প্রথম আলোর রাজশাহী কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা, সাইনবোর্ড ভাঙচুর
২৫ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৫১
রাজশাহী: প্রথম আলোর রাজশাহী কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা চালিয়েছে আলেম ওলামা ও তাওহীদি জনতার ব্যানারে একদল মানুষ। তারা কার্যালয়ের ভেতরে ঢুকতে না পারলেও সামনে লাগানো সাইনবোর্ড খুলে ফেলেন। সাইনবোর্ডটি ভাঙচুর করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মহানগরীর কুমারপাড়া এলাকায় প্রথম আলোর রাজশাহী কার্যালয়ে হামলার চেষ্টা করেন। এর আগে, দুপুরে তাওহীদি জনতা নগরের সাহেববাজার জিরোপয়েন্টে জড়ো হন। সেখানে সমাবেশ হয়।
সমাবেশে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকার বিরুদ্ধে নানা শ্লোগান দেওয়া হয়। বক্তারা প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারকে ‘ভারতীয় আধিপাত্যবাদ প্রসারের মূল হোতা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। এরপর তাওহীদি জনতা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শ্লোগান দিতে দিতে প্রথম আলোর রাজশাহী কার্যালয়ের সামনে যান। এ সময় সেখানে প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকায় আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া প্রথম আলোর রাজশাহী কার্যালয়ের সাইনবোর্ড খুলে ভেঙে ভাঙচুরের পর সবাই চলে যান।
এর আগে, প্রথম আলো কার্যালয়ের সামনে এক বক্তা বলেন, ‘আজ আমাদের রাজপথে থাকার কথা নয়। ৫ আগস্ট আমরা দেশকে স্বাধীন করেছিলাম। স্বৈরাচার চলে গিয়েছে, কিন্তু স্বৈরাচার যে বীজ রেখে গিয়েছে, এই বীজকে যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলা জমিন থেকে উৎখাত করতে না পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা স্বাধীনতার আসল স্বাদ পাব না। আজকে প্রথম আলো পত্রিকা পুড়িয়ে আমরা স্বাদ নিচ্ছি। এটা আমাদের জন্য আসল স্বাদ নয়। যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলার জমিনে এই প্রথম আলো এবং ডেইলি স্টারের সকল অফিস বন্ধ করতে না পারব, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন থামবে না।’
আরেক বক্তা অভিযোগ করে বলেন, ‘পিলখানার ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে কোন বার্তা নেই, প্রথম আলোর পক্ষ থেকে রাতারাতি বার্তা ছাপানো হলো। বিডিআরদেরকে বিদ্রোহী হিসেবে সাব্যস্ত করল। এই ক্ষমতা প্রথম আলোকে কে দিয়েছে? সময় চলে আসলো ২০১৩ সাল। তওহীদি জনতা আলেম-ওলামাদের ডাকে ১৩ দফার দাবি নিয়ে একত্রিত হয়েছিল শাপলা চত্বরে। সেইদিন ছিল ৫ মে। সেদিন রাতে সাধারণ মুসলিম জনতার ওপরে যে হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছিল, এর পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল এই প্রথম আলো-ডেইলি স্টার।’
তিনি বলেন, ‘হাজার হাজার মুসলিম জনতাকে যখন নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে, পরের দিন এই হত্যাকাণ্ডের কথা পত্রিকায় আসে নাই। পত্রিকায় কী এসেছে? অমুক জায়গায় গাছ কাটা হয়েছে। গাছ কেটে রাস্তায় ফেলা হয়েছে। ওই সমস্ত গাছপ্রেমিরা, আমার মুসলিম ভাই মারা গেল সেটা দেখল না। কোথায় গাছ কাটা গেছে তা নিয়ে খবর করেছে।’
প্রথম আলোর রাজশাহী কার্যালয়ে হামলার আশঙ্কায় এ দিন কার্যালয়টি বন্ধ রাখা হয়েছিল। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশও উপস্থিত ছিল। তবে পুলিশ কার্যত দর্শকের ভূমিকায় ছিল। প্রথম আলোর সাইনবোর্ড খুলে ভেঙে ফেলা হলেও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি।
সারাবাংলা/ইআ