হামলা-লুটপাটের ঘটনায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চায় মোল্লা কলেজ
২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৫:৪০ | আপডেট: ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ২০:১৭
ঢাকা: ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে উল্লেখ করে এ ঘটনায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ সামীর।
তিনি বলেন, কলেজ কর্তৃপক্ষ বারবার প্রশাসনের স্থানীয় ও সর্বোচ্চ পর্যায়ে সহযোগিতার আবেদন করলেও এ পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় আমাদের শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও শিক্ষার পরিবেশ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। আমরা ডক্টর মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে আহ্বান জানাই, তারা যেন যথাযথ ব্যবস্থা নেয়।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলেন ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফ সামীর।
তিনি বলেন, ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ গভীর শোক ও ক্ষোভের সঙ্গে জানাচ্ছে যে আজ আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৃশংস হামলা চালানো হয়েছে। তথাকথিত সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা প্রবেশ করে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। এ হামলায় তিনজন শিক্ষার্থী নির্মমভাবে প্রাণ হারায় এবং শতাধিক শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর, যাদের মধ্যে কয়েকজনকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
সোমবার দুপুরে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে হামলা চালান। ওই সময় তিন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পালটা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে অন্তত ১২ জন ও ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে অন্তত ৪০ জনসহ আশপাশের আরও কয়েকটি হাসপাতালে আহতদের চিকিৎসা নিতে হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে। তবে হামলা বা সংঘর্ষে কোনো শিক্ষার্থী বা কারও নিহতের কোনো তথ্য এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। পুলিশের কাছেও কারও নিহতের তথ্য নেই বলে জানিয়েছেন ডিএমপির ওয়ারী জোনের কর্মকর্তারা।
আশরাফ সামীর বলেন, এ হামলায় শহিদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের কিছু ছাত্র নামধারী ব্যক্তি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের মদতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিল। হামলাকারীদের অধিকাংশই শিক্ষার্থী নয়, বরং সন্ত্রাসী কার্যক্রমে লিপ্ত ব্যক্তি।
হামলাকারীরা মোল্লা কলেজের গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, সম্পদ ও শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত মালামাল লুট করেছে বলে অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বলেন, এ ছাড়া তারা কলেজ ভবনের ব্যাপক ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি অধ্যক্ষের কার্যালয়সহ বিভিন্ন কক্ষও ভাঙচুর করে।
বিজ্ঞপ্তিতে মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের পক্ষ থেকে তিনটি দাবি তুলে ধরেন আশরাফ সামীর। দাবিগুলো হলো—
হামলার প্রকৃত দোষীদের দ্রুত শনাক্ত ও গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে;
শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে অবিলম্বে কলেজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে; এবং
লুট করা সম্পদ উদ্ধার ও ক্ষতিগ্রস্ত নথি পুনরুদ্ধারে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আশরাফ সামীর বলেন, আমরা সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্দেশে বলছি— এই ন্যক্কারজনক ঘটনার পরও আমাদের সবাইকে ধৈর্য ও সংহতি বজায় রেখে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমরা সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং আশা করি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।
সারাবাংলা/ইউজে/ইআ