Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দুই প্রকল্পে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ দিচ্ছে জাপান

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৫ নভেম্বর ২০২৪ ২০:৩৬

ঢাকা: দুই প্রকল্পের আওতায় বাংলাদেশকে ২৪ কোটি ৮৮ লাখ ডলার ঋণ দেবে জাপান সরকার। জাপানি মুদ্রায় এর পরিমাণ তিন হাজার ৯৯ কোটি ইয়েন। প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ দুই হাজার ৯৮৮ কোটি টাকা।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের এনইসি-২ সভাকক্ষে বাংলাদেশ সরকার ও জাপান সরকারের মধ্যে এ-সংক্রান্ত বিনিময় নোট ও ঋণচুক্তি সই হয়েছে।

চুক্তিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সচিব মো. শাহ্‌রিয়ার কাদের ছিদ্দিকী ও জাপান সরকারের পক্ষে বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানের রাষ্ট্রদূত আইওয়ামা কিমিনোরি বিনিময় নোটে সই করেন। ঋণচুক্তিতে সই করেন বাংলাদেশে জাইকা অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ আইচিগুচি টমোহাইড।

ইআরডি জানায়, জাপান সরকারের ৪৫তম ওডিএ লোন প্যাকেজের প্রথম ব্যাচের আওতায় যমুনা রেলওয়ে ব্রিজ কস্ট্রাকশন প্রজেক্ট (তৃতীয় কিস্তি) এবং চট্টগ্রাম সুয়্যারেজ সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ইঞ্জিনিয়রিং সার্ভিস) শীর্ষক প্রকল্পের জন্য এ ঋণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

ইআরডি জানিয়েছে, ‘যমুনা রেলওয়ে ব্রিজ কস্ট্রাকশন প্রজেক্ট’ শীর্ষক চলমান প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৬ হাজার ৭৮০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা (এর মধ্যে সরকারি তহবিল চার হাজার ৬৩১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা, জাইকা দেবে ১২ হাজার ১৪৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।

প্রকল্পটির জন্য জাপান সরকার বিভিন্ন পর্যায়ে ঋণ দিচ্ছে বাংলাদেশকে। এর আগে প্রকল্পটির জন্য জাপান সরকারের সঙ্গে মোট এক লাখ ২৮ হাজার ৬৯৭ মিলিয়ন জাপানিজ ইয়েনের ঋণচুক্তি সই হয়েছে। এবারে তৃতীয় কিস্তির জন্য জাইকা ৩৮ হাজার ২০৬ মিলিয়ন জাপানিজ ইয়েনের (প্রায় ২৩ কোটি ৭৬ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার বা প্রায় দুই হাজার ৯৪৬ কোটি ৭৩ লাখ টাকা) ঋণ দেবে। এ ঋণের সুদহার নির্মাণ কাজের জন্য ১ দশমিক ৭০ শতাংশ, পরামর্শকের জন্য শূন্য দশমিক ৪০ শতাংশএবং ফ্রন্ট এন্ড ফি (এককালীন) শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের সময় ১০ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছর।

বিজ্ঞাপন

জাইকা অন্য যে প্রকল্পটির জন্য ঋণ দিচ্ছে সেটি হলো ‘চট্টগ্রাম সুয়্যারেজ সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (ইঞ্জিনিয়রিং সার্ভিস)’। নতুন এই প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় পাঁচ হাজার ১৫২ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া হবে ৫৮১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা, জাইকা দেবে চার হাজার ১৪৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আর চট্টগ্রাম ওয়াসার নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করা হবে ৩৯ কোটি টাকা। প্রকল্পটি ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ২০৩২ সালের নভেম্বর পর্যন্ত মেয়াদে বাস্তবায়ন করা হবে।

চট্টগ্রামের এ প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য পয়ঃনিষ্কাশন ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট, পাম্পিং স্টেশন ও পাইপলাইন ইত্যাদি স্থাপনের মাধ্যমে চট্টগ্রাম শহরে উপযুক্ত পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। প্রকল্পটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা ও জলজ পরিবেশ সংরক্ষণে অবদান রাখবে।

এ প্রকল্পের জন্যও জাইকা বিভিন্ন পর্যায়ে ঋণ দেবে। বিবেচ্য ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিসের জন্য জাইকা ১৬ কোটি ৯৬ লাখ জাপানি ইয়েন (প্রায় এক কোটি ১২ লাখ মার্কিন ডলার বা প্রায় ১৩০ কোটি ৮০ লাখ টাকা) ঋণ দেবে। এ ঋণের (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস) সুদের হার শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ, ফ্রন্ট এন্ড ফি (এককালীন) শূন্য দশমিক ২০ শতাংশ। ঋণ পরিশোধের সময় ১০ বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছর।

ইআরডি বলছে, দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে জাপান বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উন্নয়ন সহযোগী দেশ। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত জাপান সরকার বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নে বিভিন্ন খাতে উল্লেখযোগ্য সহায়তা দিয়ে আসছে।

অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে বাংলাদেশ সরকারের অগ্রাধিকারের সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে অবকাঠামো উন্নয়ন, যোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন, পল্লী উন্নয়ন, পরিবেশ উন্নয়ন এবং মানবসম্পদ উন্নয়নসহ অন্যান্য খাতের প্রকল্পে ঋণ ও বিভিন্ন প্রকার অনুদান সহায়তা হিসেবে এ পর্যন্ত জাপান সরকার ৩২ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/আরএস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর