Wednesday 20 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৬ দাবিতে বৈষম্যবিরোধী টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের মানববন্ধন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২০ নভেম্বর ২০২৪ ১৮:১০

বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে বৈষম্যবিরোধী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদের মানববন্ধন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: স্বতন্ত্র পরিদফতর গঠন ও ডিপ্লোমাধারীদের ১০ম গ্রেড পদমর্যাদা প্রদানসহ ছয় দাবিতে মানববন্ধন করেছে বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদ।

বুধবার (২০ নভেম্বর) সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ একযোগে রাজধানীর ১৪টি হাসপাতালে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

পরিষদ জানিয়েছে, ছয় দফা দাবি আদায়ের ধারাবাহিক কর্মসূচি হিসেবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহিদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিন অ্যান্ড রেফারেল সেন্টার, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, ঢাকা ডেন্টাল কলেজ, বাংলাদেশ শিশু হাসপাতাল ও ইনস্টিটিউট, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল, জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কিডনি ডিজিজেসে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

পরিষদের পক্ষ থেকে একই দিনে ঢাকার ১৪ প্রতিষ্ঠানের সামনে আয়োজন করা হয় মানববন্ধন, যার মধ্যে ছিল বিএসএমএমইউও। ছবি: সংগৃহীত

স্বাস্থ্যসেবায় গুরুত্বপূর্ণ পেশাজীবীদের প্রতি দীর্ঘ দিন ধরে বৈষম্যমূলক আচরণ করা হচ্ছে উল্লেখ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে ছয় দফা দাবি তুলে ধরে বৈষম্যবিরোধী জাতীয় মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদ। দাবিগুলো হলো—

বিজ্ঞাপন
  • স্বতন্ত্র পরিদফতর গঠন করতে হবে;
  • ডিপ্লোমাধারীদের ১০ম গ্রেড (দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড) পদমর্যাদা দিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী আনুপাতিক হারে পদ সৃজন করে দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে, পাশাপাশি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২০১৩ সালে স্থগিত করা নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করতে হবে;
  • গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্টদের জন্য নবম গ্রেডের পদ তৈরি করে চাকরিজীবীদের আনুপাতিক হারে পদোন্নতির নিয়ম বহাল রেখে স্ট্যান্ডার্ড সেটআপ, নিয়োগবিধি ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা আইনে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে;
  • ঢাকা ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিকে (আইএইচটি) ‘বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব মেডিকেল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ নামকরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে হবে এবং এই বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব আইএইচটির জন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট শিক্ষকদের স্বতন্ত্র ক্যারিয়ার প্ল্যান গঠন করে বিদ্যমান নিয়োগবিধি ও অসংগতিপূর্ণ গ্রেড সংশোধন করতে হবে;
  • মেডিকেল টেকনোলজি কাউন্সিল গঠনের মাধ্যমে পেশাদার লাইসেন্স প্রদান, ডিপ্লোমা মেডিকেল এডুকেশন বোর্ড গঠন ও সার্ভিস নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে; এবং
  • বি ফার্মসহ সব অনুষদের বিএসসি ও এমএসসি কোর্স চালুর পাশপাশি স্কলারশিপসহ প্রশিক্ষণ ভাতা চালু করতে হবে।

এর আগে সংগঠনটির সভাপতি আব্দুস সামাদ ও মহাসচিব মো. রিপন শিকদার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি জানান।

সংগঠনটি জানায়, স্বাস্থ্যসেবাকে গণমুখী করতে হলে স্বাস্থ্যসেবায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট সব জনবলের অধিকার সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন। স্বাস্থ্যসেবা একটি টিমওয়ার্ক, যার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ তত্ত্বাবধানে চিকিৎসক ও নার্সদের পাশাপাশি মেডিকেল টেকনোলজিস্টরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন। রোগীদের সেবাদান কার্যক্রমের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো রোগ নির্ণয়, যার পুরোধা বলা হয় মেডিকেল টেকনোলজিস্টদেরই।

