বিপ্লবী সরকারের রূপরেখা পেশ করেছে যুক্ত ফোরাম
২১ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:৪০
ঢাকা: যুক্ত ফোরাম ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে রাষ্ট্রপতি করার প্রস্তাব দিয়ে বিপ্লবী সরকার গঠনের রূপরেখা পেশ করেছেন। দলটির নেতৃবৃন্দ বলেছেন, আগামী ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে বিপ্লবী সরকার গঠন করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর রুনি মিলনায়তনে যুক্ত ফোরাম লিখিত বক্তব্যে এই দাবি করেন।
বিপ্লবী সরকারের পেশকৃত রূপরেখায় বলা হয়েছে, বিপ্লবী সরকারের রাষ্ট্রপতি হবেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গঠনকৃত বিপ্লবী জাতীয় সরকার শপথ নিবেন জাতীয় শহিদ মিনারে জুলাই-আগস্টের শহিদ পরিবারের সদস্যের কাছে। তাদের বৈধতার ম্যান্ডেট হবে ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতা। এই সরকারে সশস্ত্র বাহিনীসহ সকল স্টেক হোল্ডার থাকবেন। ফ্যাসিবাদী সংবিধান রহিত করে নতুন সংবিধানের ব্যবস্থা করবেন তারা।
রূপরেখায় আরও বলা হয়, এই সরকার জাতীয় ঐক্য তৈরি করবেন। রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশকে টেকসই গণতান্ত্রিক ধারায় ফেরাবেন।
রূপরেখায় গণফোরাম বলেছে,
- নতুন রাজনৈতিক শক্তির বিকাশে হবে উৎসাহদাতা।
- প্রতিটি মন্ত্রণালয় ভিত্তিক জাতীয় সমন্বয় কমিটি গঠন করবেন।
- প্রতি সপ্তাহে উপদেষ্টারা তাদের কাজের অগ্রিগতির প্রতিবেদন তুলে ধরবেন জাতির কাছে।
- রাষ্ট্রপতি তার কাজের অগ্রিগতির প্রতিবেদন তুলে ধরবেন প্রতি মাসে একবার।
- স্থানীয় সরকারের ক্ষমতা স্থানীয় জনগণের ওপর ন্যাস্ত করবেন, আমলাদের ওপর নয়।
- বিপ্লবী জাতীয় সরকারে মেয়াদ সর্বোচ্চ ও বছর হয়ে এসময়ে তারা নাগরিক জীবনে স্বস্তি ও নিয়াপত্তা বিধান করবেন।
- জাতীয় সংসদের মেয়াদ হবে ৪ বছর।
- ৩ বছর পর পর হবে স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে। তবে কোনো দলীয় প্রতীক থাকবে না।
- জুলাই-আগাস্ট গণহত্যাসহ দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের সকল খুন, ওম বিচারসহ ফ্যাসিবাদী শোষণ ব্যাবস্থার শেকড় তুলে ফেলবে।
- একটি সম্মানজনক নাগরিক জীবন এবং ন্যায় ভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যাবস্থা দিয়ে যাবেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভেতরেই গদি বসিয়েছে ফ্যাসিবাদীরা। এ যেন বিপ্লবের বসতে ফ্যাসিবাদের বসবাস। তাদের সড়াতে হবে, তা-না হলে রাষ্ট্র সংস্কার তো দূরের কথা সামান্য পরিবর্তন আনাও অসম্ভব চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে দাঁড়াবে।
প্রধান উপদেষ্টাকে বিশ্ব ব্রান্ড উল্লেখ করে বলা হয়, প্রফেসর ড. ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকার কতিপয় বয়সের ভারে ন্যুজ প্রবীণ ব্যক্তিদের ক্লাবে পরিণত হয়েছে। যা বিপ্লবোত্তর সময়ে সরকারের ১০০ দিন পার করেও জাতির প্রত্যাশিত ফলাফল দৃশ্যমান করতে পারেন নি। এর মূল কারণ স্টেক হোল্ডারদের নিয়ে বিপ্লবোত্তর জাতীয় সরকার গঠন না করা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে বিপ্লবীদের পরিবর্তে একটি নির্দিষ্ট বিভাগের আধিপত্য।
ড. ইউনূসের নেতৃত্বধীন সরকার সর্ম্পকে আপনারা ব্যর্থতা লিখিত বক্তব্যে তুলে ধরেছেন। বিপ্লবী সরকারের রাষ্ট্রপতি ড. ইউনূস হলে কতটুকু সফল হবে বলে আপনারা মনে করেন? প্রশ্নের জবাবে চাষী মামুন বলেন, ‘অবশ্যই দেশে স্থিতিশীল অবস্থা আসব, দেশের উন্নয়ন হবে। এতে কোন সন্দেহ নেই। বর্তমানে ড. ইউনূস জুলুমের শিকার। ফলে রাষ্ট্রপরিচালনায় বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্রদের নেতৃত্বকে সরাসরি বিতর্কিত করে প্রতিপক্ষের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। বিপ্লব অর্জনে সাময়িক ঐক্য হলেও বিপ্লব বাঁচাতে এখন আমাদের ন্যূনতম ঐক্যের আগ্রহ নেই। সেই চিরাচরিত ক্ষমতার গদির জন্যই রাজনৈতিক দলগুলো লেগে পরেছে। তাদের আচরণ এবং কর্মকাণ্ড জনগণের আকাঙ্খা এবং বাংলাদেশের টেকসই অগ্রযাত্রায় যেন ফিকে হয়ে যাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চাষি মামুন। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর কলিমুল্লাহ, আবুল কাশেম মজুমদার ও সাংবাদিক নেতা জাকির হোসেন প্রমুখ।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/এইচআই