জুরাইনে রেললাইন অবরোধ করে অটো রিকশাচালকদের বিক্ষোভ, সংঘর্ষ
২২ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:০৯
ঢাকা : রাজধানীর জুরাইন এলাকায় রেললাইন অবরোধ করে আজ শুক্রবার বেলা ১১ টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত প্রায় আড়াই ঘণ্টা বিক্ষোভ করেছেন অটো রিকশা চালকেরা। ব্যাটারি চালিত রিকশা বন্ধের প্রতিবাদে ও সড়কে চলতে দেওয়ার দাবিতে রেলপথ অবরোধ করে রাখেন তারা। এ সময় পুলিশের সঙ্গে অটো রিকশাচালকদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে রেললাইন অবরোধের কারণে বেলা ১১টা থেকে থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ এবং ঢাকা থেকে খুলনা ও রাজশাহীগামী (ঢাকা-পদ্মা সেতু রুটে) ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
কমলাপুর রেওলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, জুরাইন এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকরদের রেললাইন অবরোধের কারণে ১১টা থেকে ওই লাইনে কোনো ট্রেন চলাচল করছে না। ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে এবং ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সবুজ সংকেত না দেওয়া পর্যন্ত পদ্মা সেতু রুটে ট্রেন চলাচল করবে না।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানায়, বেলা পৌনে ১১টার দিকে দুই শতাধিক ব্যাটারি রিকশাচালক জুরাইন রেলক্রসিং অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এ সময় তারা রেললাইনের প্রতিবন্ধক নামিয়ে দেয়। এতে আশপাশের সড়কগুলোতে যানজটের সৃষ্টি হয়। বেলা একটার দিকে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের বুঝিয়ে সরে যাওয়ার অনুরোধ করে। তবে রিকশাচালকেরা রেললাইনে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় রিকশাচালক ও পুলিশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। একপর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে চালকদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে এবং লাঠিপেটা করতে বাধ্য হয়। বেলা দেড়টার পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
পরে দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দিলে তারা ওই এলাকা থেকে সরে গিয়ে অন্যত্র অবস্থান নেয়।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবারও রাজধানীর কয়েকটি জায়গায় ছয়-সাত ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন চালকেরা। দুপুরে মহাখালীতে রিকশাচালকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষ হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ওই এলাকার একাধিক ভবন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাড়ি ভাঙচুর করেন। বৃহস্পতিবার সকাল নয়টা ছয় ঘণ্টা ঢাকার সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
প্রসঙ্গত উচ্চ আদালত থেকে ঢাকা মহানগর এলাকায় তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের নির্দেশ আসে ১৯ নভেম্বর। প্যাডেলচালিত রিকশা সমিতির করা একটি রিটের প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। স্বরাষ্ট্র সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, আইজিপি, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্টদের আদালতের এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুলও জারি করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেন, ব্যাটারিচালিত রিকশার লাইসেন্স নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাই এটা পুরোপুরি অবৈধ।এরপর থেকেই ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল অব্যাহত রাখার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন রিকশাচালকরা।
সারাবাংলা/আরএস