‘নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র তত বাড়বে’
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:৩১
চুয়াডাঙ্গা: বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘নির্বাচন যত দেরি হবে, দেশ নিয়ে ষড়যন্ত্র তত বৃদ্ধি পাবে। যেই স্বৈরাচারকে দেশের জনগণ জীবন দিয়ে সংগ্রাম করে বিতাড়িত করেছে, সেই স্বৈরাচার দোসররা বসে নেই। তারা তাদের দেশি-বিদেশি প্রভুদের সঙ্গে নিয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে।’
শনিবার (২৩ নভেম্বর) চুয়াডাঙ্গা টাউন ফুটবল মাঠে জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা থেকে শুরু করে দেশের সবাই যেসব সংস্কারের কথা বলছেন,এগুলো সত্যিকার অর্থেই বাস্তবায়ন সম্ভব, যদি প্রকৃত জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচিত হন। এর বাইরে, সংস্কার বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। সেজন্য জনপ্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচন প্রয়োজন।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচন যত দেরি হবে দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষাসুবিধা কমে যাবে। কৃষকসহ সবাই যেসব সমস্যায় রয়েছেন, সেসব সমস্যা আরও বৃদ্ধি পাবে। নির্বাচন দিয়েই সম্ভব দেশের সব সমস্যা ধীরে ধীরে সমাধান করা।
যে দেশের রাজনীতি রুগ্ন, সেদেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানই রুগ্ন উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকার দেশের সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এগুলো আবার জনগণের কল্যাণে নিয়োজিত করতে হলে নাগরিকের ভোটের মাধ্যমে যোগ্য প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে হবে।
সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এদেশে ফ্যাসিবাদের জনক শেখ মুজিবুর রহমান। তার হাত ধরেই অর্থাৎ তার নেতৃত্বেই এদেশে হত্যা, লুণ্ঠন, এবং অপরাজনীতি শুরু হয়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত নতুন বাংলাদেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বদলে গনতন্ত্র হত্যা করে সকল দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে একটি রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে একটি বদ্ধ কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল।
এসময় তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের উত্তরসূরী ফ্যাসিবাদের চুড়ান্ত বাস্তবায়নকারী শেখ হাসিনা গত ১৭ বছর এদেশের জনগণের ঘাড়ে অবৈধভাবে চেপে বসে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে অবরুদ্ধ করে অসংখ্য খুন গুম ব্যাংক লুট এবং অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করছিল। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশকে দেউলিয়া এবং চরম দারিদ্র্যের শেষ সীমায় পৌঁছে দিয়ে গেছে।
শুরুতে সম্মেলনের উদ্বোধক বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। সম্মেলনে পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠ করা হয়। পরে উদ্বোধকসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। বিগত দিনে জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন জেলা বিএনপি নেতা ওয়াহেদুজ্জামান বুলা।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু ও এ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বাবু জয়ন্ত কুমার, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সাংসদ সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ অরুন, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ। আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফ।
সম্মেলনে সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন জেলা আহবায়ক কমিটির সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা।
সম্মেলনে জেলার বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী যারা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার শাসন আমলে নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের হাতে তারেক রহমানের পক্ষে উপহার সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়।
সারাবাংলা/এসআর