অনুসারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় কৃষ্ণকে নেওয়া হলো কারাগারে
২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: অনুসারীদের লাঠিচার্জের মাধ্যমে ছত্রভঙ্গ করে প্রায় তিনঘণ্টা পর চট্টগ্রাম আদালত থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এসময় চিন্ময়ের অনুসারীদের সঙ্গে পুলিশের কয়েক দফা সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও যানবাহন ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। সারাবাংলার ফটো করেসপন্ডেন্ট শ্যামল নন্দীর মোটর সাইকেলও ভাংচুর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেল সোয়া তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় চিন্ময় কৃষ্ণকে বহনকারী প্রিজন ভ্যান কারাগারের দিকে এগিয়ে যায়।
এর আগে আদালত প্রাঙ্গনে হাজারো অনুসারী অবস্থান নিয়ে আনুমানিক বেলা সাড়ে ১২টা থেকে চিন্ময় কৃষ্ণকে বহনকারী প্রিজন ভ্যানটি আটকে রাখেন। এসময় তারা স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ করেন এবং তাকে ছেড়ে দেওয়ার দাবি জানাতে থাকেন।
আদালত প্রাঙ্গনে পুলিশ-বিজিবিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সদস্য মোতায়েন থাকলেও শুরুতে তাদের হস্তক্ষেপ দেখা যায়নি। বিকেল পৌনে তিনটার দিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা লাঠিচার্জ শুরু করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যে প্রিজন ভ্যানের সামনে থেকে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে সরে যান।
বিকেল সোয়া তিনটার দিকে প্রিজন ভ্যান কারাগারের উদ্দেশে এগোতে থাকে। পথে-পথে চিন্ময়ের অনুসারীরা পুলিশের ওপর চড়াও হন। এসময় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাংচুরের ঘটনাও ঘটে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা লাঠিচার্জ করে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) হুমায়ুন কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ‘দুই ঘণ্টারও বেশিসময় ধরে তারা প্রিজন ভ্যান আটকে রেখেছে। তাদের দাবি, আবার শুনানি হতে হবে। এটা কী সম্ভব! আমরা অনেকবার বুঝিয়ে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেছি। এখন তাদের সরিয়ে উনাকে (চিন্ময়) কারাগারে নেওয়া হয়েছে।’
আসামিপক্ষের আবেদন সাপেক্ষে বুধবার (২৭ নভেম্বর) মহানগর দায়রা জজ আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণের জামিন শুনানি হবে বলে তিনি জানান।
সনাতন ধর্মবিশ্বাসী সংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) আলোচিত সংগঠক ছিলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তবে সম্প্রতি সংগঠনটি তাকে বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছে।
চিন্ময় কৃষ্ণ বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের হাটহাজারীর পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষের দায়িত্বে আছেন।
সনাতনী জাগরণ জোটের ব্যানাবরে চিন্ময় কৃ্ষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী নানা কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন। গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামের লালদিঘী মাঠে জনসভার পর ৩০ অক্টোবর রাতে তাকেসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম নগরীর কোতয়ালী থানায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করা হয়।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) চিন্ময় কৃ্ষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে ঢাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশ আটকের পর ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।
মঙ্গলবার সকালে তাকে চট্টগ্রামে এনে আদালতে হাজির করা হয়। এসময় তার আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। তবে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে চিন্ময় কৃষ্ণকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
সারাবাংলা/আরডি/এইচআই