টেকসই গ্র্যাজুয়েশনে স্থানীয় শিল্পের সক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ জোর দিয়েছে এফবিসিসিআই
২৬ নভেম্বর ২০২৪ ২০:০৫
ঢাকা: জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (ইউএনসিডিপি)–এর সদস্য তেফারে তেসফাচিউ‘র সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন প্রক্রিয়াকে টেকসই করতে স্থানীয় শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই।
একই সঙ্গে জাতিসংঘের সহযোগিতা অব্যাহত রাখা এবং লক্ষ্য অর্জনে রফতানি পণ্যের বহুমুখীকরণ, নতুন বাজার অন্বেষণ, বেসরকারি খাতে গবেষণা ও উদ্ভাবন, দক্ষতা বৃদ্ধি ও নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে গুরুত্বারোপ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বিকেলে ইউনাইটেড ন্যাশনস কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (ইউএনসিডিপি) –এর সদস্য তেফারে তেসফাচিউ‘র নেতৃত্বে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব এএইচএম জাহাঙ্গীর ও এসএসজিপি প্রকল্পের কম্পোনেন্ট ম্যানেজার মোস্তফা আবিদ খানসহ বিভিন্ন ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় এফবিসিসিআই’র পক্ষ থেকে এসব আহবান জানানো হয়।
সভায় স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই’র প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন সংক্রান্ত জাতিসংঘের মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ, জলবায়ু ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা—এই তিন সূচকেই বাংলাদেশ উত্তীর্ণ হয়েছে। এই অর্জনের ফলে বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হয়েছে। এতে করে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) উৎসাহিত হওয়ার পাশাপাশি বেসরকারি খাতের আস্থা দৃঢ় হবে।
তিনি বলেন, পাঁচ বছর প্রস্তুতিকালীন সময় শেষে বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বেরিয়ে আসবে। জাতিসংঘের নিয়মানুসারে, উত্তরণের প্রস্তুতকালীন সময়ে বাংলাদেশকে একটি ’স্মুথ ট্রানজিশন স্ট্রাটেজি” বা এসটিএস প্রণয়ন করতে হবে। এক্ষেত্রে বেসরকারি খাতের যৌক্তিক মতামতের প্রতিফলন দেখা যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন এফবিসিসিআই’র প্রশাসক।
মো. হাফিজুর রহমান বলেন, এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের পরে রফতানি বাজারে বাংলাদেশ আর বিশেষ সুবিধা পাবে না। উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধির কারণেও চাপে পড়বেন উদ্যোক্তারা। এমন পরিস্থিতিতে, উন্নয়নের পরবর্তী ধাপে পৌঁছানোর জন্য স্থানীয় শিল্পের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে হবে।
জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির সদস্য তেফারে তেসফাচিউ বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য একটি অনুকরণীয় মডেল হতে পারে। তবে বিশ্ব অর্থনীতি এখন একটি কঠিন সময় পার করছে, যার প্রভাব পড়েছে স্থানীয় পর্যায়েও। স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ প্রক্রিয়াকে টেকসই করতে সরকার এবং বেসরকারি খাতের সমন্বিত পদক্ষেপের ওপর জোর দেন তিনি।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)-এর পরিচালক মোহাম্মদ ইমতিয়াজ হাসান, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)-এর উপ-পরিচালক সুজন দাস গুপ্ত, সার্ক চেম্বারের ভাইস প্রেসিডেন্ট শাফকাত হায়দার, এফবিসিসিআই’র সাবেক সহ-সভাপতি আবুল কাশেম হায়দার, এফবিসিসিআই’র সাবেক পরিচালক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী (খোকন), বাংলাদেশ ঔষধ শিল্প সমিতির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম, বেসিসের সহ-সভাপতি এম আসিফ রহমান ও অন্যান্য ব্যবসায়ী নেতারা।