মোল্লা কলেজে ২ কলেজের শিক্ষার্থীদের হামলা, আহত ২০
২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৪:১৪
ঢাকা: রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অবস্থিত ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে (ডিএমআরসি) হামলা চালিয়েছেন কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। এ সময় লাঠিসোঁটা ও ইট-পাটকেল নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে মধ্যে সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সংঘর্ষে অন্তত ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে তারা কে কোন কলেজের, তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ আশপাশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজের কয়েক শ শিক্ষার্থী ডিএমআরসি কলেজে হামলা চালান। দুপুর দেড়টায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছিল।
ডিএমআরসির শিক্ষার্থী অভিজিতের মৃত্যুর ঘটনায় ওই কলেজসহ রাজধানীর বেশ কিছু কলেজের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা গতকাল রোববার (২৪ নভেম্বর) ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ‘সুপার সানডে’ নামে ঘেরাও কর্মসূচি দিয়েছিলেন। ওই কর্মসূচি থেকে সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়। এর জের ধরেই আজ ‘মেগা মানডে’ কর্মসূচিতে একজোট হয়েছেন গতকাল হামলার শিকার দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘মেগা মানডে’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার সকাল থেকেই শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণে জড়ো হচ্ছিলেন। পরে তারা মিছিল নিয়ে কবি নজরুল কলেজের সামনে যান। সেখান থেকেই দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা মিলে ডেমরা সড়কসংলগ্ন ডিএমআরসি তথা মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের দিকে যান।
এদিকে ডিএমআরসি কলেজে ওই কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের অনেকে উপস্থিত ছিলেন। দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজটি হামলা করলে এ পক্ষ থেকে তাদের ধাওয়া দেওয়া হয়। তখন দুপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: কবি নজরুল-সোহরাওয়ার্দীর সঙ্গে ১৫ কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মোল্লা কলেজে হামলার পর সেখানে ভাঙচুর চালানো হয়। সেখানকার চেয়ার-টেবিলসহ ল্যাবরেটরির বিভিন্ন সরঞ্জামও কাউকে কাউকে নিয়ে বের হতে দেখা গেছে।
কলেজ শিক্ষার্থীদের মধ্যেকার এই সংঘর্ষের ফলে ডেমরা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ওয়ারী অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার মফিজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে বাড়তি পুলিশ সদস্যদের পাঠানো হয়েছে। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন।
এদিকে কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমানকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্ত করার জন্য মাইকিং করতে দেখা গেছে। তিনি বলছিলেন, ‘তোমরা শান্ত হও, তোমাদের সঙ্গে আমরা আছি। গতকালকের (রোববার) ঘটনায় অনুপ্রবেশকারীরা ছিল, আজও (সোমবার) এখানে অনুপ্রবেশকারী আছে বলে মনে হচ্ছে। তোমরা শান্ত হও। গতকাল যারা কবি নজরুল ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা চালিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
শিক্ষার্থীরা অবশ্য অধ্যক্ষের কথায় কান দেননি। অধ্যক্ষের বক্তব্যের সময় দুই কলেজের শিক্ষার্থীরাই ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দেন। এর পরপরই তারা মিছিল নিয়ে মোল্লা কলেজের দিকে চলে যান।
সারাবাংলা/টিআর