আলু-পেঁয়াজ-মাছের দাম বাড়তি, মাংস-মুরগি স্থিতিশীল
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৪৫
ঢাকা: দেশের বাজারে নিত্যপণ্য, সবজি, ডিম ও মাছ-মাংসের দাম মাঝে-মধ্যে ওঠানামা করলেও দীর্ঘদিন ধরেই এগুলোর দর ঊর্ধ্বমুখী। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারগুলোতে আলু, পেঁয়াজ ও মাছের দাম বেড়েছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে ডিম, মুরগি ও মাংসের বাজার।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, আলুর দাম প্রতি কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। গত সপ্তাহে দুই দফা বেড়ে হয়েছে প্রতি কেজি ৮০ টাকা, যা আগে ছিল ৭০ টাকা। গত অক্টোবরে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৬০ টাকা। আলুর সঙ্গে কিছু সবজির দামও কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়তি দেখা গেছে। তবে স্থিতিশীল রয়েছে ডিম ও মুরগির দাম।
আলু বিক্রেতারা জানান, গত শুক্রবারও বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি আলু ৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, যা মঙ্গল-বুধবার এসে ৫ টাকা এবং গতকাল আরও ৫ টাকা বেড়েছে।
জানা যায়, গত সপ্তাহ পাইকারিতে প্রতি কেজি আলুর দাম ছিল ৫৮ থেকে ৬৪ টাকা। এখন পাইকারিতেই প্রতি কেজি আলু ৬৮ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে আলু এখনো ৭০ থেকে ৭৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ভারত থেকে আলু আসছে, তারপরও আলুর সংকট দেখা যায়। ভারতীয় আলু কোনো কোনো দোকানে দেশি নতুন আলু বলে বিক্রি হচ্ছে। এগুলোর দাম কেজিপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ টাকা।
আলু ব্যবসায়ীরা জানান, আলুর মৌসুম এখন একবারে শেষদিকে। প্রতিবছর এ সময় দাম বাড়ে। হিমাগারে আলুর সংকট এবং গত কয়েকদিনে হিমাগারগুলোতে আলুর দাম কেজিপ্রতি ৭ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বাজারে। নতুন আলু না আসা পর্যন্ত দাম কমবে না বলে মনে করছেন তারা।
এদিকে, আলুর সঙ্গে কিছু কিছু সবজির দামও কেজিপ্রতি ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়তি দেখা গেছে। এর মধ্যে টমেটো-গাজর বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা দরে। বাড়তি আছে বরবটি, করলা, শিমের মতো আরও কিছু সবজি, যা ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পটল, ঢ্যাঁড়স, পেপে কেনা যাচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে। এছাড়া কলমিশাক, লালশাক, ডাটাশাক, পুঁইশাকসহ বিভিন্ন শাকের দামও ৫ টাকা করে (মুঠিতে) বেড়েছে।
ক্রেতারা বলছেন, এক সপ্তাহ আগেই বেগুন ও বরবটির দাম ২০ টাকা কম ছিল। এখন ঝিঙা, ধুন্দুল, চিচিঙ্গা ৮০ থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এগুলো কিছুটা কমেছিল, এখন আবার বাড়ছে। তবে বড় দুয়েকটি বাজারে এসব সবজির দাম কিছুটা কম।
মসলা জাতীয় পণ্যের মধ্যে পেঁয়াজের দাম বেশি। খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১৩০ থেকে ১৫০ টাকায় ও আমদানি করা পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া আদা ও রসুনের দাম আগের মতোই রয়েছে।
তবে বাজারে স্থিতিশীল আছে মুরগি ও ডিমের দাম। ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও সোনালি মুরগি কেজি ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি দেশি মুরগি প্রতি কেজি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস বাজার ভেদে ৭৫০ টাকা থেকে ৭৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং খাসির মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০০ টাকায়। আর এক ডজন ডিম ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, বাজারে সবধরনের মাছ বাড়তি দামেই আটকে আছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি চাষের কই বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৮০ টাকায়, পাঙ্গাশ মাছ প্রতি কেজি ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ২৫০ টাকা, শিং ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা, কাতল ৩২০ থেকে ৩৮০ টাকা, গলসা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, ট্যাংরা প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া, রুই প্রতি কেজি ৩৬০ টাকা, রুপচাঁদা ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মাছের দাম প্রসঙ্গে একজন ক্রেতা বলেন, এখন বাজারে সবচেয়ে বেশি দাম মাছের। সাধারণ ক্রেতারা দুয়েকটি কম দামি মাছ ছাড়া, অন্য কোনো মাছ এখন আর কিনতে পারে না। কমদামি মাছ বলতে চাষের কই, পাঙ্গাশ, তেলাপিয়া। তবে এসব মাছেরও এখন দাম আগের তুলনায় অনেক বেশি।
মাছ বিক্রেতারা জানান, যখন থেকে মাছের খাবারের দাম বেড়েছে, তখন থেকেই মাছের দাম বাড়তি। এরপর থেকে সেভাবে আর দাম কমেনি। অল্প কিছু দাম ওঠানামা করে পাইকারি বাজারে। সেক্ষেত্রে আমরা যখন যেদিন যে দামে মাছ কিনতে পারি, খুচরা বাজারে একটু লাভ রেখে তেমন দামেই বিক্রি করি।
সারাবাংলা/ আরএস