বিজ্ঞাপন

স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে সেবা পরিদফতর নার্সিং ব্যবস্থাপনা ও সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে গঠিত হয় ১৯৭৭ সালে। কাজের পরিধি বৃদ্ধি ও জনবলের আকার বৃদ্ধির সাথে সামঞ্জস্যতা রেখে ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর পরিদফতরকে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদফতর হিসেবে উন্নীত করা হয়।

জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের সামনে মানববন্ধন। ছবি: সংগৃহীত

টেকনোলজিস্ট ও ফার্মাসিস্ট পরিষদ বলছে, ৪০ হাজারেরও বেশি পেশাজীবী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ও ডিপ্লোমা ফার্মাসিস্টদের কোনো স্বতন্ত্র পরিদফতর বা উইং নেই। স্বাস্থ্য সেবা ও শিক্ষা উভয় বিভাগের অধীন মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষা ও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পেশাজীবীদের পেশাগত লক্ষ্য বাস্তবায়ন, বদলি, পদোন্নতি, উন্নত শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বৃদ্ধি ও সমন্বয়ের জন্য কোনো উইং, পরিদফতর বা অধিদফতর নেই।

তারা বলেন, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদফতরের অধীনে পরিচালিত দেশে সরকারি পর্যায়ে ২৩টি ও বেসরকারি পর্যায়ে ৬৫টিরও বেশি আইএইচটিতে আটটি অনুষদে ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল টেকনোলজি ও ফার্মেসি পাস করা ডিগ্রিধারীদের চাকরি সংক্রান্ত সার্বিক বিষয়, তাদের বদলি-পদোন্নতি সংক্রান্ত বিষয় দেখভাল করার জন্য স্বতন্ত্র কোনো ব্যবস্থা নেই। এই ৪০ হাজারেরও বেশি জনবলের পরিকল্পনামাফিক নিয়ন্ত্রণের জন্য কোনো দফতরের ব্যবস্থা না থাকা দুঃখজনক বিষয়।

তারা আরও বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছরেরও বেশি সময় প্রশাসনিক জটিলতায় মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ থাকায় সরকারি চাকরিতে কর্মরত মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সংখ্যা মাত্র চার হাজার ১০৬, যেখানে পদ পাঁচ হাজার ৯৭৫। অথচ চিকিৎসক ও নার্সের বিদ্যমান সংখ্যার অনুপাতে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের সংখ্যা হওয়ার কথা ছিল ৮০ হাজারের বেশি।

নিয়োগ জটিলতা শেষে ২০২৩ সালের ১ আগস্ট নবসৃষ্ট পদে ৮৮৯ জনকে নিয়োগ দেয় স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। একে প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য উল্লেখ করে তারা বলেন, দীর্ঘদিন নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় এই ডিগ্রিধারী বড় একটি অংশের সরকারি চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমাই পার হয়ে গেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষায় ডিপ্লোমার পাশাপাশি বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মেডিকেল টেকনোলজি বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা চালুর ২০ বছর পেরিয়ে গেলেও গ্র্যাজুয়েটদের জন্য কোনো প্রকার পদ তৈরি করা হয়নি। ২০১৪ সালে স্বাস্থ্য অধিদফতরে গঠিত একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি মেডিকেল টেকনোলজি শিক্ষায় সনদপ্রাপ্ত গ্র্যাজুয়েট মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের জন্য একাডেমিক, ক্লিনিক্যাল ও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ শাখায় উপজেলা থেকে বিভাগীয় হাসপাতাল, ইনস্টিটিউট ও প্রশাসনিক দফতরগুলোতে পদ সৃজন সংক্রান্ত অর্গানোগ্রাম প্রস্তুত ও চূড়ান্ত সুপারিশ করলেও বলপ্রয়োগের মাধ্যমে তা আটকে আছে বছরের পর বছর।

সারাবাংলা/এসবি/টিআর

পরিদফতর দাবি ফার্মাসিস্ট বৈষম্যবিরোধী পরিষদ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট

বিজ্ঞাপন

জয়ার ছবি ইফি উৎসবে
২০ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:০৫

আরো

সম্পর্কিত খবর