকে নেন অভিযুক্ত শেহান শরীফ শেখ। সাইম, রাকিবুল, শামীম, রাকিব, হামজা, তারেক, রিশান, তানভীর ও মামুনসহ ১২ থেকে ১৩ জন ওই কক্ষে যান। তারা সবাই ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। একপর্যায়ে শামীম, সাইম, রাকিবুল ও হামজাকে ওই কক্ষে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আর ওই চারজনের ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালান অভিযুক্ত সাব্বির ও সঞ্চয়।

বিজ্ঞাপন

র‌্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থীরা বলেন, সেখানে তাদের পাঁচ রকমের হাসি দেওয়া, কল দিয়ে বাজে ভাষা বলা ও নাচতে বাধ্য করা হয়। পরে হলের সিনিয়র শিক্ষার্থী হাসানুল বান্না উপস্থিত হয়ে তাদেরকে হাতেনাতে ধরেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এর আগে গত শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাতেও ১১টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা ধরে তাদের ১২ জন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাসের পাশের সাদী অ্যান্ড হাদী ছাত্রাবাসে নিয়ে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন একই অভিযুক্তরা। এ সময় কয়েকজনকে পর্ন সিনেমার তারকাদের নাম জিজ্ঞাসা করা হয়, পর্ন তারকা সেজে অভিনয় এবং অশ্লীল কবিতা পাঠ করতে বাধ্য করা হয়।

ভুক্তভোগীরা জানান, আমরা ক্যাম্পাসে আসছি ১৭ দিন হয়েছে। তারা আমাদের ১৭ দিনে কি পরিমাণ যে মানসিক নির্যাতন করছে ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। সেখানে আমাদের পাঁচ রকমের হাসি দেয়া, কল দিয়ে বাজে ভাষা বলা ও নাচতে বাধ্য করা হয়। এর আগে গত ১৬ নভেম্বর রাত এগারোটা থেকে সাড়ে বারোটা পর্যন্ত আমাদের বারোজন শিক্ষার্থীকে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী সাদী অ্যান্ড হাদী ছাত্রাবাসে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন অভিযুক্তরা।

এ সময় কয়েকজনকে পর্ন সিনেমার তারকাদের নাম জিজ্ঞাসা করা হয়, পর্ন তারকা সেজে অভিনয় এবং অশ্লীল কবিতা পাঠ করতে বাধ্য করা হয়। না গেলে মারার হুমকিও দিত। এমন এমন কথা বলত, যেগুলো এখন বলতেও পারছি না। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

লালন শাহ প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. আখতার হোসেন বলেন, আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আমি নিজেই এর আহ্বায়ক। আগামী রবিবারের মধ্যে আমরা সুপারিশসহ প্রতিবেদন দাখিল করব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহীনুজ্জামান বলেন, যেহেতু হলের বিষয়। হল বডি তদন্তের পর আমাদের প্রতিবেদন ও সুপারিশ পেশ করবে। তারপর আমরা যেখানে যা করার করব। আমরা সংশ্লিষ্ট অনেকের সঙ্গেই বসেছি। এই ব্যাপারটা আমরা সিরিয়াসলি নিচ্ছি। কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না।

আরও পড়ুন: ইবিতে ফের র‍্যাগিং, পর্ন তারকা সাজিয়ে অভিনয় করানোর অভিযোগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) তদন্ত কমিটি গঠন শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিং

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর