ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের পদক্ষেপ অমানবিক: রোবায়েত ফেরদৌস
২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৪১
ঢাকা: ঢাকা মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধে পদক্ষেপ গ্রহণে হাইকোর্টের আদেশকে ‘অমানবিক’ বলে উল্লেখ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অধ্যাপক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব রোবায়েত ফেরদৌস। একইসঙ্গে প্যাডেল চালিত রিকশাকেও অমানবিক বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে ‘জরুরি ভিত্তিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল নীতিমালা প্রণয়নের দাবীতে’ বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন মন্তব্য করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী।
অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, ‘এক কোটি মানুষের জীবন ও জীবিকা, তিন দিনের মধ্যে তাদের বিকল্প কী ব্যবস্থা, কোন শব্দ নেই, কোন বাক্য নেই, তারা কীভাবে বিজ্ঞ আদালত হয়! এই যে বিজ্ঞ আদালত, তিনি যে মাত্র তিন দিন সময় দিয়েছেন, আমি এর তীব্র সমালোচনা করছি। এটা কোন অবস্থাতেই মানবিক ও সংবেদনশীলতার মধ্যে এটি পড়ে না।’
তিনি বলেন, ‘এদের (ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা) বিকল্প পুনর্বাসনে রাষ্ট্রকে ও সরকারকে ভাবতে হবে। যে রিকশাগুলোতে ব্যাটারি নেই, সেই রিকশাগুলো সম্পর্কে আমরা অতীতেও বলেছি। কতোটা অমানবিক, একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে টেনে নিয়ে যায়! দুজন মানুষ বা যাত্রীরা যখন রিকশায় বসে, তারা অনেক গোপন কথা বলে, অনেক স্ল্যাং কথা বলে, অনেকে প্রেমালাপ পর্যন্ত করে, একজন মানুষ যে চালায় তার সামনে, আমরা তার অস্বিত্বকে অস্বীকার করি। যেন তিনিও যন্ত্রে পরিণত হয়ে যান।’
অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন, কারও কারও মতে, তিন দিনের মধ্যে কোর্টের রায়, ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা সরিয়ে ফেলতে হবে, এর পিছনেও একটা উদ্দেশ্য আছে। এটা হচ্ছে- কোন একটা কর্পোরেট কোম্পানি বা মালিকরা নতুন ধরনের থ্রি হুইলার বা অটো রিকশা আনতে চান। সেটা নাকি আরও সফিস্টিকেটেড, তার লাভের জন্য আরও ভালো। এই গরিবদের উচ্ছেদ করতে পারলে তার কোম্পানির অটো রিকশাগুলো এই রাস্তায় বসতে পারে। এখানে কর্পোরেট স্বার্থ ও মালিকের স্বার্থ রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে জরুরিভিত্তিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ছোট যানবাহন চলাচল নীতিমালা প্রণয়নের দাবি জানিয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতি বলেছে, দেশের সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের মাধ্যমে ৪০ লাখ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিবন্ধন ও চালকের হাতে নামমাত্র ফিতে লাইসেন্স প্রদান করা গেলে বছরে পাঁচ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হতে পারে। একইসঙ্গে ইজিবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা জাতীয় মহাসড়কে চলাচল কঠোরভাবে বন্ধ করা, রাজধানীসহ দেশের শহরগুলোর প্রধান সড়কে ইজিবাইক চলাচল নিষিদ্ধ করা এবং জরুরীভিত্তিতে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও যন্ত্রাংশ আমদানি বন্ধের সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। এছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আটটি সুপারিশ করা হয়েছে সংগঠনটির পক্ষ থেকে।
সারাবাংলা/ইএইচটি/আরএস