ফ্যাসিবাদকে সমর্থন দেওয়া সাংবাদিকদের সরিয়ে দিতে হবে: সমন্বয়ক তাহমিদ
২০ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:২৮
ঢাকা: গত ১৫ বছর ধরে ফ্যাসিবাদ সরকারকে সমর্থন দিয়ে আসা সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং তাদেরকে দায়িত্বের জায়গা থেকে সরিয়ে দিতে হবে বলে দাবি তুলেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক তাহমিদ মুনতাসীর চৌধুরী।
তিনি বলেন, যারা দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সংবাদমাধ্যমকে ফ্যাসিবাদের দোসর বানিয়ে রেখেছে, যারা সংবাদ ‘এডিট’ করে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে প্রচার করেছে তারা এখনও স্ব স্ব দায়িত্বে বহাল তবিয়ত। তাদের সরিয়ে দিতে হবে।
বুধবার (২০ নভেম্বর) রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘জুলাই গণহত্যায় গণমাধ্যমের ভূমিকা: জবাবদিহিতা ও সংস্কার’ শীর্ষক আলোচনা সভায় নিজের বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তাহমিদ মুনতাসীর চৌধুরী বলেন, ‘আমরা এটা স্বীকার করি গত ১৫ বছরে সাংবাদিকতাটা স্বাধীন ছিল না। এখন সংবাদপত্র যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে সেটা নিয়ে আমাদের কাজ করা উচিত। এবং একইসঙ্গে গত ১৫ বছরে এই সংবাদমাধ্যমগুলোকে যারা ফ্যাসিবাদের দোসর বানিয়ে রেখেছিল, যারা এর জন্য দায়ী ছিল এবং আমরা দেখেছি যে এখনও তারা বহাল তবিয়তে বসে আছে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে, তাদেরকে সরাতে হবে।’
‘ফ্যাসিবাদ সরকার পতনের ১০০ দিন পালন করছি আমরা। কিন্তু যেই ফ্যাসিস্ট সাংবাদিকরা সেই ভাবে সংবাদ প্রকাশ করত, যারা আমাদেরকে সন্ত্রাসী আখ্যা দিতো, মিডিয়াতে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করত যে এটা তৃতীয় পক্ষের আন্দোলন, এটা তৃতীয় শক্তি আন্দোলন, বিচ্ছিন্নতাবাদী, এরা সন্ত্রাসী সেই সাংবাদিকরা কিন্তু এখনও নিজ নিজ জায়গায় বসে আছে। তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না এবং নেওয়া হবে না এটা আমরা জানতে চাই’- যোগ করেছেন তিনি।
আগামীতে বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতাতে যেন কোনো বাঁধা না থাকে সে বিষয়ে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি, ‘সাংবাদিকদের বা সংবাদ মাধ্যমের একটা আদর্শীক বায়াস্টনেস থাকবে, এটা স্বাভাবিক। আন্তর্জাতিকভাবেও তা দেখা যায়। কিন্তু সেটা থাকার পরেও সত্য এবং বস্তুনিষ্ঠ যে সাংবাদিকতা সেই সাংবাদিকতাটা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। এটা যেন না হয় যে নতুন সরকারের অধিনে বা নতুন সরকার এলে সাংবাদিকদের আবারও ভয় দেখিয়ে যেন আবদ্ধ করা না হয়।’
বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) কখনো বাংলাদেশের মানুষের কথা বলে না অভিযোগ তুলেছেন তিনি। নতুন সরকার গঠনের পর সেই বিটিভিতে কি কি পরিবর্তন করা হয়েছে সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাহমিদ মুনতাসীর চৌধুরী। তিনি বলেছেন, ‘বিটিভি বা বাসস হচ্ছে স্বায়ত্তশাসিত সংবাদমাধ্যম। কিন্তু বিটিভি কেন সরকারের দাসত্ব করবে? বিটিভি কেন বাংলাদেশের মানুষের কথা শুনবে না? গত ১৫ বছর বিটিভিকে দেখেছি জনগনের পক্ষে কোনো নিউজ প্রকাশ করেনি। আমার একটা প্রশ্ন, নতুন সরকারের এই ১০০ দিনে বিটিভিতে আমরা কি পরিবর্তন আনতে পেরেছি?’
একই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানে অনেক সাংবাদিক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন, আমি তাদের সেলুট জানাই। কিন্তু কোনো কোনো গণমাধ্যম আন্দোলনরত ছাত্র-জনতাকে ‘সন্ত্রাসী’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন।
গত ১৬ বছরে কে কিভাবে সাংবাদিকতা করেছেন তা দেখা হবে। কোন কোন গণমাধ্যমে ‘ফ্যাসিবাদী বয়ান’ দিয়েছেন তা চিহ্নিত করা হবে বলেছেন তিনি।
সারাবাংলা/এসএইচএস/ইআ